শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে? বুঝবেন যেসব লক্ষণে

কোলেস্টেরল থেকে অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। বড়সড় জটিলতার কারণ হতে পারে। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এই রোগের কয়েকটি লক্ষণ সকলেই জানা দরকার।

কোলেস্টেরল কী
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে– ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল ও টোটাল কোলেস্টেরল। এর মধ্যে একটি হলো উপকারী। আর তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

কখনও কখনও আপনার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও, শরীরে কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায় না। হয়তো আপনার অনেক বছর ধরে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল আছে কিন্তু আপনি বুঝতে পারেননি। তবে এটা নির্ণয় করা জরুরি। কারণ উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের সঙ্গে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের সম্পর্ক রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপসর্গ
সব সময় বোঝা না গেলেও কিছু কিছু উপসর্গের মাধ্যমে আপনি উচ্চ কোলেস্টেরলে ভুগছেন কিনা তা জানা যায়। যেমন–

চোখের পাতা বা চোখের নিচের দিকে ব্যথাহীন হলুদাভ ভাব দেখলে তা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। এটা চোখের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা করে না, কিন্তু উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ প্রকাশ করে।

আয়নার খুব কাছাকাছি গিয়ে লক্ষ্য করুন আপনার চোখের মণির চারপাশে ধূসর রঙের কোনো গোলাকার দাগ দেখা যাচ্ছে কিনা? এটা সাধারণত ৪০ বছরের পর বেশি দেখা যায়। এটাও কোলেস্টেরলের উপসর্গ বলে ধরা হয়।

উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রক্তনালিতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যেতে পারে। তখন হৃদরোগের ভয়াবহ ঝুঁকি থাকে।

উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে মস্তিষ্কেও অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি হতে পারে। এ কারণে ঘাড় ও কাঁধে মাঝেমধ্যে তীব্র ব্যথা   হতে পারে। অনেক চিকিৎসকের মতে, উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে মাথার পেছনেও তীব্র ব্যথা দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত হৃদস্পন্দন বেশির ভাগ সময়ই ক্ষতিকর নয়। সাধারণত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের পর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। কখনও এটা উদ্বিগ্নতা কিংবা বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও হয়। তবে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া কখনও কখনও হৃদরোগের কারণেও হতে পারে। অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।

অতিরিক্ত ফ্যাটি খাবার খেলে এবং ফলমূল ও শাকসবজি না খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। আবার অতিরিক্ত ওজন, অ্যালকোহল পান এবং কোনো ধরনের ব্যায়াম না করলেও কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা বাড়ে। কারও পরিবারে যদি কোলেস্টেরলের ইতিহাস থাকে, তাদেরও কোলেস্টেরল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তারপরও কোলেস্টেরলের মাত্রা সুনির্দিষ্টভাবে কী পরিমাণ রয়েছে, তা জানার জন্য খালি পেটে রক্তের লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষাটি প্রতি বছর অন্তত একবার করে দেখুন।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারে অভ্যস্ত হোন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। পাশাপাশি দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপনের চেষ্টা করুন।

লেখক: প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //