Logo
×

Follow Us

হলিউড

ভাবনার খোরাক দেবে শার্লি

Icon

রাফিউজ্জামান রাফি

প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২০, ০৮:৪৬

ভাবনার খোরাক দেবে শার্লি

আমেরিকান লেখক শার্লি (শিরলে) জ্যাকসনের একটি বায়োপিক নির্মিত হয়েছে চলতি বছরের শুরুতে। বায়োপিকটির নাম শার্লি। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা জোসেফাইন ডেকার। বায়োপিকটি শার্লি জ্যাকসন সম্বন্ধে জানার জন্য বেশ সহায়ক। শার্লি জ্যাকসনের কথা বলতে গেলে বলতে হয় তিনি মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত এক জীবন কাটিয়েছেন। যদিও চলচ্চিত্র নির্মাতা জোসেফাইন ডেকার তা এখানে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে দেখিয়েছেন। সেদিক থেকে বলতে গেলে এই চলচ্চিত্রটিকে একটি মাইন্ড গেইমিং থ্রিলার বলা যায়।

শার্লি চলচ্চিত্রের গল্পটি মূলত গড়ে উঠেছে, দুটি দম্পতিকে ঘিরে। এর একটি হচ্ছে শার্লি-স্ট্যানলি হাইম্যান দম্পতি আর অন্যটি হলো রোজ-ফ্রেড দম্পতি। খ্যাতিমান হরর লেখক শার্লি তার জীবনের মাস্টার পিস লেখাটি লিখতে চলেছেন। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে বসবাস করেন। শার্লির স্বামী স্ট্যানলি হাইম্যান একজন অধ্যাপক। স্বামীর সঙ্গে বাস করার সময় শার্লি দেখতে পান তার দৈনন্দিন জীবনযাপন কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে! সবকিছু যেন পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে!


শার্লির স্বামী স্ট্যানলি ফ্রেড ও রোজ নামের এক অল্প বয়স্ক দম্পতিকে তাদের সঙ্গে বাস করতে আমন্ত্রণ জানান। রোজ একজন গর্ভবতী নারী আর ফ্রেড একটি কলেজে সবেমাত্র শিক্ষকতা করতে চলেছেন। ফ্রেডকে স্ট্যানলি বুদ্ধিজীবী বলে উপেক্ষা করেন। তবে সে সময়ও স্ট্যানলির নজর থাকে রোজের দিকে। আর ওদিক শার্লির বেশিরভাগ সময়ই কাটে বিছানায় শুয়ে বসে আর লেখালেখির জন্য সংগ্রাম করে। 

শার্লি ও স্ট্যানলির মধ্যকার দৈনন্দিন চিন্তা ও উদ্বেগ যেমন দ্রুত বাড়তে থাকে সেই সঙ্গে নবদম্পতিটির দিকেও তাদের মনোযোগ ধাবিত হতে থাকে। মধ্যবয়স্ক দম্পতিটির সঙ্গে তরুণ দম্পতিটির ধীরে ধীরে একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে, বিশেষ করে শার্লির সঙ্গে রোজের। তবে এর ফল যাই হোক না কেন, তা ছিল শার্লি জ্যাকসনের অন্যতম উপন্যাস তৈরির জন্য যথেষ্ট। এভাবেই গড়ে উঠেছে শার্লি নামক বায়োপিকের গল্প। 


সুসান স্কার্ফ মেরেলের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছেন সারা গাব্বিন্স। চলচ্চিত্রটির সংগীত পরিচালনা করেছেন তামার কালী আর ক্যামেরায় ছিলেন স্টুরলা ব্র্যান্ডথ গ্রাভলেন। কেন্দ্রীয় চরিত্র এলিজাবেথ মস শারলি অনিয়ন্ত্রিত জীবনচিত্রের সম্পূর্ণটাই খুব নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সেই সঙ্গে লোগান লারম্যান, মাইকেল স্টুইলবার্গ ও ওডেসা ইয়ঙের অভিনয়ও যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।

তবে বায়োপিকটির প্রতিটি মুহূর্তই অসাধারণ আর উপভোগ্য করে তোলার পেছনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে এলিজাবেথ মসের অসাধারণ অভিনয়। তার সুনিপুণ অভিনয়শৈলীর কারণে দর্শকরা চাইলেও তার ওপর থেকে মনোযোগ সরাতে পারবেন না। লারম্যান ও স্টুইলবার্গ মাঝে মাঝে ঝিমিয়ে পড়লেও মস ও ইয়ঙের বেশকিছু আলোড়ন তোলা সিকোয়েন্স রয়েছে বায়োপিকটিতে। পুরো বায়োপিকজুড়েই নির্মাতা জোসেফাইন ডেকারের নির্মাণ জাদুর এ শৈল্পিক মায়াজাল পাতা রয়েছে। 

এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায় যে, দর্শকরা যখন শার্লি দেখবেন তখন হয় তারা ভাবলেশহীনভাবে অপলক তাকিয়ে থাকবেন কিংবা দাঁতে দাঁত চেপে উপভোগ করবেন। একটুও বাড়িয়ে বলছি না। চলচ্চিত্রটি দেখতে বসলে অস্বাভাবিকভাবে সময়ের হিসেব ভুলে যাবেন সবাই। মনে হবে এর নামই শিল্প! লেখক জ্যাকসনের পুরনো ফ্যাশনের যাপিত জীবনযাপনও এই চলচ্চিত্রের আরেকটি চমক। সবমিলিয়ে বলা যায় শার্লি নামের এই বায়োপিকটি আমাদের ভাবনায় নাড়া দিতে ভীষণ রকম উপযুক্ত একটি চলচ্চিত্র।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫