Logo
×

Follow Us

আইন-আদালত

লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে: হাইকোর্ট

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ২২:০৪

লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবন। ছবি: ফাইল

বরিশালের জেলা প্রশাসকের প্রতি উষ্মা করে রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্ট বলেছেন, দেশ এটাই, এই দেশেই তো থাকতে হবে। লুট করে টাকা-পয়সা ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন।

সন্ধ্যা নদী দখলমুক্ত করে প্রতিবেদন না দেওয়ায় ডিসির বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

আজ রবিবার (২৮ মে) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। পরে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে আগামী ১৮ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিয়া আক্তার।

শুনানিতে আদালতকে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রতিবেদনের জন্য আমাদের সময় দিন, যোগাযোগ করি।

রিটকারী আইনজীবী বলেন, আদেশ নিয়ে ডিসি একধরনের খেলা করে। আদালত বলেন, যা দেখবে তাই তো শিখবে। সচিব যা করে। আদালত অবমাননার হাজার হাজার মামলা পড়ে আছে।

মনজিল মোরসেদ বলেন, আমরা তাহলে কোথায় যাব? জবাবে আদালত বলেন, আপনারা কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) কোর্টে যান। 

মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের যদি অস্তিত্ব রাখতে হয়, তাহলে সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা (আদালত অবমাননা-সংক্রান্ত) সেটা চর্চা করতে হবে। সেটা না করলে আইনের শাসন থাকবে না। জনগণও কোনো বিচার পাবে না। রাষ্ট্র কলাপস করলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের কাছে প্রতিবেদন না দেওয়ার কারণ জানতে চান হাইকোর্ট। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের সর্বশেষ আরও একটু সময় দেওয়া হোক।

এ সময় মনজিল মোরসেদ পাশ থেকে বলেন, পাঁচ বছর চলছে। তখন আদালত বলেন, সাইট টক করছেন কেন? আপনি সিনিয়র আইনজীবী। আপনিও বুঝেন-জানেন দেশের পরিস্থিতি, আদালতের অবস্থা। তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) চেষ্টা করে।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শেষবারের মতো সময় চাইলে আদালত বলেন, আপনি যদি এক শ বছরও সময় নেন, লাভ হবে না। দেশ এটাই, এখানেই থাকতে হবে। লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন। ১৮ জুন রাখলাম। ভালো করে বুঝিয়ে বলেন। সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে বলবেন। না হলে জবাব দিতে হবে।

জানা যায়, বরিশালের সন্ধ্যা নদী ভরাট করে আবাসন প্রকল্প তৈরি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০০৯ সালে জনস্বার্থে রিট করে। প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ৩১ মে হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ রায় দেওয়া হয়।

রায়ে বরিশালের বানারীপাড়া সন্ধ্যা নদী (কৃষ্ণকাঠি) নদীর জায়গায় ‘কাজলাহার আশ্রয়ণ’ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করাকে অবৈধ ঘোষণা করে সাত দফা নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত।

এসব নির্দেশনার মধ্যে ছিল- সিএস ও আরএস রেকর্ড অনুসারে তিন মাসের মধ্যে জরিপ করে অবৈধ দখলদারের তালিকা করা। নদীর জায়গায় থাকা দখল ও স্থাপনা চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করা। আইন অনুসারে ওই প্রকল্পে যেসব গরিব লোকদের আবাসনের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তাদের অন্য সরকারি জমিতে পুনর্বাসন করা।

আইন ভঙ্গ করে নদীর জায়গা ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনের ৭ ধারা অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া। এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন না দেওয়ায় গত ফেব্রুয়ারিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে হাইকোর্টে আবেদন করে রিটকারী পক্ষ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫