Logo
×

Follow Us

সরকার

পদ্মা সেতু ঘিরে আরো যেসব বহুমুখী কর্মযজ্ঞ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২২, ১১:৫৩

পদ্মা সেতু ঘিরে আরো যেসব বহুমুখী কর্মযজ্ঞ

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সামগ্রিক পরিকল্পনা দেখছেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উদ্বোধন পদ্মা সেতুর। আগামীকাল রবিবার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে জনসাধারণের জন্য খুলে যাবে সেতু। পদ্মা নদীর উপর নির্মিত এই বহুমুখী সেতুটি শুধু মাওয়া-জাজিরার এপার-ওপারের সড়ক ও রেল যোগসূত্রই নয়, এই সেতু ঘিরে সাধিত হয়েছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ।

সংযোগ সড়কের পাশাপাশি সার্ভিস এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো। সেতুতে ওঠার জন্য তৈরি হয়েছে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত এক্সপ্রেস ওয়ে। সেতুর স্প্যানের ভেতর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে নতুন ব্রড গেজ রেললাইন। সেতুতে রাখা হয়েছে গ্যাস সঞ্চালন লাইন, ফাইবার অপটিক্যাল ও টেলিফোন ডাক্ট। সেতুর ভাটিতে তৈরি হচ্ছে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন।

যেসব সুযোগ সুবিধা থাকছে পদ্মা সেতু ঘিরে

৪২টি পিয়ারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু। দ্বিতল সেতুর আপার ডেকে চার লেনের সড়ক, যার প্রস্থ ২২ মিটার। লোয়ার ডেকে থাকবে ব্রড গেজ সিঙ্গেল লাইন রেলপথ। মাওয়া প্রান্তে সেতুর সাথে তৈরি করা হয়েছে এক দশমিক ৪৭ কিলোমিটার উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট)। জাজিরা প্রান্তে তৈরি করা উড়ালপথের দৈর্ঘ্য এক দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। দুই পাশের ভায়াডাক্টসহ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে নয় কিলোমিটার। সেতুতে রেলপথের জন্যও তৈরি করা হয়েছে ৫৩২ মিটার উড়ালপথ।

পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে দুই দশমিক ১৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। টোল প্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-১, ওজন স্টেশন, জরুরি সহায়তা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো রয়েছে মাওয়া প্রান্তে।

অপরদিকে জাজিরা প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে সাড়ে ১০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এই সড়কের জন্য পাঁচটি সেতু, ২০টি বক্স কালভার্ট ও ১২টি আন্ডারপাস তৈরি করা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের মতো জাজিরা প্রান্তেও টোলপ্লাজা, পুলিশ স্টেশন, সার্ভিস এরিয়া-১, ওজন স্টেশন, জরুরি সহায়তা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।

দ্বিতল পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। নিচে স্প্যানের ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। এজন্য ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রড গেজ রেলপথ। এতে খরচ হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে। ২০২০ সালের মার্চে উদ্বোধন করা হয় এ মহাসড়ক, যেটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।

পদ্মা সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে সার্ভিস এরিয়া-১ ও ৩। এর বাইরে শরীয়তপুরের নাওডোবা এলাকায় তৈরি করা হয়েছে সার্ভিস এরিয়া-২। এখানে অফিস, ল্যাবরেটরি, মসজিদ, মোটেল, মেস, রিসোর্ট, ৩০টি ডুপ্লেক্স বাড়ি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, ফায়ার ডিটেকশন ও ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর স্প্যানের ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৭৬০ মিলিমিটারের গ্যাস সঞ্চালন লাইন। ১৫০ মিলিমিটার অপটিক্যাল ও টেলিফোন ডাক্ট নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর বাইরে পদ্মা সেতুর দুই কিলোমিটার ভাটিতে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরি করা হয়েছে। এজন্য নদীতে সাতটি বিদ্যুতের খুঁটি তৈরি করা হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫