Logo
×

Follow Us

সরকার

পুশইন বন্ধে ভারতকে চিঠি, বাংলাদেশ বলছে ‘পুশব্যাক নয়’

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১৪:৫৭

পুশইন বন্ধে ভারতকে চিঠি, বাংলাদেশ বলছে ‘পুশব্যাক নয়’

ভারতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধিত পাঁচ রোহিঙ্গাকে গত ৭ মে বাংলাদেশে ‘পুশইন’ করার পর বিজিবি তাদেরকে আটক করে।

ভারত থেকে স্থল সীমান্ত দিয়ে মানুষকে জোর করে বাংলাদেশের পথে ঠেলে দেওয়া বন্ধে ভারতকে কূটনৈতিক পর্যায় চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের জোর করে ফেরত পাঠানো হবে না; বরং প্রক্রিয়াগতভাবে তা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় প্রতিবেশী দেশটির দূতের সঙ্গেও আলোচনার কথাও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।

শনিবার সকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভাসমান সীমান্ত চৌকি-বিওপি উদ্বোধন শেষে সংবাদকর্মীদেরকে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভারতের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বলেছি, ‘পুশইন’ না করে প্রপার চ্যানেলে পাঠাতে।”

কী ঘটছে

গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কয়েকশ মানুষকে জোর করে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়। এই প্রক্রিয়াটি পুশইন নামে পরিচিত।

বিএসএফের দাবি, তারা যাদেরকে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে তারা বাংলাদেশি, কিন্তু অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছিল।

গত ৭ ও ৮ মে এভাবে ২০২ জন মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার কথা জানান বিজিবি প্রধান।

৯ মে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৮ জনকে বাংলাদশে ঠেলে দেয় বিএসএফ, যাদের মধ্যে তিন জন ভারতীয় বলে জানায় বিজিবি।

১০ মে বন বিভাগ জানায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনের নদীপথ দিয়ে প্রায় ৬২ জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

তবে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী গত ১২ মে সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে জানান, ভারত তাদের দেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদেরও বাংলাদেশে পুশইন করেছে।

সেই বৈঠকের দুদিন পর ১৪ মে সিলেট ও মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে আরও ৬০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। দুদিন পর ১৬ মে মৌলভীবাজারের বড়লেখার নিউ পাল্লাতল সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাঠানো হয় ১৬ জনকে, যাদের মধ্যে ১৪ জনই নারী।

দুই সপ্তাহ ধরেই বিএসএফ সীমান্তে মানুষকে জোর করে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে এমন একটি চেষ্ট ব্যর্থ করে দেয় বিজিবি ও সাধারণ জনতা।

এই বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনাও তৈরি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে গভীর রাতে ‘৭৫০ জনকে’ পুশইন করার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে বিজিবি ও স্থানীয় জনতা।

একাধিক সীমান্ত পুশইন ঠেকাতে বিজিবির পাশাপাশি জনতার পাহারা দেওয়ার সচিত্র প্রতিবেদনও আসছে সংবাদ মাধ্যমে।

তবে এ বিষয়ে ভারত সরকারের বা ঢাকায় দেশটির দূতাবাস থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

পুশব্যাক নয়

সীমান্তে ভারতের এভাবে পুশইনের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ এই মানুষদেরকে একই পন্থায় ফেরত পাঠাবে নাকি (পুলব্যাক), সে নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে তারও একটি জবাব মেলে উপদেষ্টার বক্তব্যে।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর সীমান্তে ভাসমান সীমান্ত চৌকি উদ্বোধন শেষে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

উপদেষ্টা বলেন, “ভারত যেভাবে পুশইন করছে বা নাগরিকদের ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ওই ধরনের কোন কিছু করবে না। তবে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে থাকলে তাকে প্রপার চ্যানেলের মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে।”

“বিএসএফের পুশইনকে বাংলাদেশ উসকানিমূলক হিসেবে দেখছে না”, বলেন উপদেষ্টা।

পুশইন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি জনগণ, সংবাদকর্মীসহ সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, “যেখানেই পুশইনের চেষ্টা হচ্ছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।”

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫