Logo
×

Follow Us

আইন-আদালত

জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে

Icon

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ১২:৪৯

জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি শেষ, রায় ২৭ মে

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের করা আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেছে আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই দিন ধার্য করেন।

গত বুধবার আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়। পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

গত ২২ এপ্রিল আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য ৬ মে দিন ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ।

সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এ টি এম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিল করতে বলা হয়। আর আপিল শুনানির জন্য আগামী ২২ এপ্রিল দিন ধার্য করে সর্বোচ্চ আদালত।

রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আজহারুলের করা আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগ লিভ (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে এ আদেশ দেয়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ এই রিভিউ শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

সেদিন আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। তার সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির ও সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম শুনানিতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সেদিন শুনানির পর এহসান এ সিদ্দীক বলেন, চারটি গ্রাউন্ডে এ টি এম আজহারুল ইসলামের রিভিউ অ্যাপ্লিকেশনটি অ্যালাউ হয়ে লিভ গ্রান্ড (মঞ্জুর) করেছে আপিল বিভাগ।

প্রথম গ্রাউন্ড: আপিল বিভাগ ২০১৯ সালে আদালত যে রায় দিয়েছিলেন সেখানে ওনারা ইন্টারন্যাশনাল ল মানেন নাই। এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট-১৯৭৩ সালের আইনে ইন্টারন্যাশনাল ল অ্যাপ্লাই করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের আইনে ইন্টারন্যাশনাল ল কমপ্লাই করার কথা ছিল কিন্তু সেটা তারা মানেন নাই। এই মূল গ্রাউন্ডে রিভিউ অ্যালাউ হয়েছে।

দ্বিতীয় গ্রাউন্ড: ওনারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট-১৯৭৩ এর আইন উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যাখ্যা করেছে। সেই আইনে স্পষ্ট বলা আছে- আন্তর্জাতিক আইন মেনে রায় দিতে হবে, কিন্তু ওনারা সেটা মানেন নাই এবং ওনারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেটা আন্তর্জাতিক আইন বিরুদ্ধে ছিল। এই গ্রাউন্ডেও রিভিউ অ্যাপ্লিকেশনটি অ্যালাউ হয়েছে।

তৃতীয়ত: স্পেকচ্যুয়াল পয়েন্ট- মামলার স্বাক্ষী ঘটনার সময় আসামিকে অনেক দূর থেকে দেখেছেন, তিন কিলোমিটার দূর থেকে, পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে চিহ্নিত করেছেন। যা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না।

চতুর্থত: অ্যাভিডেন্সগত বিষয়- একজন স্বাক্ষী দিয়ে বলেছেন এটিএম আজহারুল ইসলাম আমার ক্লাসমেট ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি আজহারুল ইসলামের ক্লাসমেট ছিলেন না।

আইনজীবী এহসান এ সিদ্দীক আরও বলেন, “আমরা মামলার পুরো প্রক্রিয়াটাকে চ্যালেঞ্জ করেছি। আমরা বলেছি, আবদুল কাদের মোল্লাকে যে রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে- তা ভুল ছিল। সেটিকে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। আদালত যদি আমাদের বক্তব্য গ্রহণ করে তাহলে আবদুল কাদের মোল্লা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যত আসামির সাজা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্যই প্রশ্ন উঠবে। ভুল প্রক্রিয়ায় সাজা হয়েছে কিনা সে বিষয়টিও তখন আমরা আলোচনায় নিয়ে আসতে পারব এবং তা আদালতে উপস্থাপন করতে পারব।”

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন।

পরে আজহারুল ইসলামের করা আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

২০২০ সালের ১৫ মার্চ এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। এর পরদিন ১৬ মার্চ তার মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পাঠায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫