
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
শিগগিরই মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারে নতুন মুখ। মার্চ মাসে নতুন মুখ যুক্ত হলে বাড়বে মন্ত্রিসভার আকার। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, মন্ত্রিসভার আকার যে বাড়ছে এমন ইঙ্গিত তারা পেয়েছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারা মন্ত্রিসভায় আসছেন সে সম্পর্কে অনুমানও করতে পারছেন। এই নেতারা বলছেন, ৬-৭ জন নতুন মুখ যুক্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে পূর্ণ মন্ত্রী যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। যারা আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে তারা প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী হিসেবেই মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন।
আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভায় যারা যুক্ত হবেন তাদের মধ্যে অন্তত ৩ জন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৩৭ জন। যার মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী আছেন। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা বরাবরই বলে আসছেন সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার নারী আসনের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার নির্বাচিত ৫০ সংসদ সমস্য শপথ নেবেন। যাদের মধ্যে ৪৮ জনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক নেতা ও মন্ত্রী বলেন, দেখুন গত মন্ত্রিসভার আকার ছিল ৪৯ জনের। এদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ২৫ জন ছিলেন পূর্ণ মন্ত্রী, ২০ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিন জন ছিলেন উপমন্ত্রী। এবারও মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ হয়ে এমন সংখ্যায় দাঁড়াতে পারে। তবে সম্ভাব্য মার্চে যে সম্প্রসারণের কথা ভাবা হচ্ছে সেখানে একবারেই হয়ত এই সংখ্যায় পৌঁছানো হবে না। তবে এখন পর্যন্ত দুটি মন্ত্রণালয়ে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী নেই। এদুটো হলো শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এখানে দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দুজন নারী সংসদ সদস্য আসতে পারেন বলে আলোচনায় আছে। তারা কি সংরক্ষিত নারী আসনের, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন, সম্ভবত, তবে নিশ্চিত নয়।
একটি সূত্র বলছে, এ দুটি মন্ত্রণালয়ে এমন দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে যারা আগে কোনো না কোনো সময় মন্ত্রিসভায় ছিলেন। বর্তমান সংসদে এ দুজনই সংরক্ষিত আসনে নারী সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতারা সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, এবারের মন্ত্রিসভার আকার বেশ ছোট। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ বা বড় মন্ত্রণালয়গুলোয় মন্ত্রী থাকলেও সবকটিতে প্রতিমন্ত্রী নেই। যেমন পররাষ্ট্র, অর্থ, পরিকল্পনা, স্থানীয় সরকার, পানি সম্পদ, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য গণপূর্ত। আবার বড় একটি মন্ত্রণালয়ে (ডাক ও টেলিযোগাযোগ) প্রতিমন্ত্রী আছেন কিন্তু মন্ত্রী নেই। এসব মন্ত্রণালয় নিয়ে ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এখনই পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা আছে। যেহেতু এবার সরকারের অন্যতম লক্ষ্য নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনা তাই এই মন্ত্রণালয়ের দেখভাল প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও নীতি নির্ধারকেরাই করবেন বলে মনে হচ্ছে। মন্ত্রিসভা পূর্ণাঙ্গ সম্প্রসারণ কাজ শেষ হলে টেকনোক্রেট কোটায় আরও একজনকে আনা হতে পারে। এই মন্ত্রিসভায় এখন পর্যন্ত দুজন টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রী আছেন। গত মন্ত্রিসভায় এই সংখ্যা ছিল তিন।
আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, যে দুটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী নেই সেই দুটি ছাড়া অর্থ, স্বাস্থ্য, পরিকল্পনা, স্থানীয় সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ নেওয়া হতে পারে।
সূত্র বলছে, শ্রম ও কর্ম সংস্থান, সংস্কৃতি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে নির্বাচিত সদস্যদের প্রতিমন্ত্রী বা মন্ত্রী করা হতে পারে। বাকিগুলোতে ৩০০ আসনে বিজয়ী নেতাদের মধ্য থেকে আনা হবে।