দর্শকের মধ্যে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন সিনেমা: তিতান চৌধূরী

সুলতান মাহমুদ
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:৪০

তিতান চৌধুরী, অভিনয়ের শুরুটা থিয়েটার থেকে। রিয়েলিটি শো ক্লোজআপ ওয়ানেও অনেকটা পথ এগিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে ঘোমটা সিরিয়ালের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে আসেন। সম্প্রতি তিনি নাটক, সিনেমা, গান নিয়ে কথা বলেছেন সুলতান মাহমুদ সোহাগের সঙ্গে...
আপনি একসময় থিয়েটার করতেন? এখন আর সেটা নিয়মিত না, থিয়েটারটাকে কতটা মিস করেন?
তিতান চৌধুরী: অনেক বেশি মিস করি। খুব ছোটবেলা থেকেই আমি থিয়েটার করতাম। ঢাকা আসার আগ পর্যন্ত আমি থিয়েটারে নিয়মিত ছিলাম। চট্টগ্রামের ইউআইটিএস থেকে বিবিএ শেষ করে আমি ঢাকায় চলে আসি। ঢাকায় আসার প্রধান কারণ ছিল আমাকে একজন অভিনয়শিল্পী হতে হবে। থিয়েটার থেকে যা শিখেছি সেটার ব্যবহার করতে হবে। আমি সুযোগ পেলেই চট্টগ্রামে যাই। আমার প্রিয় থিয়েটারে যাই। সবার সঙ্গে আড্ডা দেই। আমার নিজের ঘরের মতোই থিয়েটারের ঘরটাও আমার অনেক প্রিয়।
এবার আসি গানের বিষয়ে। চার বছর বয়স থেকে আপনি গান শিখে আসছেন। দেশসেরা রিয়েলিটি শো ক্লোজআপ ওয়ানেও আপনি অংশগ্রহণ করেছিলেন, কেমন ছিল সেই জার্নিটা?
তিতান চৌধুরী: ক্লোজআপ ওয়ানের শুরুটা আমার ভালোই হয়েছিল। অনেকদূর এগিয়েছিলাম। শিখেছি অনেক কিছু। এই শিক্ষাটা আমার অনেক কাজে লাগবে। তবে ক্লোজআপ ওয়ানের এলিমিনেশনের কস্টটা আজও ভুলতে পারি না। একটা না পাওয়া থেকে যাবে জীবনে।
নাটকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে পরিবারের সহযোগিতা কেমন পেয়েছিলেন?
তিতান চৌধুরী: বাবা ডাক্তার। তিনি সবসময় চাইতেন তার মতো যেন ডাক্তার হই। একটু বড় হওয়ার পর সবাই চাইতেন আমি যেন ব্যবসায়ী হই; কিন্তু আমার একটাই লক্ষ্য ছিল আমি একজন ভালো অভিনেত্রী হব। আমাকে অভিনেত্রী হতেই হবে। ঢাকাতে আসি পড়াশোনা করার জন্য কিন্তু লক্ষ্য অভিনেত্রী হব। বাবা-মায়ের সম্পূর্ণ সহযোগিতা ছিল আমার কাজের প্রতি। আমার কিছু ভালো কাজে তারাও অনেক খুশি হয়েছেন। তাদের সহযোগিতার কারণে আজ আমি এতদূর আসতে পেরেছি। তারা আমার নাটক দেখে ভালো-মন্দের বিচারও করেন।
গত ঈদে আপনি বেশ কিছু ভালো কাজ করেছেন এবং সময়ের মেধাবী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাই।
তিতান চৌধুরী: হ্যাঁ, গত ঈদটা আমার জন্য বেশ স্পেশাল। সময়ের মেধাবী নির্মাতাদের নাটকে অভিনয়ের সুযোগ হয়েছিল আমার। ইমরাউল রাফাতের ‘মি টু’, ‘স্ক্রিনশর্ট’, তপু খানের ‘সেনোরিটা’, ‘ফ্রাই ডে লাভ’, শামীম জামানের ‘আইডি লক’, ‘সেই রকম কফিখোর’ এবং সবচেয়ে বড় বিষয় গুণী চলচ্চিত্র পরিচালক ও নাট্য নির্মাতা তৌকীর আহমেদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। তার নির্দেশনায় ‘স্বর্ণলতা’ নাটকে আমি অভিনয় করেছিলাম।
সম্প্রতি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘গল্পটি সাধারণ নয়’ তে অভিনয় করেছেন আপনি? কেমন লেগেছে এবং গল্পটা একটু শুনতে চাই?
তিতান চৌধুরী: পরিচালক নাহিয়ান খান। তার প্রথম নির্দেশনা। আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্মিত করা হচ্ছে। আমিও চেষ্টা করেছি আমার শতভাগ দেওয়ার। গল্পটা যদি বলতে হয়, তাহলে এরকম যে ‘তুলি ও তার স্বামীর সুখের সংসার। বেশ ভালোভাবেই কাটছিল। হঠাৎ তাদের বাসায় গ্রাম থেকে তুলির স্বামীর এক চাচা এসে উপস্থিত। তিনি আসার পর ঘটতে থাকে নানা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। এভাবে এগিয়ে চলেছে গল্পটি। পুরোটা এখনই বলতে চাই না।’
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় কবে দেখতে পাবে দর্শক?
তিতান চৌধুরী: ভালো গল্প এবং ভালো পরিচালক পেলে আমি এখনই কাজ করতে চাই। দীর্ঘদিন দর্শকের মধ্যে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে সিনেমা। আমি আমার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে একটি ভালো গল্পের ভালো চরিত্রে অভিনয় করে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে চাই। অনেকেই গল্পে গল্পে অনেক সিনেমার উদাহরণ টেনে নিয়ে আসেন। আমার অভিনীত সিনেমা যেন দর্শকের গল্পের মধ্যে, কিংবা পরিচালক, প্রযোজক অথবা শিল্পীদের গল্পের মধ্যে উদাহরণ হয়ে আসে বারবার।