Logo
×

Follow Us

সাক্ষাৎকার

জনগণের কল্যাণ করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

Icon

এম ডি হোসাইন

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৮

জনগণের কল্যাণ করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও একজন পরিবেশবিদ।

দেশের পরিবেশ সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০৯ সালে তিনি পরিবেশের নোবেল খ্যাত মর্যাদাপূর্ণ ‘গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ’ অর্জন করেন। টাইম ম্যাগাজিন তাকে ‘ফোরটি এনভায়রনমেন্টাল হিরোজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ এর একজন হিসেবে মনোনীত করে। বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষা করে মানুষের মর্যাদা ও জীবনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অসামান্য নেতৃত্ব, কঠোর পরিশ্রমী দক্ষতা এবং আপসহীন সাহসের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তিনি এশিয়ার নোবেল খ্যাত মর্যাদাপূর্ণ ‘র‌্যামন ম্যাগসেসে’ পুরস্কারে ভূষিত হন। অন্তর্বর্তী সরকারের চ্যালেঞ্জ, অগ্রাধিকার ও পরিবেশ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সাম্প্রতিক দেশকালের  সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম ডি হোসাইন।

অন্তর্বর্তী সরকার কোন বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে?

অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি প্রধান অগ্রাধিকারকে গুরুত্ব দিচ্ছে- বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। বিচার প্রতিষ্ঠা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, যাতে অতীতের অন্যায়ের জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়। আগের দমনমূলক শাসনের সময় যারা নিহত, আহত বা অন্ধ হয়ে গেছেন, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সংস্কার নিয়ে জনগণের মধ্যে তাড়াহুড়ো থাকলেও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে সুসংগঠিত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন। প্রক্রিয়া সঠিক না হলে কাক্সিক্ষত ফলও ন্যায়সংগত হবে না। এ ছাড়া সরকার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান নয়, কাঠামোগত সংস্কারও জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া এ সংস্কার কার্যকর হবে না। সরকারের সংস্কার পরিকল্পনায় খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলছে এবং তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আলোচনার নতুন ধাপ শুরু হয়েছে। ৫৩ বছরে আমাদের জনগণ বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। তবে এবারের পরিবর্তন ছিল ব্যতিক্রম। রাজনৈতিক প্রভাব বা বাহ্যিক চাপ ছাড়াই তরুণদের উদ্যোগে এই পরিবর্তন এসেছে।

সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ কী?

অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখা, জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা ও আর্থিক খাতের সংকট সামলানো সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে একটি দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা পেয়েছে, কিন্তু জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়া ও আন্দোলন নিয়ে আপনার ধারণা কী? 

গত ছয় মাসে আমরা ১৮০টি আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবিলা করেছি। প্রচলিত পুলিশি কৌশল ব্যবহার না করে ধৈর্য দেখিয়েছি, যা হয়তো একদিন স্বীকৃতি পাবে। আমাদের সামনে আরেকটি সুযোগ নেই। বাংলাদেশ বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়তে পারে না। এবার সঠিক পথেই হাঁটতে হবে। সংস্কারের চাপ যেমন আছে, তেমনি দ্রুততম সময়ে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বও আমাদের কাঁধে।

সরকার কি সব ধরনের একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করেছে?

সরকার সব ধরনের একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করেনি। এ খবর গুজব এবং ভিত্তিহীন। কারণ সরকার একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেনি, তবে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করছে, যাতে দেশীয় উদ্যোক্তারা নিরাপদ বিকল্প তৈরি করতে পারেন। যতদিন না একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়, ততদিন ধাপে ধাপে এ থেকে সরে আসতে হবে।

প্লাস্টিক নিষিদ্ধ নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী?

এ জন্য একটি সমন্বিত পরিকল্পনা দরকার। প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণ একমাত্র সমাধান নয়। বরং ধাপে ধাপে ব্যবহার বন্ধ করা, পুনর্ব্যবহার ও পুনর্ব্যবস্থাপনা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ফিনল্যান্ড সরকার অত্যাধুনিক পুনর্ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপনে আমাদের সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং আমরা শিগগিরই তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। ২০৩০ সালের আগেই একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে একটি সময় সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫