পেঁপে খেলে যাদের ক্ষতি হতে পারে

মিষ্টি স্বাদ ও আকর্ষণীয় রঙের পুষ্টিকর ফল পেঁপে বছরের বেশিরভাগ সময়েই পাওয়া যায়। কাঁচা কিংবা পাকা দুই অবস্থাতে খাওয়া যায়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারি। এ ছাড়া পেঁপেতে থাকা প্যাপেইন নামক এনজাইম খাদ্যের বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। হৃদরোগ এবং উচ্চ কোলেস্টেরল রোগীদেরকে চিকিৎসকগণ পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদিও পেঁপে অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ফল, তবে সবার জন্য এটি খাওয়া নিরাপদ নয়।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে

গর্ভবতী হলে

শিশুর বৃদ্ধি এবং গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে পেঁপে এমন একটি ফল যা এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। মিষ্টি ফলের মধ্যে ল্যাটেক্স থাকে যা জরায়ু সংকোচনকে ট্রিগার করতে পারে, যা তাড়াতাড়ি প্রসবের দিকে পরিচালিত করে। এই ফলে প্যাপেইন রয়েছে যা ভ্রূণকে রক্ষা করে এমন ঝিল্লিকে দুর্বল করে দিতে পারে। এটি বেশিরভাগ আধা-পাকা পেঁপের ক্ষেত্রে ঘটে।

হার্টে সমস্যা থাকলে

পেঁপে খেলে তা হার্ট সংক্রান্ত অসুখের ঝুঁকি কমাতে পারে। তবে আপনি যদি ইতিমধ্যেই হার্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে পেঁপে এড়িয়ে চলাই ভালো। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, পেঁপেতে অল্প সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড রয়েছে, একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা মানুষের পাচনতন্ত্রে হাইড্রোজেন সায়ানাইড তৈরি করতে পারে। যদিও উত্পাদিত যৌগের পরিমাণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এটি অতিরিক্ত মাত্রায় হলে হার্টের রোগীর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপর এটি একই প্রভাব ফেলতে পারে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়াতে আক্রান্ত হলে

যারা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি উপকারী নয়। কারণ মিষ্টি স্বাদের ফলটিতে অ্যান্টি-হাইপোগ্লাইসেমিক বা গ্লুকোজ-হ্রাসকারী প্রভাব রয়েছে। এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে বিপজ্জনক স্তরে নিয়ে যেতে পারে। যার ফলে মস্তিষ্কের অসারতা, ঝিমুনি এবং দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

অ্যালার্জি থাকলে

ল্যাটেক্স অ্যালার্জিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও পেঁপে থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। এটি ঘটে কারণ পেঁপেতে কাইটিনেস নামক এনজাইম থাকে। এনজাইম ল্যাটেক্স এবং এগুলো থাকা খাবারের মধ্যে বিপরীত-প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। যার ফলে হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা হতে পারে। অনেকের কাছে পেঁপের গন্ধ অসহ্যকর মনে হতে পারে।

কিডনিতে পাথর হলে

পেঁপেতে ভিটামিন সি রয়েছে। ভিটামিন সি অত্যধিক গ্রহণের ফলে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। এমনকি এটি পাথরের আকার বাড়িয়ে তুলতে পারে, তখন প্রস্রাবের মাধ্যমে তা বের করা কঠিন হয়ে ওঠে। তাই কিডনিতে পাথর থাকলে পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের

পেঁপে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে যারা হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভুগছেন অর্থাৎ যাদের রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা হঠাৎ নেমে যায়, তারা পেঁপে খাবেন না।কারণ মিষ্টি স্বাদের এই ফলে অ্যান্টি-হাইপোগ্লাইসেমিক বা গ্লুকোজ-হ্রাসকারী প্রভাব আছে। তাই হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্তদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা আরও কমিয়ে দিতে পারে পেঁপে। বিভ্রান্তি, দুর্বলতা ও দ্রুত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //