Logo
×

Follow Us

সাক্ষাৎকার

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে: তৌহিদ হোসেন

Icon

এম ডি হোসাইন

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৯

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে: তৌহিদ হোসেন

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। তিনি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি ২০০০ পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৬ থেকে ৮ জুলাই ২০০৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব। জুলাই ২০০৯ থেকে জুলাই ২০১২ পর্যন্ত, তৌহিদ হোসেন ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জুন ২০১২ সালে তৌহিদ হোসেন দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন তিনি। ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ সমসাময়িক ইস্যুতে সাম্প্রতিক দেশকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম ডি হোসাইন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কটা কোন পর্যায়ে আছে? 

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে ৫ আগস্টের পর যে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে, তা মেনে নিয়ে দুই দেশকে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে। আমার মনে হয়, জটিলতা বাড়ছে। দুই দেশের সম্পর্ক তো বহুমাত্রিক ও বহুমুখী। বর্তমানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে অনেকটা একপক্ষীয়। 

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কারণে দুই দেশের অর্থনীতি কি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?

সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কারণে দুই দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সার্কের কার্যক্রম কি শুরু করা দরকার?

ব‍্যাবসায়িক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে সার্কের কার্যক্রম শুরু করা দরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চান সার্কের কার্যক্রম শুরু হোক। পাকিস্তান ও ভারতের রিজার্ভেশনের কারণে আঞ্চলিক সহযোগিতা ছিল না। প্রতি বছর সামিট হওয়ার কথা ছিল। রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে না। সার্কের মাধ্যমে সেটা করা যেতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি কেমন হচ্ছে?

আমরা বিদ্যুৎ আমদানি করছি, ডিজেল আমদানি করছি। ভারত থেকে চাল, পেঁয়াজ, আলুও আসছে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে না। নিকট প্রতিবেশী দেশ হিসেবে দুই দেশের সম্পর্ক রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক। আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধনটাও দীর্ঘদিনের। তৃতীয় অনেক দেশের ভিসার জন্য বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীকে দিল্লি যেতে হয়। গত ১৫ বছর ভারত সহজে ভিসা দিত। গত আগস্ট থেকে ভিসা খুব সীমিত করা হয়েছে। ভিসা সহজ করা ভারতের সদিচ্ছার প্রথম ধাপ হতে পারে।

ভারত কি ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে?

বাংলাদেশিদের জন্য ভারত ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্র । 

দুই দেশের টানাপোড়েনটা বাড়ল কেন?

৫ আগস্টের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতা তারা মানতে পারেনি। এ জন্য নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমি মনে করি, সমস্যা সমাধানে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে পরিস্থিতিটা যেন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। দুই দেশের মধ্যে যেসব সমস্যা আছে, কূটনৈতিকভাবেই সমাধান করতে হবে। বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তার আলোকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনপরিসরে উত্তেজনা তৈরি করা যাবে না। সাম্প্রতিক কিছু কিছু ঘটনা তো পরিস্থিতি আরো নাজুক করে তুলেছে। যেমন কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে বিজেপির সমর্থকরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছেন। এটি উদ্বেগজনক ঘটনা। প্রথম কথা হলো যেকোনো দেশের মিশন ও তার কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব স্বাগতিক দেশের। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঘটনার প্রতিবাদ করার পাশাপাশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আমরা আশা করব, এ বিষয়ে ভারত যা যা করণীয়, সেটা করবে। প্রতিবেশী হিসেবে আমরা কেউ কাউকে অগ্রাহ্য করতে পারি না। আমাদেরও যেমন ভারতের প্রয়োজন আছে, তেমনি ভারতেরও বাংলাদেশের প্রয়োজন আছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে ভারতকে অনুরোধ করা হবে কি? 

সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনা বিভিন্ন কথাবার্তা বলে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন এবং বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ভারতকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫