‘দেশ যুদ্ধাবস্থায়, আনন্দ করার মেজাজে নেই’, হচ্ছে না স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজও

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১৬:১৩

রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজ। ছবি: সংগৃহীত
দেশ ‘যুদ্ধাবস্থায়’ আছে এবং ‘আনন্দ করার মেজাজে নেই’ বলে মূল্যায়ন করে আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসেও রাষ্ট্রীয় কুচকাওয়াজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রবিবার সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানান স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি।
এবার স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ হচ্ছে কি না, এক সংবাদকর্মীর এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এবারও হচ্ছে না। গতবারও হয়নি (১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস) এবারও হবে না।”
কেন এমন সিদ্ধান্ত- সেটি ব্যাখ্যা করে সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা ওয়ার ফুটিংয়ে (যুদ্ধাবস্থায়) আছি। আমরা আনন্দ করার মেজাজে নেই।”
৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনা এবং ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার দুটি দিনে রাষ্ট্রীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা থাকে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ একটি, যেখানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ হয়নি সরকারের সিদ্ধান্তে। সে সময় কারণ হিসেবে সারাদেশে সেনা সদস্যদের মোতায়েনের কথা জানানো হয়।
২৬ মার্চ কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি বা হুমকি আছে কি না, এই প্রশ্নে সচিব বলেন, “নিরাপত্তা ঝুঁকি তো দেখছি না।”
আর কী নিয়ে আলোচনা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই বৈঠকে পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়া তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিল।
বৈঠকে ঈদের ছুটি, বেতন নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের সম্ভাব্য অসন্তোষ নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র সচিব। জানান, বৈঠকে উপস্থিত থাকা পোশাক কারখানার মালিকদেরকে তারা বলেছেন, শ্রমিকদের বেতন ভাতা ঈদের আগে পরিশোধ করতে হবে।
ঈদ উপলক্ষে শ্রমিক অসন্তোষ থাকে। সেগুলো মিনিমাইজ করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো নিয়ে সকলের সাথে আলাপ করা হয়েছে। আমরা বলেছি, বেতনটা যেন সময়মতো পায় এবং কোনো প্রপার্টি যেন ধ্বংস না হয়”, বলেন নাসিমুল গনি।
ঈদে চাঁদাবাজি যেন না হয় এবং শপিংমলগুলোতে যেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, সেই বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে কথা বয় বলে জানান স্বরাষ্ট্র সচিব।
ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেলে ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি থাকবে। আপনারা অল্প কিছু সময়ের মধ্যে দেখেছেন পুলিশ শক্ত হয়েছে কাজ চলছে। ইনশাআল্লাহ আমরা কোনো থ্রেট দেখছি না।”
পিস আর আর অলওয়েজ দেয়ার, উই ডু নট সি এনি থ্রেটস, থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ”, বলে কথা শেষ করেন সচিব।