
প্রতীকী ছবি।
স্তন ক্যান্সারে নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। শুধু দ্রুত শনাক্ত করতে না পারার কারণেই স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। প্রতি বছর বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে ১২ হাজার ৭৬৪ জন নারী, আর মারা যায় ৭ হাজার ১৩৫ জন।
এতোদিন এই ক্যান্সারের ব্যাপারে নারীদের সচেতন করার জোরটা ছিল বেশি। কিন্তু এখন পুরুষদেরকেও সচেতন করার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কারণ, পুরুষদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। যদিও পুরুষদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার খুবই কম। এক হিসেবে দেখা যায় যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ৪১ হাজার মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, সেই তুলনায় মাত্র ৩০০ জন পুরুষ এই রোগে আক্রান্ত হন।
জানুন স্তন ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে:
কারণ
প্রথমত এর জন্য দায়ী আমাদের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তন। যেমন প্রচুর ফাস্টফুড খাওয়া, সবুজ শাকসবজি খুবই কম খাওয়া, কম শারীরিক পরিশ্রম করা এবং অতিরিক্ত স্থূলতায় ভোগা স্তন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। এছাড়াও আরো যেসব কারণ রয়েছে তা হলো:
দেরিতে বাচ্চা নেয়া
বাচ্চাকে বুকের দুধ দিতে অনীহা বা অপারগতা প্রকাশ এবং
বেশি বয়স, গড় আয়ু বেড়ে যাওয়াতে এ রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
যদি Cancer ছড়িয়ে পড়ে তাহলে যেখানে ছড়িয়ে পড়েছে তার উপসর্গ দেখা দেয়া যেমন-
* লিভার বা যকৃতে ছড়ালে পেটে ব্যথা বা জন্ডিস দেখা দেয়।
* ফুসফুসে ছড়ালে কাশি হওয়া এমনকি কাশির সঙ্গে রক্তও যেতে পারে।
* হাড়ে ছড়ালে সেখানে তীব্র ব্যথা হওয়া।
লক্ষণ
১. স্তনের কোনো অংশ চাকা চাকা হয়ে যাওয়া অথবা কোন লাম্প দেখা যাওয়া।
২. স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন।
৩. স্তনবৃন্তের আকারে পরিবর্তন।
৪. স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হওয়া।
৫. স্তনবৃন্তের আশেপাশে র্যাশ বা ফুস্কুড়ি দেখা যাওয়া।
৬. বগলে ফুলে যাওয়া বা চাকা দেখা যাওয়া।
৭. স্তনের ভেতরে গোটা ওঠা বা শক্ত হয়ে যাওয়া।
৮. স্তনের বোটা ভেতরে ঢুকে যাওয়া।
যারা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকির মধ্যে আছেন
১. বয়স্ক মহিলা
২.যাদের স্তন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস আছে
৩. যেসব মহিলারা বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাননি
৪. BRCA-1, BRCA-2 নামক জিনের মিউটেশনের কারণে
৫. অল্প বয়সে মাসিক শুরু হওয়া
৬.দেরিতে মাসিক বন্ধ হওয়া
৭. মদ্যপান করলে
৮. ব্রেস্টের কিছু অসুখ থাকলে
৯. অন্য কোনো ক্যান্সার যেমন- কোলন, ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হলে।
সচেতনতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই এড়ানো যায়। যেমন:
১. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। স্থূলতার সাথে স্তন ক্যান্সারের একটি যোগসূত্র রয়েছে।
২. শরীরচর্চা নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। তাই রোজ আধা ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে।
৩. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সবজি জাতীয় খাবার যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, ফলমূল ইত্যাদি খাবার বেশি খেতে হবে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো যায়।
৪. অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।