আবদুল রাজাক গুর্নাহর সাক্ষাৎকার
উত্তর উপনিবেশিকতার মূল্য, আমার কাছে আকর্ষণীয়

মহিউদ্দীন মোহাম্মদ
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৩:৫১

আবদুল রাজাক গুর্নাহ
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার সৃজনশীল লেখকদের জন্য চূড়ান্ত চিত্তাকর্ষক বলে বিবেচিত। ২০২১-এ সবাইকে অবাক করে দিয়ে নোবেল জিতেছেন পূর্ব আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ার লেখক আবদুল রাজাক গুর্নাহ।
আবদুল রাজাক গুর্নাহ ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ভারত মহাসাগরের জাঞ্জিবার দ্বীপে বেড়ে ওঠেন। ১৯৬৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে শান্তিপূর্ণ মুক্তির পর জাঞ্জিবারে রক্তক্ষয়ী একটি বিপ্লব সংগঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট আবেদ কারুমের শাসনামলে আরব বংশোদ্ভূত নাগরিকদের ওপর নিপীড়ন ও গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটে। গুর্নাহ ভুক্তভোগী নৃগোষ্ঠীর অন্তর্গত। ১৮ বছর বয়সে গুর্নাহ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। ২১ বছর বয়সী শরণার্থী হিসেবে তিনি ইংল্যান্ডে ইংরেজিতে লিখতে শুরু করেন, যদিও কিসওয়াহিলি তার প্রথম ভাষা। গুর্নাহ সম্প্রতি অবসরের আগ পর্যন্ত ক্যান্টারবারির কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি এবং উত্তর-উপনিবেশিক সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন।
মূলত তিনি ওলে সোয়েঙ্কা, এনগো ওয়া থিওংগো এবং সালমান রুশদির মতো লেখকদের ওপর মনোনিবেশ করেছিলেন। তার এ পর্যন্ত ১০টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম উপন্যাস Memory of Departure প্রকাশিত হয়। ১৯৮৮ সালে প্রকাশ হয়Pilgrims Way, ১৯৯০ সালেDottie, ১৯৯৪ সালে Paradise, ১৯৯৬ তে Admiring Silence, ২০০১ সালে By the Sea, ২০০৫ সালে Desertion, ২০১১ সালে The Last Gift (২০১১), ২০১৭ সালে Gravel Heart ও ২০২০ সালে সর্বশেষ উপন্যাস প্রকাশিত হয় Afterlives. উত্তর ঔপনিবেশিক সংকলনের জন্য ২০১৯ সালে লেখকের এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুপমা মোহানী ও যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেয়া এম দত্ত।
প্রফেসর গুর্নাহ আপনার ‘বাই দ্য সি’তে অভিবাসন দৃশ্যে স্পষ্ট হয়েছে, অনেক উপন্যাস আশ্রয় প্রার্থনার শর্তে করা।Desertion-এ আমরা আশ্রয় বিষয়টি আরও সূক্ষ্মভাবে পাই, আমিন বিদেশে যখন তার ছোট ভাই রশিদকে নিজের মত করে চলতে, দুঃখবোধ ও গৃহমায়া না রাখার পরামর্শ দেন। কীভাবে আপনি উত্তর-ঔপনিবেশিক আকাক্সক্ষাকে পছন্দ হিসেবে না নিয়ে জবরদস্তি হিসেবে প্রদর্শন করেন, যদিও দেশত্যাগের বিষয়টি যৌক্তিভাবে অকার্যকরের ঝুঁকি থাকে? কীভাবে এটা বৈশ্বিক ব্যবস্থায় আপনার অভিবাসনের দর্শনের সঙ্গে যুক্ত?
‘বাই দ্য সি’-তে নানা পরিপ্রেক্ষিতে আশ্রয় বিষয়টি বিবৃত। সালেহ, ওমর, লতিফ, জান ও অ্যালেক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘটনা দ্বারা চালিত হয়। ‘ডিসারশন’ জনগণের পছন্দগুলো বা কমপক্ষে যা পছন্দ হিসেবে প্রদর্শিত সেই সম্পর্কিত। আমি মনে করি না আশ্রয়ের সঙ্গে এই সংকট হতাশায় ঘণীভূত। রশিদ চলে যেতে পছন্দ করে, সত্যিই চলে যাওয়ার জন্য আবেগপ্রবণ, এবং তার পরেই বুঝতে পারে, যে সে কী ছেড়ে দিয়েছে। আমিন নিজেকে বিশ্বস্ত হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং তা সে ত্যাগ করতে পারে না। একজন বিশ্বস্ত মানুষ হিসেবে রশিদকে অধ্যবসায় ও ভাইয়ের প্রয়োজনে বেড়ে ওঠার পরামর্শ নিজস্ব অনুভূতির অংশ। উভয় উপন্যাসে উপনিবেশিকতার পরিণাম প্রতিফলিত; আমি ধারণা করছি আপনি সেটাকে ‘একটি অসাম্য বিশ্বব্যবস্থা’ বলে বোঝাতে চাইছেন। উপনিবেশিকতা জীবনে নেমে আসা সত্ত্বেও মানুষ কীভাবে নিজের পথ ও নিজেকে টিকিয়ে রাখে এ দুটি সেই বিষয়ের উপন্যাস।
আপনার উপন্যাসগুলোকে ‘বিশ্বসাহিত্য’ না বলে যদি ‘মহাসাগরীয় সাহিত্য’ বলি তাহলে কি কষ্ট পাবেন? মহাসাগরীয় সাহিত্য বোঝাতে বিশ্বসাহিত্য ব্যাপারটা অনুপযুক্ত-এমনটিই কি মনে করেন?
আমি অনুমান করছি ‘মহাসাগরীয় উপন্যাস’ দ্বারা আপনি উপকূলীয় সংস্কৃতির মধ্যে সংযোগ বোঝাতে চান; যা আমি আমার লেখায় বারংবার উল্লেখ করেছি। আমি নিশ্চিত নই যে এটি একটি ক্যাটাগরি বা ফর্ম হিসেবে যুক্তিযুক্ত, সম্ভবত এটি একটি সাংগঠনিক বিবরণ। আমি যা বলতে চাইছি তা হচ্ছে, আখ্যানের যৌক্তিকতা যদি সংযোগ দেখতে চায়, তাহলে ওই শব্দটি কাজ করবে, তাহলে এর ওজন সংস্কৃতি বা অবস্থানের পরিবর্তে আখ্যানের ফোকাসে সত্যি হবে। ‘বিশ্বসাহিত্য’ এই বোধ থেকে আমরা বের হতে পারি না। তবে দরকার তুলনামূলক সাহিত্যের প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ইউরোপীয় ঐতিহ্যের বাইরে স্থাপন করা। ‘বিশ্বের দক্ষিণ থেকে বিশ্বসাহিত্য’ আমি সচেতনভাবে এর প্রতি আগ্রহ রাখি। আমি যখন এই আবেগের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছি তখন আমি নিশ্চিত না যে কেন আবার ‘বিশ্বসাহিত্য’ টার্মে ফিরে আসা লাগবে।
আপনার উপন্যাসগুলো হাস্যরসশূন্য, খুশির মুহূর্তে কিংবা একাকীত্বে কৌতুকময়তা অনুপস্থিত। বিষয়টি আপনি মানেন কি না?
আপনি যে হাস্যরসের অনুপস্থিতির কথা বলছেন, তার সঙ্গে আমি একমত নই। নিঃসন্দেহে কমেডি সম্পর্কে আপনার আলাদা ধারণা রয়েছে। আমি মনে করি ইভেন্টের পাশাপাশি ভাষার ক্ষেত্রেও কমেডি আছে। মানুষের অস্তিত্বে যন্ত্রণা ও নিঃসঙ্গতার ছায়া রয়েছে।
আপনার সাম্প্রতিক উপন্যাস, Gravel Heart-এর পটভূমিতে আপনি সম্পর্ক ও পারিবারিক ইতিহাসের প্রতি মনোনিবেশ করার সময় সমুদ্র প্রায় বিবর্ণ হয়ে যায়। পিতা মাসুদের সঙ্গে সেলিমের সম্পর্ক উপন্যাসের দিক নির্দেশ করে। তাছাড়া, সেলিম সংক্ষিপ্তভাবে বাড়ি ফিরে আসে। আপনার এই পছন্দ অন্য বেশিরভাগ চরিত্রকে আড়াল করে দেয়। যে দুটি বিষয় আপনার সমস্ত উপন্যাসে ক্রমাগত বিকাশ হয়, আপনি কীভাবে আপনার সে ইতিহাসকে সমুদ্রের ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেন?
সেলিম তার বাবার সঙ্গে পুনরায় সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য ফিরে আসে, কিন্তু ফিরে যাওয়ার ব্যাপারটি অন্যদের জন্য বন্ধ নয় যা আমি লিখেছি। ‘অ্যাডমিরিং সাইলেন্স’-এ বর্ণনাকারী ফিরে আসে। রশিদ দেশত্যাগের পর আবার ফেরার কথা ভাবছে। তাদের অভিজ্ঞতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ছেড়ে যাওয়া বা জীবনে ফাটল তা তাদের ফিরে যাওয়াকে জটিল করে তোলে। আইনগত কারণে বা সহিংসতার শঙ্কায় আশ্রয় প্রার্থীদের প্রত্যাবর্তন সবসময় সম্ভব হয় না। আমি যেটা ‘গ্রেভাল হার্ট’-এ বলেছি, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পন্থা ক্ষমতা ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বিনষ্টের।
আন্তরিকভাবে বলতে কী আপনার লেখা আমাকে কনরাডের কথা মনে করিয়ে দেয়। যিনি আসলেই তার সমস্ত কাজের মধ্যে একক গল্প বলতে চেয়েছিলেন। এবং গল্পের পর গল্পে তিনি সেই একক গল্পকে পরিমার্জিত ও সম্মানিত করেছিলেন। একটি গল্প এমন-ভুতুড়ে মানুষ তার অতীত থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। প্লটটি কেবল কনরাডের রচনাসমূহের সঙ্গে সম্পর্কিত; কীভাবে এবং কেমন করে যেন পাঠককে পুরোপুরি দখল করে নেয়। আপনার উপন্যাসগুলোও আমাকে এই বিবেচনার দিকে নির্দেশ করে। সম্ভবত আপনি তার গল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সূক্ষ্মতা, বিশ্লেষণ করে লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত পরিমার্জনা করেন। আপনি এ ধরনের চরিত্রায়ণে খুশি হন? আপনার বর্ণনামূলক মনোযোগ কীভাবে আপনার উপন্যাসগুলোতে বিকশিত হয়েছে, আপনি তার ব্যাখ্যা করতে পারেন?
আমি জানি না ‘একটি ভুতুড়ে কাহিনী’ আছে কিনা, যা আমি পরিমার্জন করতে চাই; আমি নিশ্চিত যে একাধিক আছে। আমি উপরে থাকা বা থাকার জন্য মানুষ যে পছন্দগুলো করে তা উল্লেখ করেছি। এটা নিয়ে বারবার লিখেছি, ইউরোপে আসার সময় বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা সম্পর্কেও। তাই আমি যা লিখছি তার একটি ফোকাস আছে- অন্তর্গত, ফেটে যাওয়া, স্থানচ্যুতি। ইতিমধ্যে সম্ভবত এটি একাধিক ফোকাস, এবং ওই তিনটির মধ্যে, ক্ষতি ও বেদনা আর পুনরুদ্ধারের সঙ্গে অনেক সমস্যা রয়েছে। আমি সেই সম্পদ সম্পর্কে লিখি যা দিয়ে মানুষ এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে জড়িত।
আপনি কিছু প্রবন্ধের লেখক হতে গিয়ে আপনার যাত্রা কীভাবে জটিল হয়েছে সে সম্পর্কে বলেছেন। উদাহরণস্বরূপ ‘রাইটিং অ্যান্ড প্লেস’-এ, আপনি কীভাবে লেখার বিষয়টি ‘পরিকল্পনার পরিপূর্ণতার পরিবর্তে হোঁচট খেয়েছিলেন’ তা উল্লেখ করেছেন। আপনি কীভাবে বসত ছেড়ে ইংল্যান্ডে নতুন ঠিকানা গাড়েন সে সম্পর্কে বলেন। একটি নতুন দেশে আপনার প্রথম বছরের ‘ওজনহীন অস্তিত্ব’-এর বিপরীতে জাঞ্জিবারের একটি উজ্জ্বল স্মৃতির অনুভূতি থেকে লিখতে শুরু করেন। ‘পড়া শেখা’তে আপনি লিখেছেন কীভাবে মালিন্দীতে আপনার শৈশবের পরস্পরবিরোধী সাংস্কৃতিক প্রভাবগুলো আপনার সামগ্রিক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করেছিল। যা সক্রিয়ভাবে নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং জটিলতাগুলোকে পার করতে হয়েছিল। আপনি ইতিমধ্যে যার অর্থ লেখক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার আগে লিখেছেন। এটি কি এখনও আপনার লেখক অস্তিত্বের মধ্যে পুনর্বিবেচিত আকারে সংশোধিত হয়ে রয়েছে? এই জটিল ভ্রমণে আপনার চরিত্রগুলো যে জটিল যাত্রায় চলেছে তার মধ্যে কিছু ভাষান্তর করে কিনা, সে সম্পর্কে আপনি কি আমাদের আরও কিছু বলতে পারেন?
এটি পুনর্বিবেচনায় সংশোধন করা হয়নি। আপনি যাকে ‘লেখকের প্রতি আমার যাত্রা’ বলছেন, এখনো মনে হচ্ছে এটি তার একটি পর্যাপ্ত বিবরণ। সম্ভবত আমি এই বাক্যাংশটি ব্যবহার করতাম না কিন্তু ‘লেখার আগমনের প্রক্রিয়া’র মত কিছু। আমি অভিজ্ঞতা, জীবন ও সংস্কৃতির দ্বান্দ্বিক আন্তঃসম্পর্ক প্রদর্শনের উপায় হিসেবে জটিল ভ্রমণ সম্পর্কে লিখি।
আপনি আপনার সর্বশেষ উপন্যাস, ‘গ্র্যাভেল হার্ট’ সম্পর্কে একটু বলবেন? এপিগ্রাফটি আবু সাইদ আহমদ ইবনে ইসা-আল-খারাজের একটি উদ্ধৃতি: ‘ভালোবাসার সূচনা হলো আশীর্বাদ স্মরণ করা।’ কেন আপনি এটি দিয়ে শুরুতেই বেছে নিয়েছেন? এটি কি কোনোভাবে শেক্সপিয়ারের Measure for Measure সঙ্গে সম্পর্কিত, যেখান থেকে উপন্যাসের শিরোনামটি এসেছে? আপনি কীভাবে আপনার কাজের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা কল্পনা করেন?
আমার কাছে মনে হয় সূত্রলিপি একটি উপন্যাসে নিজের জন্য কথা বলে; যার একটি কেন্দ্রীয় ধারণা হিসেবে স্মৃতি রয়েছে। আমি যে পরামর্শ দিচ্ছি তার রহস্যময় আবশ্যকতা পছন্দ করেছি, যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করলে এর অর্থ সংকুচিত হবে। Measure for Measure কিছু ইন্দ্রিয়ের মধ্যে একটি রহস্যময় খেলা, তবে সর্বোপরি এটি আত্মতৃপ্তির জন্য ধার্মিকতার একটি অলঙ্কারের অপব্যবহার সম্পর্কিত। সেই অর্থে, এটি সুফীর উপদেশের অন্য দিক, উপন্যাসটি যে মুদ্রার অন্য দিকে ঘুরছে। আমি উপন্যাসগুলোতে ঘনিষ্ঠতাকে কল্পনা করি, যেমন বাগদান ও আলোচনার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
আপনার উপন্যাসে জাঞ্জিবার বিপ্লব বা তার পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে আপনি যখন বলছেন, তখন আপনি কি কোনো নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক গবেষণা করেন? অথবা আপনি কি স্মৃতি থেকে লিখছেন, অথবা অতীতের মতো ঘটনাগুলোর অনুভূতি থেকে? আপনি কি বলবেন যে আপনার উপন্যাসগুলো পূর্ব আফ্রিকান জীবনের বাস্তব চিত্রের পরিবর্তীত ছাপ?
আমার উপন্যাসের প্রচ্ছদটি সারাজীবন আমার জন্য গভীরভাবে আকর্ষণীয় ছিল এবং তাই আমি সবসময় উপাদান নিয়ে গবেষণা করছি। নির্দিষ্ট মুহূর্তগুলো সম্পর্কে সর্বদা চেক করার বা আরো বিশদে পড়ার প্রয়োজন রয়েছে, তবে আমি যা জানি এবং যত্ন করে সে সম্পর্কে লিখি। আমি নিশ্চিত নই যে আপনি কেন ‘বাস্তবসম্মত প্রতিকৃতির পরিবর্তে ছাপ’ রাখেন যেন সেগুলো পোলারিটি বা পরস্পরবিরোধী প্রক্রিয়া। আমি কল্পনা করি, যে কল্পনা অনিবার্যভাবে উভয়ই করে।
আপনি পোস্ট-কলোনিয়াল স্টাডিজের সঙ্গে আপনার কাজটি কীভাবে দেখেন? কোনোভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কাজ আপনার সৃজনশীল কাজের মধ্যে ছেদ টানে অথবা চ্যালেঞ্জ করে? নাইপল বলেছিলেন- যে তিনি নিজেকে একজন পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন; কারণ অন্য কোনো পেশা তার লেখকসত্তাকে হত্যা করবে। তাই আমি অবাক হয়েছি, একসঙ্গে লেখক ও একাডেমিক এ দুটি জায়গায় কীভাবে ভূমিকা পালন করেন।
একটি বিতর্কিত ধারণা হিসাবে উত্তর উপনিবেশিকতার মূল্য আমার কাছে আকর্ষণীয়। কারণ এটি আমাকে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ইতিহাসের লেখার মধ্যে সাধারণ ভিত্তি দেখতে দেয়। প্রেক্ষাপটে পর্যাপ্ত আগ্রহ ছাড়াই অনুশীলন করা হলে এটি মনে হতে পারে তার চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজনীয় পদ্ধতি। আমি একাডেমিক ও লেখকের ভূমিকায় কোন দ্বন্দ্ব খুঁজে পাইনি। এ দুটি কাজ অন্য কার্যকলাপ থেকে একেবারে ভিন্ন। পরস্পরে উপকারী হয়ে উঠতে পারে।
ভাষান্তর : মহিউদ্দীন মোহাম্মদ