প্রতীকী ছবি
নতুন চাকরিতে যোগদান করতে চাচ্ছেন। অফিসের কাজের ধরন, পরিবেশ, সহকর্মী সবই পছন্দ হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী মিলছে না বেতন। এমন অবস্থায় কী করবেন? নিয়োগকর্তার সঙ্গে দর কষাকষি করবেন? করতে পারেন, তবে কাজটা কঠিন। কঠিন এই কাজটি সারতে হয় কিছু নিয়ম আর কৌশলের মাধ্যমে। ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কৌশলে আনতে হয় নতুনত্ব। আর তাতেই মিলতে পারে সাফল্য।
- শুরুতেই একটা কথা মনে রাখবেন, প্রতিষ্ঠান আপনাকে পছন্দ করেছে বলেই চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে। দর কষাকষির সময় যদি নিয়োগদাতার মনে আপনার ব্যাপারে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়, তবে ভালো প্রস্তাব দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এ ক্ষেত্রে ভদ্রতা রক্ষার পাশাপাশি আলোচনার সময় শান্ত থাকার পরীক্ষাও চলে। কথার ধরনের ওপর ভিত্তি করে নিয়োগদাতারা আপনাকে মূল্যায়ন করতে পারে। কাজেই তাদের মন জয়ের চেষ্টা করুন।
- নিয়োগদাতার মনে এই বিশ্বাস সৃষ্টি করানোটাও জরুরি যে, যা চাইছেন, আপনি তার যোগ্য। শুধু চাহিদা জানানোটাই যথেষ্ট না। বরং কেন এই চাহিদার যোগ্য দাবিদার, তা বুঝিয়ে বলুন। বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে আপনার দাবি বোকা বোকা শোনাতে পারে। এতে নিয়োগদাতাদের মনে উল্টো জন্মাতে পারে বিরূপ ধারণা।
- নিয়োগদাতার যদি সন্দেহ হয় যে তাদের প্রতিষ্ঠানে বেশি দিন কাজ করবেন না, তাহলে তারা ভালো প্রস্তাব দেবে না। কাজেই ভালো প্রস্তাব পেতে চাইলে নিয়োগকর্তাকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিন যে আপনি তাদের প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে আগ্রহী।
- নিয়োগদাতাকে প্রভাবিত করতে চাইলে তার পছন্দ-অপছন্দ বুঝতে হবে। তার মন জয় করতে পারলে যা আশা করছেন, তার চেয়ে বেশি কিছুও পেয়ে যেতে পারেন। এমন কিছু করবেন না যাতে তার মন জয় করতে গিয়ে বিরাগভাজন হয়ে যান।
- চাকরির প্রস্তাব এবং বেতন নিয়ে দর কষাকষি একই ব্যাপার নয়। কিন্তু চাকরির ব্যাপারে সন্তুষ্টি অন্যান্য সুবিধা থেকেও আসতে পারে। তাই শুধু বেতন নয়, চাকরির সব দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধার ওপরও নজর দেওয়া জরুরি। যেমন-কার্যপরিধি, চাকরির স্থান, যাতায়াত, কর্মঘণ্টার সুবিধা, প্রমোশন সুবিধা প্রভৃতি।
- প্রত্যাশা অনুযায়ী সবগুলো দাবি একবারে তুলে ধরুন এবং প্রত্যেকটা দাবিই যে গুরুত্বপূর্ণ, তা স্পষ্ট করুন। তবে একটি শেষ করে একটু পর আবার অন্য দাবি তুলবেন না। প্রথমে যদি শুধু একটি দাবি তোলেন, তাহলে নিয়োগকর্তা ভাবতে পারেন এই দাবি মেনে নিলেই আপনি চাকরির প্রস্তাব গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তা ছাড়া একটির পর একটি দাবি তুললে নিয়োগকর্তা অসন্তুষ্ট হতে পারেন।
- অপ্রয়োজনীয় দর কষাকষি করবেন না। গুরুত্বপূর্ণ মনে হলেই কোনো দাবি নিয়ে আলোচনা করুন। ছোটখাটো সব ব্যাপার নিয়েও দর কষাকষি করবেন না। এতে পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানে দর কষাকষির সুযোগ কমে আসতে পারে।
- নিয়োগকর্তাকে আলটিমেটাম দেবেন না। ‘হয় এটা, নয়তো ওটা’-এ ধরনের কথা শুনতে কেউই পছন্দ করে না। কখনো কখনো অনিচ্ছা সত্ত্বেও আলটিমেটাম দিয়ে ফেলি, হয়তো নিজের শক্তি দেখাতে গিয়ে কিংবা হতাশ হয়ে। এতে নিয়োগদাতাও একই প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
- একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন, আজ যা নিয়ে দর কষাকষি করতে পারছেন না, তা নিয়ে আগামীকালই হয়তো দর কষাকষির সুযোগ খুলে যাবে। বস আজ যে দাবি এক কথায় নাকচ করে দিল, ছয় মাস পরই হয়তো তার মন বদলাবে। পরিস্থিতি বদল বা তার আস্থা অর্জনের কারণেই হয়তো তার এই মনবদল। কাজেই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা বজায় রাখুন।
