মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের (৬৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। 

অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু হলো। একইসঙ্গে আগামী ২৪ নভেম্বর থেকে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন, মোখলেসুর রহমান বাদল, রেজিয়া সুলতানা চমন ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। আর আসামি ওয়াহিদুল হকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও সৈয়দ মিজানুর রহমান।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজ্যুটেন্টের দায়িত্বে থেকে চারটি সামরিক জিপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলি বর্ষণ করেন এবং রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ম এলাকায় পাঁচশ’ থেকে ছয়শ’ স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে হত্যা, গণহত্যা ও অসংখ্য মানুষকে গুরুতর আহত করেন। গুলি করার পর সেসব এলাকার বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গণহত্যার পর লাশগুলো পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে কয়েকটি গর্তে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর তদন্ত শেষ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত শুরু করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিউর রহমান। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর তদন্ত সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে তদন্তে তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ পাওয়া যায়। এ মামলায় মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বারিধারার বাসা থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২৫ এপ্রিল তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।