শীতের সময়টা ধুলাবালির রাজত্ব। বাতাসেও আর্দ্রতা কমে। ফলে বায়ুদূষণ বেড়ে যায়। এসবই ডাস্ট এলার্জির অন্যতম কারণ। ফলে এ সময় ডাস্ট এলার্জিতে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে যায়। ডাস্ট হচ্ছে বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধুলাবালি, বালিকণা, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, বিভিন্ন রকম রাসায়নিক পদার্থ ও ধোঁয়া। এগুলো নাক, কান ও মুখে এলে যাদের এলার্জি সমস্যা আছে তারা সংক্রমিত হয়। শুরুতে আক্রমণটা মৃদু হলেও পুনরায় ধুলাবালি সংস্পর্শে এলে তা বেড়ে যায়।
ডাস্ট এলার্জিতে আক্রান্তদের নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়তে থাকে। শুরুর দিকে কম হলেও ধীরে ধীরে বাড়ে। এ ছাড়া কারো কারো সর্দি-কাশিও হয়ে থাকে। পাশাপাশি বিরতিহীন হাঁচি লেগেই থাকে। ডাস্টের কারণে চোখেও সমস্যা হয়ে থাকে। চোখ চুলকায়, পানি পড়ে, লাল হয়ে যায়। ত্বকও অসুস্থ করে দেয় ডাস্ট। চুলকানি, র্যাশ ও বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। বাড়তে পারে অ্যাজমার সমস্যাও। ভাসমান ডাস্টের সঙ্গে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ঘুরে বেড়ায়। ফলে মারাত্মক রোগাক্রান্তেরও সমূহ-সম্ভাবনা থাকে।
ডাস্ট এলার্জির আক্রমণ প্রতিরোধে কী করতে হবে। অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ঘর ঝাড়তে কিংবা পরিষ্কার করার সময় মুখে মাস্ক পড়ে নিতে হবে। তাহলে ডাস্টের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। বাইরে গেলেও মাস্কে মুখ ঢেকে রাখা বাঞ্ছনীয়। এতে বাইরের ধুলাবালি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বাইরে থেকে ঘরে ফিরে হাত-মুখ ধুয়ে নিতে হবে, যেন অপ্রত্যাশিত ডাস্ট শরীরে জেঁকে বসতে না পারে। এ ছাড়া পরিধেয় কাপড় নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, ধুলাবালি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ঘরের কোনায় এবং আসবাবপত্রে যেন ধুলাবালি জমতে না পারে, সে কারণে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে এবং আসবাবপত্র মুছতে হবে। পাশাপাশি বিছানার চাদর ও বালিশ নিয়মিত ধোয়া উচিত।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়ার রোগীদের একটু সতর্ক থাকা উচিত। তাদের এলার্জি সমস্যা থাকলে নিয়মিত এই রোগের ভ্যাকসিন নেওয়া দরকার, যাতে সরাসরি এলার্জি সারতে সাহায্য না করলেও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা এলার্জি প্রতিরোধ করতে পারে। গোসল, খাওয়া ও ঘুমের নিয়মের ব্যাঘাত করা চলবে না। অ্যাজমা সমস্যা থাকলে সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক।
এলার্জি প্রতিরোধে সবার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। হাঁচি, সর্দি-কাশি কিংবা চুলকানি সমস্যা এলার্জির কারণে হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে আগে ডাক্তারের দ্বারস্থ হতে হবে। ডাস্ট এলার্জি প্রতিরোধে এন্টিহিস্টামিন খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া এ সময় শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে ইনহেলার ব্যবহার করা যেতে পারে। এলার্জির জন্য চিকিৎসকরা কৃমিনাশক ওষুধ দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেলে ইনজেকশন দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh