
ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যের জেরে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকিকে ডেকে কড়া বার্তা দিয়েছে সরকার। আজ বুধবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
এর আগে, গত সোমবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, ‘আমি শুনেছি, পুলিশ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ফেলেছে। আমি অন্য কোনো দেশে এ ধরনের উদাহরণ শুনিনি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের এম্বাসেডরকে (রাষ্ট্রদূতকে) ডেকেছিলাম। তাকে যা যা বলা দরকার আমরা বলেছি। সবকিছু বিস্তারিত গণমাধ্যমে বলার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। তাই এই বিষয়ে কোন গণমাধ্যমে আমরা আর কোন বক্তব্য দিতে চাই না। ’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরো গভীর হবে আসন্ন প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে এই প্রত্যাশায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই সফর বাংলাদেশের এবং জাপানের সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা করি। ’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তার ফেসবুক বার্তায় ভিয়েনা কনভেনশনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখেছেন ‘আপনাদের কেউ কেউ যদি ভুলে গিয়ে থাকেন’।
প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, ‘১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের ৪১তম অনুচ্ছেদের প্রথম অধ্যায়ে কূটনীতিকদের গ্রহণকারী রাষ্ট্রের আইন ও প্রবিধানকে সম্মান করার জন্য স্মরণ করিয়ে দেয় এবং তাদের সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার বিষয়টি দ্ব্যর্থহীনভাবে সীমিত করে দেয়।’
এর আগে, গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যের জন্য বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির মন্তব্যের ব্যাখ্যা চাইবে সরকার।
শাহরিয়ার আলম বলেন, নির্বাচন নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। বিদেশি কূটনীতিকরা শিষ্টাচার লঙ্ঘন করলে সরকার কঠোর হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বন্ধুদের পরামর্শের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেছেন, বন্ধু দেশের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আশা করে না বাংলাদেশ। কারণ গত চার বছরে একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেনি জাপান সরকার।
ভিয়েনা কনভেনশেন অনুযায়ী, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের নাক গলানো ও মতামত দেওয়ার সুযোগ নেই।
এর আগে গত ১৮ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকার সব বিদেশি দূতাবাস, জাতিসংঘ কার্যালয়, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও রীতিনীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিল।