বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবরার ফাহাদকে তাঁর রুম থেকে ডেকে আনার নির্দেশ দেন বুয়েট ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা বলে জানিয়েছেন আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এএসএম নাজমুস সাদাত।

ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে গতকাল বুধবার সাদাত রিমান্ড শুনানিকালে এসব তথ্য দেন। শুনানি শেষে সাদাতের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ওই নেতারা হলেন- মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, মনিরুজ্জামান মনির, মোজাহিদুল রহমান ও ইফতি মোশাররফ সকাল।

সাদাত বলেন, ‘আবরারকে যখন তার রুম থেকে ডেকে ২০১১ নম্বর কক্ষে নেয়া হয় তখন আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের আরো কয়েকজন ছিল। আমাদের নির্যাতনের কারণেই আবরারের মৃত্যু হয়।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদেও একই ধরনের তথ্য দিয়েছেন সাদাত। এ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান এ আবেদন করেন।

বিকাল ৩টার দিকে নাজমুস সাদাতকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তাকে হাতকড়া পরিয়ে এজলাসের ডকে রাখা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীসহ কয়েক সাংবাদিক আসামির সঙ্গে কথা বলেন।

রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে সাদাত বলেন, ‘স্যার, আমি বড় ভাইদের কথায় আবরার ফাহাদকে তাঁর রুম থেকে ডেকে আনি। পরে বড়ভাই অনিক, সকাল, মুজাহিদ, রবিন ও মনির রুমের মধ্যে আবরারকে দফায় দফায় মারে। এক সময় স্টাম্প দিয়ে আবরারকে প্রচণ্ড পেটাতে থাকে অনিক। তখন রুমে উপস্থিত অন্যরা ভয় পেয়ে যায়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আবরারকে পেটায় অনিক। তার মারের পরই আবরারের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আবরার পানি খাইতে চাইলে পানি দেওয়া হয় নাই। আমরা ভাইদের বলেছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যাইতে, ভাইরা নিতে দেয় নাই। আবরার বমি করে। আমি আবরারকে মারিনি। আমি রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুম থেকে চলে আসি। এরপর কী হয়েছে তা আমি জানি না।’

রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে সাদাতের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় বিচারক জানতে চায় তাঁর কিছু বলার আছে কী না? এ সময় বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে সাদাত এ কথা বলেন।