ছবি: সংগৃহীত
চিরশত্রু দেশ পাকিস্তান! প্রচলিত থাকলেও না এখন আর শত্রু নয়। এখন যেন পরিণত হতে যাচ্ছে বন্ধু দেশে। স্বাধীনতাযুদ্ধ থেকে পাকিস্তান দেশটি বাংলাদেশীদের কাছে অপছন্দের একটি নাম। কারণ যুদ্ধের সময় দেশটির সেনাবাহিনী বিনা নোটিশে বাঙালিদের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন করে। এমনকি ৩০ লক্ষ বাঙালিকে জীবনও দিতে হয়েছিল। আর এত এত মানুষের আত্মত্যাগের পরেই বহু বছর পাকিস্তানীদের শোষণ থেকে ৫০ বছর আগে মুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ, স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই থেকে পাকিস্তান দেশটির সাথে বাংলাদেশীদের সম্পর্ক ভালো নয়। হয়নি কোন রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সংলাপ। এমনকি যুদ্ধের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশটির ওপর থেকে ঘৃণা এখনো সরেনি বাঙালিদের। কিন্তু এবার ঘটতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক ঘটনা। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপ হতে যাচ্ছে চলতি মাসে। জানা গেছে, উভয় পক্ষ এবার দীর্ঘদিন পর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ করতে যাচ্ছে।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আসন্ন সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বেলুচ এতে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করবেন। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে দু’দেশের সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রস্তাব। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে একটি যৌথ কমিশন গঠন ও পুনর্বহালের বিষয়টি তুলতে পারে পাকিস্তান।
এদিকে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২২-২৪ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করবেন। তার এ সফরকে বাণিজ্য ও কূটনীতিসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা গভীর করার গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ডেইলি পাকিস্তানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের ওপর থেকে ভারতের প্রভাব হ্রাস করে পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করে পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনতে চাইছে। বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে চীনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করতে চাইছে। যা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।