
স্ট্রোপটোকক্কাস সংক্রমণের দুই-তিন সপ্তাহ পর জ্বর দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
স্ট্রোপটোকক্কাস সংক্রমণের জটিলতার কারণে রিউম্যাটিক ফিভার দেখা যায়। এই সংক্রমণ হওয়ার দুই-তিন সপ্তাহ পর এই জ্বর দেখা যায়। সাধারণত পাঁচ থেক ১৫ বছর বয়সীদের এই জ্বর হয়ে থাকে।
গ্রুপ এ হিমোলাইটিক স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া থেকে স্কারলেট ফিভার বা স্ট্রেপ থ্রোট জাতীয় সংক্রমণ হয়, যার থেকে রিউম্যাটিক ফিভার হতে পারে। স্ট্রেপটোকক্কাস জীবাণুর কারণে গলায় সংক্রমণ হলে তার থেকেও রিউম্যাটিক ফিভার হতে পারে। স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণের সঙ্গে রিউম্যাটিক ফিভারের কী সম্পর্ক সে বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও, মনে করা হয় এই সংক্রমণের কারণে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়।
লক্ষণ ও উপসর্গ : স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণ হওয়ার দু থেকে চার সপ্তাহ পর রিউম্যাটিক ফিভারের লক্ষণগুলো প্রকট হয়। তবে সব লক্ষণই যে সবার দেখা দেবে তা নয়। জ্বরের সঙ্গে আর্থ্রাইটিস, বিশেষ করে হাঁটু ও কনুইয়ে ব্যথা শুরু হয়। এক জয়েন্ট থেকে ব্যথা অন্য জয়েন্টে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। এর সঙ্গে মাথাব্যথা, তলপেটে ব্যথা, হাই ফিভার দেখা যায়। অনেক সময় ঘন ঘন ঘেমে যাওয়া এবং ত্বকে র্যাশের সমস্যা দেখা দেয়। বমি ভাব, ওজন কমে যাওয়া বা ক্লান্তিও দেখা যেতে পারে। হাত এবং পায়ের হাড়ে ও টেন্ডনের ওপর দানার মতো ওঠে। কোমর, পা এবং হাতের ওপরের অংশে লাল লাল র্যাশ বের হয়।
কী কী পরীক্ষা করা হয় : বার বার সর্দিকাশি হলে সময়মতো রক্ত এবং স্যালাইভা পরীক্ষা করাতে হবে। এ ছাড়া ইসিজি, জয়েন্টের এক্সরের প্রয়োজন হতে পারে। রিউম্যাটিক ফিভার শনাক্তের ক্ষেত্রে কিছু নির্ণায়ক ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান নির্ণায়ক হলো-হার্ডাইটিস (হার্টের ইনফ্লামেশন), পলিআর্থ্রাইটিস, রিউম্যাটিক নোডিউলস, ত্বকে র্যাশের সমস্যা। অন্যগুলো হলো জ্বর, এক বা একাধিক জয়েন্টে ব্যথা।
চিকিৎসা : রিউম্যাটিক ফিভারের চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে লক্ষণগুলো কমানো। স্ট্রেপ ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করার জন্য পেনিসিলিন বা অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ২০ বছর পর্যন্ত এই প্রতিরোধক চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। যদি রোগী কিশোর হয় এবং প্রথমবারের মতো এই রোগ হয় তাহলে ২০ বছরের পরও এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। কারণ এই চিকিৎসায় স্ট্রেপটোকক্কাস নির্মূল হওয়া খুব জরুরি। কারণ কোনো ব্যাকটেরিয়া থেকে গেলে গলায় সংক্রমণ হলে রিউম্যাটিক ফিভার আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সম্ভাব্য জটিলতা : যদি ঠিকমতো রোগ নির্ণয় না হয় তাহলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। হার্টের ভালভ নষ্ট হয়ে বুকে ব্যথা, এমনকি হার্টফেলও হতে পারে। তা ছাড়া পরবর্তীকালে মুভমেন্টজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। হাত এবং শরীর কাঁপতে থাকে। এই সমস্যাকে সিডেমহ্যাম কোরিয়া বলে। তাই ঠিক সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্র : লাইভ সায়েন্স