জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় দণ্ডিত চার খুনির মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য পাওয়া রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এই চার খুনি হলেন- নুর চৌধুরী বীর বিক্রম, শরিফুল হক ডালিম বীর উত্তম,  রাশেদ চৌধুরী বীর প্রতীক ও মোসলেহ উদ্দিন বীর প্রতীক।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। গত ২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দীর পক্ষে আইনজীবী আব্দুল কাউয়ুম খান এ রিট দায়ের করেন। রিটে রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

রিট আবেদনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নুর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন ওরফে মুসলেম উদ্দিন ওরফে হিরন খান ওরফে মুসলেম উদ্দিন খানকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালে ৭ জনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীর উত্তম, ১৭৫ জনকে বীর বিক্রম ও ৪২৬ জনকে বীর প্রতীক উপাধি দেয়া হয়। একই সালের ১৫ ডিসেম্বর এ বিষয়ে গেজেট জারি করা হয়। এর মধ্যে নুর চৌধুরী বীর বিক্রম, শরিফুল হক ডালিম বীর উত্তম,  রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়া হয়।

সুবীর নন্দী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডিত এ চার আসামির খেতাব বাতিলে এক ও দুই নম্বর বিবাদীর নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের অব্যাহত থাকা এই খেতাব ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম খেতাব কেড়ে নেয়ার নজির আছে। যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের নজির আবেদনে বলেছি। বাংলাদেশেও নজির আছে।

২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি রাতে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ খুনি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও এ কে এম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এছাড়া গত ১১ এপ্রিল রাতে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়।

তবে এখনো পলাতক পাঁচ খুনির মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নুর চৌধুরী কানাডায় রয়েছেন বলে সরকার নিশ্চিত হয়েছে। খন্দকার আবদুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন কোন দেশে অবস্থান করছেন সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার।