Logo
×

Follow Us

সাক্ষাৎকার

উচ্চশিক্ষায় গবেষণার বিকল্প নেই: মো. আরিফুল হক শুহান

Icon

জাফর খান

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৫

উচ্চশিক্ষায় গবেষণার বিকল্প নেই: মো. আরিফুল হক শুহান

ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুল হক শুহান। ছবি: সংগৃহীত

‘বুয়েটে পড়াকালে একটা ভাবনা ছিল, দেশের মানুষের কষ্টের টাকায় লেখাপড়া করার পর কীভাবে দেশের কল্যাণে কাজ করা যায়। আর এ ভাবনাই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। কখনো ভাবিনি বিদেশে পাড়ি জমাব।’ বলছিলাম বিশেষ উপলব্ধিসম্পন্ন এমন একজন উদ্যোক্তার কথা যিনি বিদেশের বিলাসবহুল জীবনের দিকে না তাকিয়ে দেশেই কষ্টে আর পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা বিশ্বোপযোগী পদক্ষেপ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে কাজ করছেন। সাম্প্রতিক দেশকালের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক জাফর খানকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শিক্ষা ক্ষেত্রের গবেষণাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুল হক শুহান।

চাকরির পেছনে না ছুটে কেন উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করলেন? বিশেষ করে লাভজনক ব্যবসার দিকে না গিয়ে শিক্ষার মতো অলাভজনক খাতে নিজেকে সোপর্দ করলেন কেন? 
এর উত্তর খুঁজতে আমাকে পেছনে যেতে হবে। তখন আমি বুয়েটে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আমরা তিন বন্ধু ঠিক করলাম চাকরির পেছনে না ছুটে কীভাবে দেশের জন্য কিছু করা যায়। কীভাবে নিজেদের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। ছিল না ব্যবসার পূর্ব অভিজ্ঞতা। জানতামও না ব্যবসার স্টার্টআপের মূল উপাদানগুলো কী! বুয়েট থেকে পাসের পর তিন বছর চাকরি করি। পাশাপাশি আমরা তিনজনই ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজে একটা নতুন টেকনোলজির ওপর কোর্স পরিচালনা করতাম। এর দুই বছরের মধ্যে দেখা হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত একজনের সঙ্গে, যাকে আমরা মনে মনে খুঁজছিলাম। তিনি মূলত বিনিয়োগকারী হিসেবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এর মধ্যে আরও সমমনা মানুষের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়। সে সুবাদে ২০১১ সালে রিভেরি পাওয়ার অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করি। সেখান থেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রায় এক হাজার লোক কর্মরত রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩৫০ জন প্রকৌশলী। 

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন কীভাবে? 
আমাদের প্রতিষ্ঠানে যে কাজগুলো করা হয় তা অত্যন্ত জটিল। পরে প্রতিষ্ঠানের একটা বিষয় খেয়াল করলাম, এখানে যারা কাজ করছেন তাদের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাস করা। শুরুর দিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন বেতন কাঠামো, তেমনটা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের ছিল না। বাস্তবে দেখা গেল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সর্বোচ্চ সার্ভিস দিচ্ছেন। সেখান থেকেই ভাবনা এলো- এ সেক্টরকে কীভাবে যুগোপযোগী করে গড়া যায়। আর শিক্ষাজীবনে করা অঙ্গীকার যেন এখানেই পরিপূর্ণতা পাবে; সে থেকেই এমন উদ্যোগে জড়ালাম নিজেকে। 

শুরুটা কীভাবে ছিল?
২০২০ সালে আমাদের কাছে প্রস্তাব আসে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢেলে সাজাতে। তখন ক্যাম্পাস ছিল বাড্ডায়। যারা মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তারা ফান্ডিংয়ের অভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় তারা আমাদেরকে ভরসা করে এটিকে সামনে এগিয়ে নিতে গুরুদায়িত্ব তুলে দেন। আর তখন এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলাম। পাঁচটি ফ্যাকাল্টি নিয়ে যাত্রা শুরু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত হই। 

শুরুর পর কেমন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন? 
একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেই সেটিকে ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা দেওয়া যাবে না। এর জন্য লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়। দরকার সহনশীলতা, সৃজনীশক্তি, যুগোপযোগী ধ্যানধারণা। আমার বিশ্বাস এসবের সমন্বয়েই কাজ শুরু আমাদের। স্বল্প সময়ে যে সফলতার মুখ আমরা দেখছি তা অব্যাহত থাকবে এবং সর্বোচ্চ মানের অন্যতম একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে সে প্রত্যয়েই কাজ চলছে। প্রথমদিকে সিলেবাস, ভালো শিক্ষক, ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন- এসব সংস্কার করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়। অদম্য পথ চলায় আমরা সাহস পেয়েছি ইউজিসির কাছ থেকে। মনোযোগ ছিল মান উন্নয়নে যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে শিক্ষার্থীদের উৎকর্ষ সাধন করা যায়। ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড উদ্যোক্তা মনোভাব সম্পন্ন প্রজন্ম গড়াই মূল লক্ষ্য আমাদের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও সুবিধাগুলো নিয়ে যদি বলেন। বর্তমানে মোট ডিসিপ্লিন ও শিক্ষার্থী সংখ্যা? ভবিষ্যতে সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা কী? শিক্ষার্থীরা বাড়তি কী সুবিধা পাচ্ছে? 
কোনো বিভাগ খুলে দিলেই মান ধরে রাখা যায় না। আমার বিশ্বাস বর্তমানে যে কয়টা আছে সেগুলোকে পূর্ণ স্ট্যান্ডার্ডে পৌঁছে দিয়ে পরে নতুন ডিসিপ্লিন খোলা হলে যে মানের চিন্তা থেকে আমাদের পথচলা শুরু তা ধরে রাখতে পারব। আপাতত পাঁচটি ডিসিপ্লিন আছে। তবে প্রোগ্রামিং ও ডেটাবেস সাইডে ফোকাস রয়েছে। আন্তঃবিভাগীয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়াও বিশ্বের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সঙ্গে চুক্তি আছে যাতে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা ডেটাবেসের কোর্স শেষে সাড়ে ৬ হাজার ডলার মূল্যের সার্টিফিকেটটি বিনামূল্যে পেতে পারেন। বর্তমানে আমাদের তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। শুরুর সময় ভাবনা ছিল- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জায়গা সীমিত, হাতেগোনা দু-একটা ছাড়া কেউ এক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে না। তাই রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজের ওপরই মূল ফোকাস ছিল। যাতে শিক্ষার সঙ্গে সফট স্কিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবন শুরু করতে পারে। 

ব্যতিক্রমী হিসেবে কোনো বৈশিষ্ট্য আছে? 
এখানে একটি সেমিস্টারে একজন শিক্ষার্থীকে ১০টি প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। ফলে ৮ সেমিস্টারে দিচ্ছে ৮০টি প্রেজেন্টেশন। এতে তাদের কথা বলার দক্ষতার সঙ্গে ইংরেজি ভাষাসহ অন্যান্য দক্ষতাও বাড়ছে। এছাড়াও সব ক্লাসের ভিডিও ইউটিউবের মাধ্যমে সারা দুনিয়া দেখছে। ফলে একজন শিক্ষক যখন ক্লাস নেন তখন তিনিও খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়ে আসেন। এক সেমিস্টারে প্রায় ২০০ কোর্স থাকে, যা ম্যানুয়েলি মনিটরিং কষ্টসাধ্য। তাই এ ব্যবস্থা করেছি, ফলে বিগত দিনের ক্লাসের সঙ্গে পরের ক্লাসগুলোর কোয়ালিটির তুলনা সহজ। 

মূল উদ্দেশ্য যেহেতু গবেষণা সেল প্রতিষ্ঠার, সেক্ষেত্রে কতটা প্রস্ততি রয়েছে? 
গবেষণার জন্য অবশ্যই ভালো তহবিল দরকার। যদি বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকান, দেখবেন সেখানে গবেষণার জন্য বড় তহবিল থাকে। কোরিয়ার স্যামসাং ভার্সিটি বা যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড সবখানেই সরকারের পাশাপাশি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতে তহবিলের জোগান দেয়। তবে এই কালচারে উন্নতির জন্য সময় লাগবে। 

সরকারের পক্ষ হতেও সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার বিষয়টি জোর দেওয়া হচ্ছে, সেক্ষেত্রে প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে আসছে না কেন? 
আমি বলব- মাইন্ড সেটের ঘাটতি। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের বিশ্ব উপযোগী করে গড়ে তুলতে নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছি। এটাকে গবেষণার প্রাথমিক সোপান বলতে পারেন। এক বছরে বেশ কিছু প্রতিযোগিতা- ইনোভেশন ফেয়ারে প্রথম স্থান, রোবটিকস প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ও বুয়েট রোবটিকস কম্পিটিশনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় হয়েছে। আমাদের পুরো বিনিয়োগই শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর। এর সুফল আমরা পাচ্ছি। আমরাই প্রথম আন্ডার গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য একটি রিসার্চ ল্যাব প্রস্তুত করেছি।

ভারতের করপোরেট সেক্টর ও একাডেমিশিয়ানের মধ্যে যোগসূত্র আছে, সেখানে একজন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও করপোরেটে চাকরি করছেন। কিন্তু আমাদের দেশে পিএইচডি মানেই ধরে নেওয়া হয় উনি শুধু শিক্ষাক্ষেত্রের জন্য উপযোগী। করপোরেট ও একাডেমিশিয়ান ব্লেন্ডিং নেই কেন?
প্রথমত এটা ফুল ইকোসিস্টেম, বিশ্ববিদ্যালয় বা করপোরেট একা দায়ী নয়। আমাদের দেশে কয়টা বড় করপোরেট আছে? মূলত পারিবারিক সূত্রে মালিক হলে সেখানে মেধাবীদের জায়গা নেই। করপোরেট সংস্কৃতি বলতে যা বোঝায় সেক্ষেত্রে ভারত এগিয়ে। আবার আমরাও এমন কাউকে করপোরেটে ডেলিভারি দিতে পারিনি যেখানে বোঝানো যায়- আপনি ছাড়াও প্রতিষ্ঠান মেধাবীদের মাধ্যমে চলবে। দ্বিতীয়ত যিনি সিমেন্ট, বস্ত্র, আবাসন ব্যবসায়ী তিনিই অস্ত্র ব্যবসায়ী। একাই সব। স্ট্রাকচারাল সিস্টেমের ঘাটতি। ইনোভেটিভ কিছু নেই। তবে আশার কথা, সরকার ৯৯টি ইকোনমিক জোন নিচ্ছে, এতে ছাত্ররা ভালো সুযোগ পাবে আশা। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত সেখানে ছাত্র-শিক্ষক সবাই কাজ করবেন। যেখানে গবেষণা থাকবে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই। প্রয়োজনেই করপোরেটের সঙ্গে গবেষণার একটা ব্লেন্ডিং হবে। আমাদের এখানে অনেক উদ্যোক্তাও ক্লাস নেন। আমরা সেই ব্লেন্ডিং করছি। কারণ একাডেমিক ও করপোরেট একে অপরের পরিপূরক। 

দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কি আরও বাড়ানো দরকার?
না, আমি মনে করি না। বর্তমানে ১০৯টি রয়েছে, এগুলোর মান আগে নিশ্চিত করা জরুরি। মাত্র ২০ ভাগ তাদের মান উন্নয়নে সফল হয়েছে। এ মুহূর্তে আর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দরকার নেই। 

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি বেশি রাখা হয়- এ বিষয়ে কী বলবেন? নিম্নমধ্যবিত্তের জন্য আপনাদের ভাবনা কী?
ভালো লাগে পুরনো পোশাক পরে আমার অফিসে কেউ যখন তার স্বপ্ন পূরণে আসেন। আপনাকে কিছু আগে যিনি চা-বিস্কুট দিয়েছেন তিনি আমাদের ছাত্র। নিম্নবিত্তদের জন্য আমাদের কর্মসংস্থান রয়েছে। যাতে তারা নিজের টিউশন জোগাড় করতে পারেন। মাত্র ২ থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেলেও এমন ফি রাখার চিন্তা করছি আমি। তবে ভালো শিক্ষক, শিক্ষার মান বজায় রাখতে গেলে টিউশন ফি একটা ইস্যু। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধা দেওয়া জরুরি। টিউশন ফি কম দিয়ে শিক্ষার মান খারাপ করা কল্যাণকর নয়। 

আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন এক কথায়... 
আমাদের একটাই স্বপ্ন, দেখতে চাই বিখ্যাত সব করপোরেট ব্যক্তিত্ব বসে রয়েছেন কখন ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের শিক্ষার্থীরা তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে বের হবেন আর তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য মুখিয়ে থাকবেন। 

ধন্যবাদ আপনাকে। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫