Logo
×

Follow Us

হলিউড

দুই নৌকায় পা রেখেই সমানতালে এগিয়ে চলছেন সেলেনা গোমেজ

Icon

রাফিউজ্জামান রাফি

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২:২০

দুই নৌকায় পা রেখেই সমানতালে এগিয়ে চলছেন সেলেনা গোমেজ

সেলেনা গোমেজ

২০১১ সালে সারাবিশ্ব মেতেছিল দুই কিশোর-কিশোরীর প্রেম উপাখ্যানে। সব দেশের সংবাদ মাধ্যমের বিনোদন পাতায়ই এসেছিল তাদের এই প্রেমের সংবাদ। তাদের ডেটিংয়ের ছবিগুলোও ফলাও করে প্রকাশ করেছিল পত্রিকাগুলো। এই যুগলের সেই কিশোরটি হলেন বিশ্বখ্যাত পপ সিঙ্গার জাস্টিন বিবার আর কিশোরীটি ছিলেন সেলেনা গোমেজ।

একাধারে অভিনেত্রী ও পপ গায়িকা হিসেবে বিনোদনের দুই অঙ্গনেই যিনি নিজের অভিনয়, গায়কী দিয়ে জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন করেছেন সারা বিশ্বজুড়ে। বিবারের প্রেমে পাগল সেদিনের সেই কিশোরী সেলেনা আজ আর কিশোরী নেই। এখন তিনি ত্রিশে পা রাখা একজন পরিপূর্ণ যুবতী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার খ্যাতির উচ্চতাও বেড়েছে আগের চেয়ে।

জনপ্রিয় এই গায়িকা ও অভিনেত্রী সেলেনা গোমেজ ১৯৯২ সালে টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করেন। ইতালীয় বংশোদ্ভুত মা এবং মেক্সিকান বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া সেলেনা গোমেজের নামকরণ করা হয়েছিল সেসময়ের এক বিখ্যাত গায়িকা সেলেনার নামে। কে জানত গায়িকার নামে নামকরণ করা এই শিশুটি আগামীতে গায়িকা তো হবেন, পাশাপাশি নায়িকা হয়েও বিশ্ব মাতাবেন?

খুব ছোটবেলাতে সেলেনার বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছিল। তারপর থেকে বেড়ে উঠেছেন মায়ের কাছেই। সেলেনাকে নিয়ে একা মায়ের সে সংসার ছিল অভাবে ভরপুর। কথায় আছে শিল্পীর মনে দুঃখ না থাকলে না-কি শিল্প পরিপূর্ণতা পায় না। সেলিনার ক্ষেত্রেও হয়তো সেরকমই হয়েছিল। দুঃখ কষ্টে পরিপূর্ণ শৈশবেই তিনি পা রখেছিলেন শিল্প অঙ্গনে। ঘটিয়েছিলেন নিজের মেধার বিকাশ। একাধারে অভিনেত্রী ও গায়িকা সেলেনার গায়ক সত্তার আগে প্রকাশ পায় অভিনয় সত্তা। শৈশব অমসৃণ থাকলেও অভিনয় শিল্পী হিসেবে সেলেনা গোমেজের শুরুটা বেশ মসৃণ ছিল।

নব্বই দশকের বাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় সিরিজটির নাম ছিল ‘বার্নই অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’। সেলিনা তার যাত্রা শুরু করেন জনপ্রিয় এই টেলিভিশন শো’র গিয়ান্না চরিত্রে। ফলে শিশু শিল্পী হিসেবে পরিচিত পেতে খুব একটা সময় লাগেনি তার। এই সফলতার ধারাবাহিকতায় সেলেনা স্পাই কিডস থ্রি, ওয়াকার, টেক্সাস রেঞ্জার প্রভৃতি চলচ্চিত্রে বেশ সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেন। অভিনয় শিল্পী সেলেনা গোমেজ যখন বেশ হেসে-খেলে কাজ করে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তিনি আত্মপ্রকাশ করেন গায়িকা হিসেবে।

সময়টি ছিল ২০০৯ সাল। এ বছরই সেলেনা তার ব্যান্ডের প্রথম গানের অ্যালবাম বাজারে নিয়ে আসেন। এখানেও সেলেনা ছিলেন অজেয়। ‘সেলেনা গোমেজ অ্যান্ড দ্য স্কিন’ নামক সেই অ্যালবামটি মুক্তির পরপরই এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে। ২০০ অ্যালবামের মধ্যে তার অ্যালবামটি টপ চার্টে নবম স্থান দখল করে নেয়।

প্রথম অ্যালবামের এই সফলতার দুই বছর বিরতি টেনে ২০১১ সালে সেলেনা ও তার ব্যান্ড নিয়ে আসেন তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম। তখন থেকেই নিয়মিত দুই নৌকায় পা রেখে পথচলা শুরু সেলেনার। যার একটির নৌকার নাম সংগীত আর অন্য নৌকাটির নাম হলো অভিনয়।

দুই নৌকায় পা রেখে সবাই হাটতে না পারলেও সেলেনা কিন্তু বেশ সফলতার সঙ্গেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় নিজের ব্যান্ডের দ্বিতীয় একক মুক্তির পাশাপাশি একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে থাকেন এই নারী।

২০১৩ ছিল গায়িকা সেলেনার আরও একটি অর্জনের বছর। তবে সেই অর্জনে সেলেনার ব্যান্ডের কোনো অংশীদারিত্ব ছিল না। এই অর্জন ছিল সেলেনার একার। কেননা ২০১৩ সালে সেলেনা প্রকাশ করেন তার প্রথম একক অ্যালবাম স্টার ড্যান্স। নিজের এই প্রথম এককটি একটুও নিরাশ করেনি সেলেনাকে। এখান থেকেও তিনি কুড়িয়েছেন সাফল্যের মুক্তো। কেননা এই অ্যালবামের টাইটেল সং কাম অ্যান্ড গেট ইট সেসময় এতটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে, মুক্তির পরপরই তা উঠে যায় বিলবোর্ডের ১০০ হট সং লিস্টের টপ টেনে। এরপর থেকে সফলতা আর হাত ছাড়েনি সেলেনার।

সেলেনা যে পথে হেঁটেছেন, সফলতাও হেঁটেছে। সফলতা যে পথে হেঁটেছে, সেলেনাও হেঁটেছেন সেই পথে। ফলে সেলেনা তার দর্শকদের মন মাতাতে যেমন পর্দায় হাজির হয়েছেন বিভিন্ন চরিত্রে তেমন তার শ্রোতাদেরও মাতিয়ে রাখতে প্রকাশ করেন তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম রিভাইবাল। মুক্তির পরপরই বিলবোর্ডে এক নম্বর স্থান দখল করে নেয় অ্যালবামটি। ফলে সেলেনার চলার পথ হয়ে ওঠে আরও মসৃণ।

সেলেনা গোমেজের এই বিজয়রথ এখনো অব্যাহত রয়েছে। নিজের অভিনয় দক্ষতা ও কণ্ঠের জাদু দিয়ে শিশু বয়সে বাবা মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ, দরিদ্রতা, মায়ের সংগ্রামসহ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত নিয়ে এগিয়ে চলা মেয়েটিই আজ জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বের সংগীত ও অভিনয় দুই অঙ্গনেই, দুই জায়গাতেই যার রয়েছে অবাধ বিচরণ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫