ঢাকার মিরপুর মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু হালদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

শনিবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ওহিদুজ্জামান বিপ্লব সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, “গত ৬ মে আদালত এই মামলায় অভিযোগপত্র আমলে নেয়। এর আগের দিন নিজের মা মারা যাওয়ায় মিল্টন সমাদ্দার আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।” 

এদিন সময় চেয়ে আবেদন করেছিলেন বলে জানান ওহিদুজ্জামান বিপ্লব। তিনি বলেন, “আদালত তা নামঞ্জুর করে মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।”

শনিবার আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এজাহার থেকে জানা গেছে, গতবছর ১ মে রাতে মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল মৃত্যু সনদ তৈরি, টর্চার সেলে মানুষকে নির্যাতন ও মানবপাচারের অভিযোগে তিনটি মামলা করা হয়।

ওই বছর ২ মে মিরপুর মডেল থানার মামলায় মিল্টন সমাদ্দারকে তিন দিন রিমান্ডে পায় পুলিশ। এরপর ৫ মে তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শিকদার মাইতুল আলম।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব তাকে মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন গ্রহণ করেন। পরে রিমান্ড শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত তার চার দিনের রিমান্ড দেন। রিমান্ড শেষে ৯ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগারে থাকা অবস্থায় মারধরের আরেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তিনি তিন মামলায় জামিনে কারামুক্ত হন।

তদন্ত শেষে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিযোগপত্র দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আতাউর রহমান। এ মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে তার স্ত্রী মিঠু হালদারকে অভিযুক্ত করা হয়।

বিভিন্ন স্থানে অযত্নে-অবহেলায় থাকা বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার ব্যবস্থা করে এবং এই কাজের ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার দিয়ে আলোচনায় আসেন মিল্টন সমাদ্দার। এসব ভিডিওতে তিনি অসহায় মানুষের জন্য অর্থ সাহায্য চেয়ে আত্মসাৎ করতেন বলে অভিযোগ ওঠে।