ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২০, ০৯:১৬ এএম
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়াকে বলা হয় হাইপক্সিয়া। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যেটি সাধারণ মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।
করোনার সংক্রমণ যত বেড়েছে, ঘরে ঘরে অক্সিমিটার রাখার প্রবণতাও তত বেড়েছে। কভিড-১৯ এর অন্যতম উপসর্গ যেহেতু শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া, তাই সাধারণ মানুষ সচেতন হয়েছেন। রক্তে অক্সিজেন কমে যাওয়াকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় হাইপক্সিয়া।
শুধু করোনা নয়, অন্যান্য অসুখেও হাইপক্সিয়া হতে পারে। এটি কোনো রোগ নয়, উপসর্গ। তবে এই উপসর্গ এতটাই সিরিয়াস যে, দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে রোগীর মস্তিষ্কে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
কাদের হাইপক্সিয়ার সম্ভাবনা বেশি
একজন সুস্থ মানুষের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-১০০ শতাংশ থাকা উচিত। সেটা কম হয়ে গেলেই সমস্যা। ক্রনিক অসুখের কারণে কারও হাইপক্সিয়া হতে পারে, আবার আচমকাই কারও মধ্যে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে।
- সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ), অ্যাজমার রোগীদের ক্ষেত্রে হাইপক্সিয়া দেখা যায় বেশি। কারণ এদের শরীরে এমনিই অক্সিজেন কম জেনারেটেড হয়। তাই কোনো কারণে যদি রোগের প্রকোপ বাড়ে তখন শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। সেক্ষেত্রে যদি দেখা যায়, অক্সিজেনের লেভেল ৯০-এর নীচে নেমে গিয়েছে, তখন দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
- অ্যানিমিয়ার রোগীদের মধ্যেও এই উপসর্গ দেখা যায়। আমাদের শরীরে রক্তের মধ্যে হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন বহন করে। অ্যানিমিয়ার রোগীদের শরীরে এমনিতেই অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে। যে কারণে এদের নিয়মিত ব্লাড টেস্ট করানো গেলে ভাল। রক্তে হিমোগ্লোবিন খুব কমে গেলে, আগাম ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে।
- এছাড়া দমবন্ধ করা জায়গায় থাকার ফলেও হাইপক্সিয়া হতে পারে। কভিড বিপর্যস্ত এ সময়ে ভিড়ভাট্টায় এই সমস্যা বাড়তে পারে বলে মত চিকিৎসকদের।
- কারও হার্টে ব্লকেজ থাকলে উপসর্গ হিসেবে হাইপক্সিয়া দেখা যেতে পারে। তখন রোগীর বুকে ব্যথা হবে।
- দুর্ঘটনাজনিত কারণেও এটি হতে পারে। যেমন- শ্বাসনালিতে খাবার আটকে গিয়ে হাইপক্সিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নিয়মিত মনিটর করা জরুরি
হাইপক্সিয়ার কারণেই করোনা রোগীর ক্ষেত্রে নিয়মিত অক্সিজেন লেভেল মনিটর করা হচ্ছে এবং সেই মাত্রা ৯০-এর নিচে নেমে গেলে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেনারেল ফিজ়িশিয়ান ডা. সুবীরকুমার মণ্ডল বলেন, অধিকাংশ করোনা রোগীর কমন উপসর্গ শ্বাসকষ্ট। এই রোগে ভাইরাসটি ফুসফুসে ঢুকে অ্যালভিওলাই ও ফুসফুসের থলিগুলোর ক্ষতি করে। যে কারণে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করার কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে। অক্সিজেনের ঘাটতি যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, তা মাথায় আঘাত পর্যন্ত করতে পারে।
প্রতিকারের উপায়
- পরিস্থিতি এখন শাঁখের করাতের মতো। স্বাভাবিক নিয়মে রাস্তায় বেরোলে বা ভিড়ের মধ্যে গেলে মাস্ক পরা আবশ্যিক। কিন্তু ভিড় জায়গা মানে সেখানে অক্সিজেন কম ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেশি। সেক্ষেত্রে মাস্ক পরে থাকলে শ্বাসকষ্ট হবেই। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়ে কারও বুকে ব্যথা হতে পারে, কেউ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।
- যারা নিজেরা গাড়ি চালান, তাদের গাড়ির মধ্যে সারাক্ষণ মাস্ক না পরে থাকলেও চলবে বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। তবে বাইরের কোনো ব্যক্তি থাকলে মাস্ক পরা উচিত।
- মর্নিংওয়াক ও শারীরচর্চার সময়েও মাস্ক পরতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। এতেও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা।
- এখন জিম খুলে গিয়েছে, অনেকে যাচ্ছেনও। কিন্তু কার্ডিয়ো, ওয়েট ট্রেনিং, এরোবিক্স বা অন্য এক্সারসাইজ় করার সময়ে মাস্ক না পরার নিদান চিকিৎসকদের। সেক্ষেত্রে অন্যদের থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটাই একমাত্র উপায়। -আনন্দবাজার পত্রিকা
ABOUT CONTACT ARCHIVE TERMS POLICY ADVERTISEMENT
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ | প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
প্রধান সম্পাদক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ
প্রকাশক: নাহিদা আকতার জাহেদী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী
অনলাইন সম্পাদক: আরশাদ সিদ্দিকী | ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭
© 2021 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh