Logo
×

Follow Us

স্বাস্থ্য

‘হৃদয় দিয়ে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন’

Icon

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৩৬

‘হৃদয় দিয়ে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন’

প্রতীকী ছবি

‘হৃদয় দিয়ে হৃদযন্ত্রের যত্ন নিন’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ২৯ সেপ্টেম্বর উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব হার্ট দিবস। দিনটি বাংলাদেশেও উদযাপন করা হচ্ছে  বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে।

সারা বিশ্বে হৃদরোগের কারণে বছরে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ লোক মারা যায়। বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ১৭ ভাগই হৃদরোগের কারণে। তবে সবচেয়ে উদ্বেগ এর বিষয় হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে কম বয়সী তরুণ-তরুণীরাও। 

গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে একজন হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ক্ষতিকর চর্বিজাতীয় খাবার, কোল্ড ড্রিংকস, তামাক ও  নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনকেই কারণ হিসেবে দেখছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বিষয়টিকে খুবই উদ্বেগজনক বলেও মনে করছেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তাই অবিলম্বে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা চূড়ান্ত করা না গেলে ট্রান্সফাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি আশংকাজনক হারে বাড়তেই থাকবে। বিশ্ব হার্ট দিবস সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহায়তায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, ট্রান্সফ্যাট একটি ক্ষতিকর খাদ্য উপাদান যা হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং তা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও  বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে। হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করতে ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি কান্ট্রি প্রোফাইল ২০১৮ অনুসারে, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৩০ শতাংশের পেছনে দায়ী হৃদরোগ। সংখ্যার হিসেবে যা প্রায় পৌনে ২ লাখ। অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের হিসাবে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে হৃদরোগে ১ কোটি ৮৬ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়।

ওয়েবিনারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা.  সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল হলে তা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করবে সরকার।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী বলেন, পৃথিবীব্যাপী মোট মৃত্যুর ৩২ শতাংশ হয়ে থাকে হৃদরোগ এবং রক্তনালীর রোগের কারণে। প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১৮ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় হৃদরোগের কারণে। বাংলাদেশেও হৃদরোগের ভয়াবহতা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে তরুণ ও যুবকরা হৃদরোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমাদের কাছে হৃদরোগ নিয়ে যে রোগী আসে, সেগুলোর মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশের বেশিই তরুণ-যুবকদের পাচ্ছি। যা গত ৩/৪ বছর আগেও ছিল ৫ শতাংশের কম। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেটি ৫ থেকে ২০ শতাংশের ওপরে চলে এসেছে।

তরুণরা হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে- এটি আমাদের জন্য একটি ভাবনার বিষয়। তরুণ সমাজ যদি এভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে তাহলে আজ থেকে ৫০ বছর বা ১০০ বছর পর আমরা সুস্থ তরুণ সমাজ পাব না। এটি কিন্তু পুরো জাতির জন্য বা জাতি গঠনের জন্য এই জায়গায় গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫