Logo
×

Follow Us

সাক্ষাৎকার

এক বছরের মধ্যে আর্থিক সংকট কাটানোর আশায় বাফুফে

Icon

হিমু আক্তার

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১৫:১৮

এক বছরের মধ্যে আর্থিক সংকট কাটানোর আশায় বাফুফে

আর্থিক সংকট থেকে উত্তরণসহ দেশের ফুটবলের নানা সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছেন নাসের শাহরিয়ার জাহেদী

আগের কমিটির অধীনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আর্থিক সংকটের খবর বারবার শিরোনাম হয়েছে। তার ওপর যোগ হয়েছিল ফিফার আর্থিক নিষেধাজ্ঞা। দুই সংকটকে সামনে রেখে দায়িত্ব নেয় নতুন কমিটি।

গত অক্টোবরে সভাপতি তাবিথ আওয়ালের নেতৃত্বে নতুন কমিটি মাস কয়েকের মধ্যে দৃশ্যপট অনেকাংশে বদলে দিয়েছে। ফুটবল জায়গা করে নিয়েছে ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়ে। উঠে গেছে ফিফার নিষেধাজ্ঞাও। বাকি সংকটও আগামী ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে কাটিয়ে উঠবেন মনে করেন বাফুফের সহ-সভাপতি মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।

দেশকাল নিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আর্থিক সংকট থেকে উত্তরণসহ দেশের ফুটবলের নানা সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন বাফুফের গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির এই চেয়ারম্যান। শুক্রবার প্রকাশিত হলো সেই সাক্ষাৎকারের শেষ পর্ব।

বাফুফের আগের কমিটি নানা সংকটে ছিল। এখনকার অবস্থানকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটি খুবই ভালো হয়েছে। আমাদের ভেতর পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই ভালো। সভাপতি তাবিথ আউয়াল থেকে শুরু করে আমরা যারা কমিটিতে রয়েছি সবাই যে যার জায়গা থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমি গত কয়েক মাসে বেশ পরিবর্তন দেখছি। এই টিমওয়ার্ক আমার খুব ভালো লাগছে।

পূর্ববর্তী কমিটির রেখে যাওয়া আর্থিক সংকট কতটা নিরসন হয়েছে? নতুন কমিটি কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে?

আমাদের বেশ খানিকটা আর্থিক দায় ঘাড়ে নিয়ে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। কীভাবে সেটাতে ভারসাম্য বজায় রাখা যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি। আপনারা জানেন, প্রায় চার বছরের মতো ফিফার একটি আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ছিল আমাদের ওপর, যেটা মাস দুয়েক আগে প্রত্যাহার করা হয়। যার ফলে ফিফার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও ভালো হয়েছে। তারা সহযোগিতা করছে। আশা করছি, আগামী ছয় মাস কিংবা এক বছরের মধ্যে এই আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।

ডেভেলপমেন্ট কমিটিতে সাত মাসে অনেক কাজ উপহার দিয়েছেন। বাকি সময়ের জন্য আপনার কর্মপরিকল্পনা কী?

ডেভেলপমেন্ট কমিটি থেকে এখনো তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বয়সভিত্তিক ফুটবলকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কদিন আগে অনূর্ধ্ব-১৯ দল যশোরে ক্যাম্প করল। অক্টোবরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ আছে। নভেম্বরে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ আছে। এগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে। পাশাপাশি স্কুল ফুটবল নিয়ে আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। কীভাবে স্কুল ফুটবলকে জাগ্রত করা যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। এই টুর্নামেন্ট আমরা বছরব্যাপী আয়োজন করতে চাই। যাতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোকে কাজে লাগানো যায়। এভাবে চারদিকে যদি একটা স্পন্দন তৈরি করা যায় তাহলে জাতীয় পর্যায়ে একটা বড় পরিবর্তন আসবে।

বাফুফে ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনগুলোর মধ্যে সম্পর্ক অতীতে খুব একটা ভালো ছিল না। এটা নিয়ে তাদের অনেক অভিযোগ ছিল। বর্তমানে সেই সম্পর্ক উন্নয়নে কি কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে?

ডিএফএ ও ডিএসএ—এদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক পার্থক্য থাকে কোথায়? সেটা হলো স্টেডিয়াম নিয়ে। কোনো জেলা শহরে মাত্র একটি স্টেডিয়াম। আবার কোনো শহরে একটিও নেই। স্টেডিয়ামগুলো ডিসট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের আওতাধীন। একদিকে ডিএফএ মনে করছে, আমি বিভিন্ন লিগ আয়োজন করব, তবে আমি মাঠ পাচ্ছি না। অন্যদিকে ডিএসএ’কে ওই মাঠে ২০-২৫টা খেলা, লিগ ও টুর্নামেন্ট করতে হচ্ছে—তাই তাদেরও তো সময়টা ভাগ করতে হবে। তাই সেখানে একটা সমস্যা দেখা যায়। এখানে কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এটার সমাধান হলো, প্রতিটা জেলায় ডিএফএ’র নিজস্ব ফুটবল মাঠ গড়ে তোলা। সেটা করা হলো ডিএফএ-ডিএসএ’র সম্পর্ক সহযোগিতাপূর্ণ হবে।

চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ২৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে বাফুফে যে স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে স্থানীয় সংগঠকদের বিরোধিতা প্রসঙ্গে আপনার অবস্থান কী? বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

এমএ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে যারা ডিএফএ’র এই বরাদ্দকে বিরোধিতা করছেন, তারা যে ফুটবলের বিপক্ষে বিষয়টা এমন নয়। ওই স্টেডিয়ামে ১০-১৫টা টুর্নামেন্ট সারা বছর ধরে চলে। এখন ওনারা হয়তো মনে করছেন, ফুটবলকে দিয়ে দিলে আমাদের বাকি খেলাগুলো কোথায় হবে। বাকি খেলাগুলোও তো দরকার। তাই পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে হবে। আমরা এখন চেষ্টা করছি, চিটাগংয়ের মূল শহরে একটি জায়গায় ফুটবলের জন্য নির্দিষ্ট স্টেডিয়াম তৈরি করতে। যাতে তখন এই ধরনের সমস্যা তৈরি না হয়। এতে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অন্য খেলা হতে কোনো বাধা থাকবে না। সেটা না হওয়া পর্যন্ত এভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবহার করতে হবে। স্পোর্টস সবাইকে একত্র করে, আমরা স্পোর্টসের মাধ্যমে কাউকে দূরে সরাতে চাই না।

আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।

আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ। দেশের ফুটবলের উন্নয়নে সবাই একসঙ্গে কাজ করলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। আশা করি, আমাদের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা দেশের ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫