আদালতে ভুয়া হাজিরা দিতে গিয়ে দুই নারী আটক

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৯

কক্সবাজার জেলা জজ আদালত। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে আদালতে ভুয়া হাজিরা দিতে এসে এক নারী ও তার সহযোগী ধরা পড়েছেন। মাত্র একশো টাকার বিনিময়ে মামলার প্রকৃত আসামি শরিফার পক্ষে ভাড়ায় হাজিরা দিতে এসে আদালতের কাছে ধরা পড়েন শারমিন নামে এক মহিলা। তাকে সহযোগিতা করার জন্য সেতারা নামে এক নারীকেও আটক করার নির্দেশ দেন আদালত।
ওই দুই নারীর বিরুদ্ধে আদালত বাদী হয়ে প্রতারণা মামলা করেছে। মামলায় দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হানীমুন তানজিনের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাপ্পী শর্মা জানান, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া হাজিরার বিষয়টি আদালতের কাছে ধরা পড়ে।
টাকার বিনিময়ে হাজিরা দিতে আসা শারমিন উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পাগলির বিল এলাকার বাসিন্দা আলী আহমদের স্ত্রী।
চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পশ্চিম ভাদিতলা গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর চালায় স্থানীয় জসিম উদ্দিন, রোকন উদ্দিন, শরিফা, সেতারা ইয়াছমিন ও আবেদাসহ অন্যরা। তাদের হামলায় আহত হন অন্তঃসত্ত্বাসহ তিনজন। এ ঘটনায় জসিমকে প্রধান আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালত ঈদগাঁওতে মামলা করেন আবু বক্কর ছিদ্দিকর স্ত্রী কুলসুমা বাহার।
রবিবার মামলার ধার্য দিন ছিল। যথারীতি আদালত চলাকালীন আসামিরা হাজিরা দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান। এ সময় বাদী কুলসুমা আদালতে অভিযোগ করেন কাটগড়ায় দাঁড়ানো শরিফা নামে মহিলাটি প্রকৃত আসামি নন। শরিফা আদালত প্রাঙ্গণেই আসেননি। আসামিপক্ষ এ নারীকে শরিফা সাজিয়ে হাজিরা দিতে ভাড়া করেছে।
বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আসামিদের নাম ঠিকানা যাছাই করে প্রতারণার সত্যতা পেয়ে শারমিন ও তার সহযোগী সেতারাকে আটকের নির্দেশ দেন। পরে আদালত বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালত ঈদগাঁও আদালতের বেঞ্চ সহকারী মকছুদ আহমেদ জানান, এ ঘটনায় আদেশনামা মূলে কক্সবাজার সদর আদালতে মামলা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাপ্পি শর্মা জানান, আদালতে ভুয়া হাজিরা দেয়াটা অপরাধ এবং পেশা পরিপন্থী কাজ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে এসব প্রতারণা দিন দিন বাড়বে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল হালিম বলেন, সেতারাসহ চার আসামির হাজিরা ও একজন নারীর আত্মসমর্পণের কথা ছিল। আমিও সেই অনুযায়ী হাজিরা ও জামিন আবেদন করি। কিন্তু তারা একশ টাকায় একজন নারীকে ভাড়া করে শরিফা সাজিয়ে কাঠগড়ায় তোলে। বিষয়টি আমি জানতাম না, তারা আমাকে জানায়নি।