জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা নতুন কিছু শিখতে এবং পেতে শূন্য থেকে শুরু করি। চাকরির প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। 

চাকরির প্রস্তুতি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যা একেবারেই সোজা নয়। এটি একটি উন্মুক্ত প্রান্তরের মতো, যেখানে একদিকে রয়েছে সুযোগ, অন্যদিকে রয়েছে চ্যালেঞ্জের পাহাড়। অনেক সময় চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে গেলে মনে হয়, আমি কোথা থেকে শুরু করব? তবে শূন্য থেকে শুরু করলেও, সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবং ধৈর্য রাখলে সাফল্য আসবেই।

লক্ষ্য নির্ধারণ
প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করুন, কী ধরনের চাকরি করতে চান এবং কোন সেক্টরে আপনার আগ্রহ বেশি? আপনার দক্ষতা, আগ্রহ ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে একটি পরিষ্কার লক্ষ্য স্থির করুন।

প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন
চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে কিছু নির্দিষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। আপনি যে ক্ষেত্রকে লক্ষ্য করছেন, সেখানে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে। নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য অনলাইন কোর্স বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। আবার অনেক ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে কোর্স করারও সুযোগ রয়েছে। 

চাকরি খোঁজা এবং আবেদন
চাকরি পাওয়ার জন্য একটি ভালো কৌশল হলো নিয়মিত চাকরির পোর্টাল, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ও পত্রিকায় নজর রাখা। পাশাপাশি বিডিজব ডট কম ও লিংকডইনে প্রোফাইল ও পরিচিতজনদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও খোঁজ নিতে পারেন। বেসরকারি পর্যায়ে আজকাল চাকরিরতদের মাধ্যমেই দক্ষ কর্মী খুঁজে নিয়োগ দেওয়া হয়। 

রিজিউম
সিভি বা রিজিউমের মাধ্যমে মানবসম্পদ কর্মকর্তা বা নিয়োগ কর্তৃপক্ষ প্রার্থীর ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা পান। অনেক দক্ষ প্রার্থীও সিভির কারণে শুরুতেই বাদ পড়ে যেতে পারেন। অনেকে একই সিভি ভিন্ন ভিন্ন পদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন। কিন্তু সব রোগের জন্য যেমন নাপা খেলে কাজ হবে না; একইভাবে সব চাকরির ক্ষেত্রে একই সিভি ব্যবহার করলে কাজ হবে না। তাই পদভেদে সিভি সাজানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি
চাকরি পাওয়ার জন্য সাক্ষাৎকার প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই হবে না, আপনাকে নিজের দক্ষতা ও জ্ঞানের ওপর যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারের আগে কিছু মক ইন্টারভিউ সেশন করতে পারেন। পরিবারের সদস্য বা বন্ধুর সাহায্য নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। এর পাশাপাশি যেখানে আপনি সাক্ষাৎকার দিতে যাচ্ছেন, সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। প্রতিষ্ঠানটি কী করে, তাদের মিশন কী-এসব বিষয়ে ভালো ধারণা রাখুন।

নেটওয়ার্কিং
আজকের যুগে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাই পেশাগত যোগাযোগ তৈরি করতে হবে এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি ইভেন্ট, সেমিনার, ওয়ার্কশপ বা কনফারেন্সে যোগ দিন যেখানে আপনার পছন্দের ক্ষেত্রের পেশাদাররা থাকেন। আবার আপনি লিঙ্কডইনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে পারেন।

নিয়মিত ফিডব্যাক গ্রহণ ও নিজেকে আপডেট রাখুন
আবেদন বা সাক্ষাৎকারের পর প্রতিক্রিয়া নিন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি আপনার সেক্টরে নতুন ট্রেন্ড, টুলস এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে আপডেট থাকুন। নিয়মিত নতুন কিছু শিখতে থাকুন যা আপনার পেশাগত দক্ষতা উন্নত করবে।