দেশে প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছে

কিডনি রোগের বিভিন্ন ধরন ও ধাপ রয়েছে, যার প্রভাব দেশজুড়ে প্রায় দুই কোটি মানুষের ওপর পড়েছে। এসব রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল, যা ২৫ শতাংশ রোগীর আর্থিক সামর্থ্যের বাইরে। কিডনি বিকল হওয়া রোগীদের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক হেমোডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্স প্লান্টের প্রয়োজন হলেও প্রায় ৭০ শতাংশ রোগী এই চিকিৎসা নিতে পারছে না। 

আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।  

কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিআরএ) এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।  

আরও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রয়্যাল লন্ডন হাসপাতাল, যুক্তরাজ্যের নেফ্রোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ মাগদী ইয়াকুব।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম মহিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন রুবেল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনি ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিডনি রোগ ও প্রতিরোধ, ডায়ালাইসিস, কিডনি সংযোজন, সিএপিডি ইত্যাদি নিয়ে আলোকপাত করেন।  

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সরকারি অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, কিডনি রোগীদের ৮০ শতাংশের বেশি যখন কিডনি কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে, তখন কিডনি রোগের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। তত দিনে বেশ বিলম্ব হয়ে যায়, চিকিৎসার ব্যয়ও বাড়ে। দুঃখজনক যে, বেশির ভাগ রোগীকে বাঁচানোও সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তিনি আরও বলেন, কিডনি রোগের প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও গ্লোমেরুনেফ্রাইটিস। তাই প্রাথমিকভাবে কিডনি রোগ শনাক্ত করার জন্য স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি-বেসরকারি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে এই স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করে রোগীদের রোগ শনাক্ত করার প্রচেষ্টা করা উচিত। এতে অনেক রোগীকে কম খরচে চিকিৎসা দিয়ে বাঁচানো সম্ভব হবে।

কিডনি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার লোক কিডনি রোগে মারা যাচ্ছে। খোঁজ নিলে দেখা যায়, তাদের বেশির ভাগই চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে পারেনি। কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীদের প্রায় ৭০ শতাংশ অর্থের অভাবে পূর্ণ চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হয়। এই ব্যয় কমাতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এজন্য চিকিৎসক, নার্স ও নেফ্রোলজিস্ট চিকিৎসকদের আরও সচেতনভাবে চিকিৎসা দিতে হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh