গ্রীষ্মকালে বাইরে বের হলেই রোদের ঝলক, আর ঘরে ফিরলেও যদি থাকে বন্ধ ঘরের গুমোট ভাব- তবে প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া যেন কঠিনই হয়ে পড়ে। তবে ঘরসজ্জায় কিছু প্রাকৃতিক উপকরণ আর নান্দনিক ছোঁয়া দিয়ে চাইলেই ঘরটাকে বদলে ফেলতে পারেন এক শান্ত, শীতল ও স্টাইলিশ আশ্রয়ে। এই সময় ঘরের ভেতরে শীতল, প্রশান্ত ও শৈল্পিক পরিবেশ তৈরি করাটা কেবল বিলাসিতা নয়, বরং একান্ত প্রয়োজন। দাবদাহের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে এবং দৈনন্দিন জীবনে এক চিলতে স্বস্তি যোগ করতে ঘরসজ্জার কিছু বুদ্ধিদীপ্ত পরিবর্তন দারুণ কাজে দেয়।
হালকা রঙে ঠান্ডা আবহ
গরমকালে ঘরের দেওয়ালে ও আসবাবে হালকা রং বেছে নেওয়া খুব জরুরি। সাদা, অফ-হোয়াইট, মিন্ট, প্যাস্টেল ব্লু, লেমন ইয়েলো কিংবা হালকা সবুজ- এমন রংগুলো তাপ শোষণ কমায় এবং ঘরে এনে দেয় শীতল অনুভূতি। পর্দা, কুশন কাভার বা বিছানার চাদরে একরঙা বা হালকা ট্র্যাডিশনাল প্রিন্ট বেছে নিন। জামদানি মোটিফ বা নকশি কাঠের ছোঁয়া যুক্ত মিনিমাল ওয়ার্ক থাকলে আরো দারুণ লাগবে। সোফায় ও কুশনে ট্র্যাডিশনাল বুটিক ছাপযুক্ত কভার দিতে পারেন।
প্রাকৃতিক উপকরণে প্রাণ খুঁজে নিন
বাঁশ, কাঁথা, পাট, কাঠ- এসব প্রাকৃতিক উপকরণ গ্রীষ্মে ঘরকে করে তোলে আরামদায়ক এবং পরিবেশবান্ধব। ব্যবহার করতে পারেন পাটের তৈরি ম্যাট বা গালিচা, বাঁশের বা পাটের ঝুলন্ত ঝুড়ি, কাঠের তৈরি লাইট কাঠামো (কেইন বা বাঁশের শেড)।
বাতাস চলাচল আর প্রাকৃতিক আলো
এই গরমে ভেন্টিলেশন না থাকলে ঘর হয়ে ওঠে চুলার মতো। তাই জানালায় পাতলা কটন বা মসলিনের পর্দা ব্যবহার করুন, যাতে আলো প্রবেশ করতে পারে আবার সূর্যের তীব্রতা খানিকটা কমে যায়।
ঘরের সজ্জায় গাছ
গ্রীষ্মে ঘরে গাছ রাখার বিকল্প নেই। একদিকে যেমন এটি তাপমাত্রা কমায়, অন্যদিকে পরিবেশের সৌন্দর্য বাড়ায়। ঘর সাজাতে রাখতে পারেন মানি প্ল্যান্ট, আরেক্যরিয়া, পিস লিলি, স্নেক প্ল্যান্ট ইত্যাদি। ছাদে বা ব্যালকনিতে রাখুন তুলসী, লেমন গ্রাস, মেথি বা ধনিয়া- চোখ জুড়াবে, কাজেও লাগবে।
টিপস
তীব্র গরমে জানালায় একটি ভেজা তোয়ালে বা পাতলা সুতি কাপড় ঝুলিয়ে দিলে তা বাতাস ঠান্ডা করে ঘরে ঢুকতে সাহায্য করে, একটা প্রাকৃতিক ‘ইভাপোরেটিভ কুলার’-এর মতো কাজ করে।
গরমে বেশি আলো ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এলইডি ডিম লাইট ব্যবহার করুন এবং অপ্রয়োজনীয় আলো বন্ধ রাখুন।
দুপুরের গরমে বাইরের তাপ যাতে ঘরে ঢুকতে না পারে, সে জন্য জানালা ও পর্দা বন্ধ রাখুন। বিকেলের পর জানালা খুলে দিন, বাইরের ঠান্ডা হাওয়া তখন ঘর ঠান্ডা করবে।
একটি মাটির কলসি বা পাত্রে ঠান্ডা পানি বাতাসের নিচে রাখলে ঘরের বাতাসে ঠান্ডাভাব আসে। চাইলে এতে কয়েক ফোঁটা গোলাপজলও যোগ করতে পারেন।
একটি টেরাকোটা পট, একটি মাটির কলসি বা ছোট ফোয়ারা- এমন ছোট ছোট উপাদান গরমে প্রশান্তি এনে দেয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : সুবর্ণা মেহজাবীন ঘরসজ্জায় স্বস্তি আর শৈলীর মেলবন্ধন হালকা রঙে ঠান্ডা আবহ বাতাস চলাচল আর প্রাকৃতিক আলো
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh