Logo
×

Follow Us

সাক্ষাৎকার

‘দ্য আর্ট লাইফ’ তথ্যচিত্র নির্মাতার সাক্ষাৎকার

এর আগে বস্টনে কখনো আমি এরকম গল্প শুনিনি: জন নুয়েন

Icon

সুদেষ্ণা ঘোষ

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৫১

 এর আগে বস্টনে কখনো আমি এরকম গল্প শুনিনি: জন নুয়েন

ডেভিড কিথ লিঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ডেভিড কিথ লিঞ্চ জন্মেছিলেন ১৯৪৬ সালের ২০ জানুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের মনটানার মিসৌলা শহরে। তিনি একাধারে ছিলেন আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা। অন্যদিকে ছিলেন অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সুরকার এবং লেখক। তাঁর নির্দেশনায় ১৯৮০ সালে ‘দ্য এলিফ্যান্ট ম্যান’, ১৯৮৬ সালে ‘ব্লু ভেলভেট’ এবং ২০০১ সালে ‘মুলহল্যান্ড ড্রাইভ’ প্রভৃতি চলচ্চিত্র অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল।

১৯৯০ সালে তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ওয়াইন্ড অ্যাট হার্ট’ প্রদর্শিত হয়েছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে। সেখানে তাঁকে পাম দর পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। ২০১৯ সালে তিনি পেয়েছিলেন একাদেমি সম্মানসূচক পুরস্কার। এ ছাড়া ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁকে গোল্ডেন লায়ন পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে চলচ্চিত্র সমালোচকমণ্ডলী ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় তাঁকে আধুনিক যুগের গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেছিলেন। অন্যভাবে বলা যায়, তাঁকে আধুনিক আমেরিকার চলচ্চিত্র জগতের নবজাগরণের মানুষ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। চলচ্চিত্র সমালোচক পাউলিন কেইল লিঞ্চের কাজে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে ‘প্রথম জনপ্রিয় পরাবাস্তববাদী’ নামে নামাঙ্কিত করেছিলেন। আমেরিকার সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ম্যাকডোয়েল কলোনি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিল দ্য এডওয়ার্ড ম্যাকডোয়েল পদক। এছাড়াও লিঞ্চের অন্য সৃষ্টিগুলো হলো- ইরেজারহেড, ডিউন, টুইন পিকস : ফায়ার ওয়াক উইথ মী, লস্ট হাইওয়ে, দ্য স্ট্রেইট স্টোরি, ইনল্যান্ড এম্পায়ার ইত্যাদি। লিঞ্চের লেখা ‘ক্যাচিং দ্য বিগ ফিশ’ বইটিতে তিনি আলোচনা করেছেন তাঁর সৃজনশীলতার ওপর অতীন্দ্রিয় ধ্যানের প্রভাব সম্পর্কে।

ডেভিড লিঞ্চ : দ্য আর্ট লাইফ নামক চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করার পর এক তরুণ পরিচালক জন নুয়েন ডেভিড লিঞ্চের বিশ্বাস জিতে নিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৭৩তম ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছিল। মূলত তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছে মনটানা, ওয়াশিংটন এবং আইডাহোতে লিঞ্চের বেড়ে ওঠার ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে। চিত্রশিল্পকে পেশা হিসেবে নির্বাচন করে ফিলাডেলফিয়াতে তাঁর যাত্রা এবং চলচ্চিত্র জগতের পা রাখতেই প্রথম পরাবাস্তববাদী চলচ্চিত্র ইরেজারহেডের খসড়া প্রস্তুতি, পরিচালনা, প্রযোজনা, সম্পাদনা এবং সুর পরিকল্পক সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণী এই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে নুয়েন লিঞ্চ প্রিয় দর্শকের কাছে তুলে ধরেছেন। এই চলচ্চিত্রের পরতে পরতে পরিচালক ফুটিয়ে তুলেছেন লিঞ্চের জীবনের চড়াই-উৎরাইয়ের প্রতিটা অধ্যায়। 

২০১৭ সালের ১৭ মে ‘ফিল্মমেকার’ সংবাদমাধ্যম জন নুয়েনের একটি সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করেছিল এবং সেখানে নুয়েনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কিকস্টার্টার ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে। এ ছাড়াও জানতে চাওয়া হয়েছিল এইরকম এক অদ্বিতীয় তথ্যচিত্র নির্মাণ কাজে কীভাবে নুয়েন আমেরিকার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে এমন একজন গুণী চলচ্চিত্রকারের সহযোগিতা পেয়েছেন। 

এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য আপনি কীভাবে লিঞ্চের কাছে প্রস্তাবনা রেখেছিলেন?

আমার কিছু বন্ধু কর্মসূত্রে ডেভিডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের মাধ্যমেই আমি তাঁর কাছে পৌঁছেছিলাম। আশ্চর্যজনকভাবে তিনি আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। আমি ভাবতেই পারিনি তিনি আমার প্রস্তাবে রাজি হবেন। অবশেষে তিনি সম্মতি দিলেন। আমরা যখন প্রথমবার ডেভিডের সাক্ষাৎকার নিলাম, তখন তিনি একটা সিগারেট হাতে ধরে বাহুগুলো আড়াআড়িভাবে রেখেছিলেন। প্রথমদিকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন; কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা একে অপরের বেশ কাছাকাছি এসেছিলাম। আড়াই বছর ধরে আমরা তাঁর বাড়িতেই সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম, শুনেছিলাম তাঁর জীবনের পূর্ণাঙ্গ গল্প, ব্যক্তিগত জীবনের গল্প, চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার গল্প।

তিনজন পরিচালক যুক্ত থাকায় এই প্রকল্পটি কীভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছে?

আমিই এই চলচ্চিত্রের মুখ্য পরিচালক। অলিভিয়া মূলত ছিলেন সম্পাদক এবং পরিচালক। চলচ্চিত্রের শেষ পর্যায়ে আমি তাঁকে পরিচালক তালিকায় যুক্ত করেছিলাম। কারণ এ কাজে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাই এটা ছিল মূলত অলিভিয়ার প্রতি এক প্রকার ধন্যবাদ জ্ঞাপন। আর তারপর আশা যাক ঋক বার্নেসের কথায়। এটা ছিল তাঁর ছদ্মনাম। আমি তাঁর আসল নামটা ঠিক বলতে পারব না। যান্ত্রিক সমস্ত ক্রিয়াকলাপ তাঁর দ্বারাই সম্পন্ন হয়েছে। প্রকৃতপক্ষেই এই চলচ্চিত্রটা নির্মাণ করতে লোকবলের প্রয়োজন পড়েছিল। যারা আমার এই চলচ্চিত্রকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে, আমি বরাবরই চেয়েছিলাম তাদের প্রকাশ্যে আনতে।

আপনি কী পুনরায় কিকস্টার্টার ব্যবহারের কথা ভাববেন? এ বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কতটা স্বস্তিকর ছিল?

আমার মনে হয় না আমি আগামীতে কখনও কিকস্টার্টার ব্যবহার করব। কিকস্টার্টার সম্পর্কিত সমস্যাটা হলো, এক নিমিষেই আপনি এখানে এক হাজারেরও বেশি প্রযোজক পেয়ে যাবেন। এছাড়া বেশিরভাগ মানুষই ব্যবসার দিকটাকে ঠিক মতো বোঝে না। ফলে সেক্ষেত্রে প্রচুর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এটা হলো অনেকগুলো কাজের মেলবন্ধন। তারা মনে করে- একটা চলচ্চিত্র তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহজেই তারা পেয়ে যাবে; কিন্তু তারা এটা বোঝে না, এটা সংঘটিত করতে হয় আনুষ্ঠানিক বর্তনীর মাধ্যমে। আর তারপর যখন কোনও অঞ্চলে এই চলচ্চিত্র মুক্তি পায় তখন আমরা শুধু জ্ঞাপনপত্র দিয়েই কাজ সমাপ্ত করতে পারি না। যেহেতু আপনি কাজ করছেন প্রচুর চাহিদার জন্য, ভিন্নভিন্ন মানসিকতা সম্পন্ন অসংখ্য মানুষের সঙ্গে। আর যখন আপনি সময় সূচি (শিডিউল) তৈরি করবেন, তখন শুধু একজন প্রযোজকই অভিযোগ করবেন না, সেই সঙ্গে আরও একদল মানুষ- যাঁরা ১৫ ডলার থেকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন।

এমন কোনো মানুষ যার সঙ্গে কখনও দেখা করতে চান না...

হ্যাঁ, লিখেছিল আমাদের। কিছুটা অভিযোগের সুরেই। আমি বুঝতে পারছি এমন প্রশ্ন কেন আসছে; কিন্তু এটা বেশ জটিল, যেমনটা ঠিক আমি আগেও বলেছিলাম-হাজারটা প্রযোজকের সঙ্গে আমাদের লেনদেন করতে হয়। চলচ্চিত্রের জন্য তহবিল পাওয়াটা অনেক বড় প্রাপ্তি। আমরা চলার পথে বহু বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তাদের মধ্যে কিছু বাধা ছিল ব্যক্তিগত। 

চলচ্চিত্রটি নাকি সময় সূচিকে ছাপিয়ে গিয়েছিল?

হ্যাঁ, তারা এর পেছনে সৃষ্ট বাধা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। আর আমি যখনই কিকস্টার্টার ব্যবহার করলাম তখন আমি বলেছিলাম-‘চলচ্চিত্রটা এক বছরের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে।’ আমি সেই সময়ে এইরকমই কিছু ভেবেছিলাম; কিন্তু তখনো পর্যন্ত আমরা এই চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করিনি। হঠাৎই ডেভিড টুইন পিকসে যুক্ত হলেন। ততদিনে আমাদের সময় সূচি জানালার বাইরে চলে গিয়েছে। টুইন পিকস প্রস্তুতির সমস্ত কাজ তিনি তখন একা হাতে গোছাচ্ছিলেন। এইভাবে অনেকগুলো মাস কেটে গেল। আমরা তখনও তেমন কিছুই করে উঠতে পারলাম না। অবশ্যই, আমাদের কাজে ডেভিডের যুক্ত হওয়ার ঘটনাটা সেই সময়ে আমরা প্রকাশ্যে আনিনি। আমরা তখন সব সময় বলে গিয়েছি- এটা সময় সূচি সংক্রান্ত সমস্যা। এটাই বরং সত্যি।

কোথা থেকে বাজেটের বাকি অংশটুকু সংগ্রহ করলেন?

আমি বলতে চাই বাজেটের অর্ধেক অংশ সংগ্রহ করেছি কিকস্টার্টার থেকে আর বাকিটুকু প্রকল্পে যুক্ত অন্যান্য ব্যক্তির থেকে। চলচ্চিত্র নির্মাণের পরবর্তী সময়ে আমি পেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই লিঞ্চের বড় ভক্ত হওয়ার কারণে নির্দ্ধিধায় তাঁরা তাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করেছেন। সুর পরিকল্পক, সম্পাদক সকলেই অংশগ্রহণ করেছেন শুধু লিঞ্চের ভক্ত হওয়ার কারণে। পকেট ভর্তি হলে আরও একবার আমরা কাজ শুরু করতাম এই সকল মানুষের সঙ্গে। এটা ঠিক এমন নয় ‘আমি আপনাকে এক বা দুই মাসের জন্য নিযুক্ত করছি।’ বরং এটা এমন-‘আমি সপ্তাহের শেষে ছুটির দিন পেয়েছি। সুতরাং কিছু পরিকল্পনা করা যাক।’ ‘আহা! আমি এবারে চার সপ্তাহ ছুটি পেয়েছি। এ সময়কে কাজে লাগাতে হবে।’

লিঞ্চের জীবনবিষয়ক সাক্ষাৎকারের মধ্যে কেন আপনি অন্যান্য ব্যক্তির সাক্ষাৎকার যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিলেন? এটা কি শুধু লিঞ্চবিষয়ক সাক্ষাৎকার হতে চলেছে?

আমি তাঁর বন্ধুদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ডেভিড প্রায়শই অভিযোগ করেন মানুষেরা এই গল্পটাকে ভুলভাবে ব্যখ্যা করে। আমি অনুভব করি আমাদের মধ্যে এক বিশেষ ধরণের উপলব্ধি আছে। ফলে গল্পটা সঠিকভাবে পরিবেশন করার জন্য ডেভিডকেই বলতে দেওয়া উচিত। ডেভিড লিঞ্চ সম্পর্কে এতটাই অবগত যে ওঁর কণ্ঠেই গল্পটা সুশোভিত এবং সুস্পষ্ট রূপ পাবে, অন্যথা এ গল্পের বিকৃতি ঘটবে।

চলচ্চিত্র নির্মাণে তিনি আপনাদের কতটা সাহায্য করেছিলেন?

তিনি সাক্ষাৎকার গ্রহণে আমাদের সম্মতি দিয়েছিলেন। তারপর তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন তাঁর চিত্রশালায়। তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন প্রায় আড়াই বছর। তারপর তিনি দেখালেন তাঁর সংগ্রহে রাখা পারিবারিক ছবির অ্যালবাম। সেখানে ছিল তাঁর পূর্বপুরুষদের আমল থেকে সংগৃহীত ১ হাজারটা ছবি। এর আগে কখনো তিনি কারোর কাছে জীবনের অধ্যায়কে তুলে ধরেননি। এ ছাড়াও তিনি অনুমতি দিলেন তাঁর দ্বারা সৃষ্ট চিত্রকর্মগুলোকে দেখার জন্য। যখন এসব ঘটনা ঘটছিল তখন আমি মনে মনে ভাবছিলাম-‘এ সমস্তটা যদি কোনো গল্পের মাধ্যমে বলা করা যায়!’ আমরা তা বিভিন্নভাবে চেষ্টাও করেছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তুলে ধরার। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করার পর আমাদের মাথায় এলো- ‘আমরা বরং একটা চলচ্চিত্র তৈরি করি।’ তাঁর প্রদত্ত সুরকেই আমরা এই চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেছি। এক্ষেত্রে ডেভিডের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনই হবে মোক্ষম। দৃশ্যে থাকবে তাঁর পারিবারিক ছবি। আর সুরের তালে তালে তাঁর চিত্রকর্ম শোনাবে গল্পকথা।

চূড়ান্ত ছেদনের পর তিনি কি চলচ্চিত্রটি প্রকাশের জন্য অনুমোদন দিয়েছিলেন?

চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পর তিন তিনবার তিনি চাক্ষুষ দেখেছিলেন। কোনো সাক্ষাৎকারই তিনি ছেদনযোগ্য বলে বিবেচনা করেননি। মাঝে মাঝেই তিনি একটা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা হলো- ‘এটা আরও সুন্দর হতো যদি শোনানো যেত;’ কিন্তু কোনো দৃশ্যেই তিনি ছুরিকাঁচি প্রয়োগযোগ্য বলে মনে করেননি। এটা ছিল তাঁর উদারতা। আমরা যখন গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে তৎপর ছিলাম তখন আমাদের চোখে-মুখে ছিল একরাশ উত্তেজনা। সেই সঙ্গে তিনিও দিন পার করছিলেন উত্তেজনার মধ্যে। আমি ভেবেছিলাম বিষয়টা হয়তো তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত। কারণ তিনি আমাকে অনেককিছুই বলেছিলেন এবং আমি ভাবছিলাম- ‘তিনি যা যা বলছেন এগুলো কারাই বা জানে? রেকর্ডার যে চালু আছে তা তিনি নিশ্চয়ই ভুলেছেন। তাই তো তিনি সম্পূর্ণ গল্প গড়গড় করে বলে চলছেন;’ কিন্তু শেষাব্দি তিনি এর একটা বিষয়েও ছুরি-কাঁচি চালাননি।

ঘর ছেড়ে বেরিয়ে না গিয়ে তিনি যখন নিজস্ব মনের কুঠুরির গভীরতায় প্রবেশ করে সম্পূর্ণটা মেলে ধরলেন, তখন কি আপনি বিস্মিত হননি?

এর আগে বস্টনে কখনো আমি এরূপ গল্প শুনিনি। যখন তাঁর বাবা তাঁকে বিদ্যালয়ে ছেড়ে আসতেন তখন তিনি চেয়ারে বসে থাকতেন আর বেতার শুনতেন। শৌচকর্ম অথবা খাবার খাওয়া ছাড়া তিনি সেখান থেকে উঠতেন না। এ গল্প আমাকে তাঁর সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সাহায্য করেছে। ফলে আমার মনে তাঁর সম্পর্কে তিলতিল করে গড়ে উঠেছে প্রবল উপলব্ধি। এ এক অনন্য অনুভূতি। আমি ভেবেছিলাম-‘ঠিকই আছে। তাঁর চলচ্চিত্রে আছে এক গভীর উপলব্ধি, আছে ব্যাকুলতার মেজাজ। সেই কারণেই তাঁর এই চলচ্চিত্রটি খুব ভালো করেই মননে প্রতিলিপি হিসেড়বে ছাপ ফেলতে পারবে। কারণ কখনো হয়ত তিনিও এইরকম কিছু পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সময় পার করেছেন।’  


সাক্ষাৎকারটি ভাষান্তর করেছেন : সুদেষ্ণা ঘোষ

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫