ঋতু পরিবর্তন মানেই মৌসুমি সর্দি-কাশির আধিপত্য। মাথা ব্যথা, বুকে কফ জমে যাওয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট জনজীবন বলতে গেলে নাকাল করে দেয়। আর যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে তাদের তো যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। কেউ কেউ পাত্তা না দিলেও অনেকেই এ সময় ওষুধের দোকানে ও ডাক্তারের চেম্বারে ভিড় করেন নিস্তারের জন্য। তবে চাইলে ঘরে বসেও মুক্তি পাওয়া যায় মৌসুমি সর্দি-কাশির ছোবল থেকে। মৌসুমি সর্দি-কাশি দূর করার কিছু ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক টোটকা।
সর্দি-কাশি দূর করতে আদা চা যেন মহৌষধ। মৌসুমি সর্দি-কাশির কবলে পড়লে আদা কুচি দিয়ে চা করে পান করুন। দেখবেন সর্দি-কাশিজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি মিলেছে। রসুনও এ ক্ষেত্রে বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে। সর্দি-কাশির মোকাবিলায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট দারুণ কাজ করে। রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। চার-পাঁচ কোয়া রসুন ভেজে কিংবা সুপের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে আরাম পাবেন। সর্দি-কাশির পাশাপাশি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ফাংগালের সংক্রমণ থেকেও নিস্তার মিলবে রসুন ব্যবহারে।
মৌসুমি সর্দি-কাশি উপশমে লেবু ও মধু ভালো কাজ করে। লেবু ও মধুর মিশ্রণের কার্যকারিতা আদা চায়ের মতোই। এক গ্লাস গরম পানিতে দুই চা-চামচ মধু ও এক চা-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। দেখবেন সর্দি-কাশি দূরে পালাবে। দুধ ও হলুদও ঘরোয়া উপায়ে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার ওষুধ হতে পারে। দুধ এমনিতেই সব বয়সিদের জন্য উপকারী। এর সঙ্গে যদি এক চা-চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে পারেন তবে সর্দি-কাশির কষ্ট থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কেননা হলুদে আছে অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা সংক্রমণ রোধে পটু।
এ ছাড়া মৌসুমি রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ভিটামিন সির। আর তাই ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবু, আনারস, কমলালেবু, আমলকী পেয়ারাসহ বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে পারেন। পানির উপকারিতার শেষ নেই। বিশেষ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কাজে দেয়। এ সময় প্রচুর পানি ও ফলের রস পান করলে তা পানিশূন্যতা রোধ করে। ফলে সর্দি-কাশি থেকেও মেলে মুক্তি।
ঘুম ও খাবার-দাবারে নিয়ম মেনে চলাও সুস্থ থাকার ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে পড়ে। সে কারণে অন্য সময় তো বটেই, ঋতু পরিবর্তনের সময় এদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত। এতে করে অন্য মৌসুমি রোগবালাইয়ের মতো সর্দি-কাশিকেও সরিয়ে রাখা যাবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে সর্দি দ্রুত সেরে যায়। এ সময় কিছু নিয়ম মানাও উচিত। এই যেমন রোজ নিয়ম মতো লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা। এটি ফ্লু-মুক্ত থাকতে সাহায্য করবে। মৌসুমি সর্দি-কাশির যন্ত্রণা বয়স্করা সইতে পারলেও নাজেহাল হয় শিশুরা। তাই তাদেরও এসব ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে রাখা উচিত।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh