Logo
×

Follow Us

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু কমাতে আরেক মশার কামড় খাওয়ার সুপারিশ

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৯

ডেঙ্গু কমাতে আরেক মশার কামড় খাওয়ার সুপারিশ

এডিস মশা। প্রতীকী চিত্র

ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে এক অভিনব পদ্ধতির কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। এতে উন্নতির সম্ভাবনাও দেখছেন তারা। তাদের মতে, ব্যাকটেরিয়াযুক্ত মশার কামড় ডেঙ্গু কমাতে পারে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, কলম্বিয়ার আবুরা উপত্যকার তিনটি শহরের ডেঙ্গু সংক্রমণ ৯৭ শতাংশ হ্রাসের পেছনে উয়োলবাখিয়া ব্যাকটেরিয়াযুক্ত মশা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 

অলাভজনক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মসকিউটো প্রোগ্রামের গবেষকরা গত অক্টোবরের শেষের দিকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। সংস্থাটি ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাস বা ইয়েলো ফিভারের মতো মশাবাহী রোগ ঠেকানোর বিষয়ে কাজ করে। সেজন্য উয়োলবাখিয়া ব্যাকটেরিয়া মশার শরীরে ঢুকিয়ে সেই মশা এই রোগের প্রবণতা যেসব অঞ্চলে বেশি, সেখানে ছেড়ে দেন তারা।

এডিস এজিপ্টাই মশার রোগ ছড়ানোর ক্ষমতাকে কমাতে পারে উয়োলবাখিয়া ব্যাকটেরিয়া। এডিস বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক রোগবাহী মশা। ২০১৫ সালে ব্যাকটেরিয়াযুক্ত মশা  প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে কলম্বিয়ার বেলো শহরে ছাড়া হয়। পরে মেডেয়িন ও ইটাগুয়া শহরেও ছেড়ে দেওয়া হয় এই মশা। এর আগেও ব্যাকটেরিয়াযুক্ত মশা ছাড়া হয়েছিল বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও। তবে এত বড় আকারে এটাই প্রথম।

২০২২ সালের এপ্রিলে এই গবেষণা থেকে জানা যায়, বেলো ও ইটাগুয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ মশা উয়োলবাখিয়াযুক্ত মশাদের থেকে সংক্রমিত হচ্ছে। মেডেয়িনের জন্য এই হার ৬০ শতাংশ। কিন্তু এই সংক্রমণ ডেঙ্গু সংক্রমণের ক্ষেত্রে কতটা প্রভাব ফেলবে তা জানতে গবেষকরা ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত স্থানীয় ডেঙ্গু সংক্রমণের হারের তথ্য খতিয়ে দেখেন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, পরীক্ষা চালানোর শুরুর সময়ে, অর্থাৎ দশ বছর আগের ডেঙ্গু সংক্রমণের সংখ্যা থেকে পরীক্ষা চালানোর পর সংক্রমণের হার ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। মেডেয়িনে একটি নির্দিষ্ট কেসভিত্তিক নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা করা হয়। সেখানেও ব্যাকটেরিয়াযুক্ত মশার সঙ্গে ডেঙ্গু কমতে দেখা গেছে। কমার হার ছিল ৪৭ শতাংশ।

এই গবেষণার ইতিবাচক ফলাফল ‘সহজলভ্য সমাধানের দিকে আলোকপাত করে ও নাগরিক পরিসরে গণস্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে’ ভূমিকা রাখবে বলে গবেষকদের বিশ্বাস। কলম্বিয়ার এই পরীক্ষা বিশ্বের সবচেয়ে বড় হলেও ওয়ার্ল্ড মসকিউটো প্রোগ্রামের তরফে এমন প্রকল্প আরো নানা জায়গায় নেওয়া হচ্ছে। এর আগে, ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগিয়াকার্তাতে এই ধরনের পরীক্ষার পর ডেঙ্গু সংক্রমণ ৭৭ শতাংশ কমে যায়। ব্রাজিলে এই হার ৩৮ শতাংশ।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুরোধে নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রামের প্রস্তাবিত সমাধানে ভালো উপায় হলেও দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। 

ব্রাজিলের জীববিজ্ঞানী রাফায়েল মাসিয়েল দে ফ্রাইটাসের মতে, যেহেতু ডেঙ্গুর প্যাথোজেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হতে পারে। ফলে একটা সময়ের পর তারা উয়োলবাখিয়া ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব কাটিয়ে ফেলার ক্ষমতাও অর্জন করে নিতে পারে। তাই আমি এটা বলবে না যে, উয়োলবাখিয়া পন্থা ডেঙ্গুর আজীবনের সমাধান। কিন্তু অবশ্যই এটা সমাধানের জন্য অন্তত একটা ভালো উত্তর।

অন্যদিকে উয়োলবাখিয়া পদ্ধতিতে ডেঙ্গু কমাতে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়। তা ছাড়া এই পরীক্ষার সঙ্গে ঠিক কীভাবে সম্পর্কিত ডেঙ্গু সংক্রমণ এখনও সেটি পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। 

সর্বশেষ তথ্য বলছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮০১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৯৩ জন।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫