Logo
×

Follow Us

আইন-আদালত

এসকে সিনহার বিরুদ্ধে ভাই-ভাতিজার সাক্ষ্য

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:৪৪

এসকে সিনহার বিরুদ্ধে ভাই-ভাতিজার সাক্ষ্য

ঋণ জালিয়াতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এসকে সিনহা) ১১ জনের বিরুদ্ধে তার ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও ভাতিজা শঙ্খজিত সিনহা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আগামী ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।

আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে এসকে সিনহার ভাই নরেন্দ্র বলেন, তিনি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন নৌ বাণিজ্য অধিদফতরের প্রধান বাতি রক্ষক হিসাবে চাকরি করতেন। ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় তার এবং তার ভাতিজা শঙ্খজিতের যৌথনামে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে যে চার কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে দুই কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা নরেন্দ্র ও শঙ্খজিতের সেই যৌথ হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

নরেন্দ্র আদালতে বলেন, তার ভাই এস কে সিনহা একদিন তাকে বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলো প্রয়োজন, কিন্তু সরকারি চাকরিতে থাকার কারণে তার পক্ষে তা সম্ভব নয়। সেজন্য এসকে সিনহার অনুরোধে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে সই করেন।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তিনি কখনোই ওই ব্যাংকে যাননি এবং কোনো চেকেও স্বাক্ষর করেননি। শঙ্খজিতের সঙ্গে তার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল না। সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া টাকার বিষয়ে তার কোনো ধারণাও নেই। ওই অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কিছু কাগজপত্রে সই করা ছাড়া লেনদেন সম্পর্কে কিছুই জানতেন না এবং এ সব বিষয়ে এস কে সিনহাই এককভাবে অবগত ছিলেন।

জবানবন্দিতে শঙ্খজিত বলেন, কাকা এস কে সিনহার অনুরোধে তিনি শাহজালাল ব্যাংকের উত্তরা শাখায় যান এবং ওই শাখার ম্যানেজারের দেয়া কিছু কাগজপত্রে সই করেন। ওই অ্যাকাউন্টে যত টাকা লেনদেন হয়েছে, সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না এবং ওই টাকা তার কাকা সুরেন্দ্র সিনহা এবং সুরেন্দ্রর স্ত্রী লেনদেন করেন। কাকার নির্দেশেই তিনি ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের উত্তরা শাখায় ৫০ লাখ এবং ১০ লাখ টাকার দুইটি এফডিআর করেন এবং ১৪ লাখ টাকা ঢাকা ব্যাংকের ইপিজেড শাখায় রাখেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত ১৩ আগস্ট এ মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তরের অভিযোগে গত বছরের ১০ জুলাই এ মামলাটি করা হয়। 

মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে গত ৯ ডিসেম্বর দুদক পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদ আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।

এ মামলায় ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী কারাগারে আছেন। জামিন আছেন ব্যাংকের সাবেক এমডি একেএম শামীম ও সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা। এছাড়া ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, ব্যাংক থেকে ভুয়া ঋণের নামে ৪ কোটি টাকা বের করে পরে ওই অপরাধলব্ধ আয় ব্যক্তিগত হিসাব থেকে অস্বাভাবিকভাবে নগদে, চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।  আসামিরা ওই অর্থ নিজেদের ভোগদখল ও তার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান গোপনের মাধ্যমে পাচার বা পাচারের প্রচেষ্টায় সংঘবদ্ধভাবে সম্পৃক্ত হন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫