Logo
×

Follow Us

আইন-আদালত

এমসি কলেজে ধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্তের নির্দেশ

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২১, ১৪:৪৯

এমসি কলেজে ধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্তের নির্দেশ

ফাইল ছবি

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২ জুন)  বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কমরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল আংশিক মঞ্জুর করে এই রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এর আগে মঙ্গলবার (১ জুন) সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় জারি করা রুলের রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

একইসঙ্গে ধর্ষণের ঘটনায় অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করেন হাইকোর্ট। চার সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিতে সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা ছিলেন। পরে অনুসন্ধান কমিটি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। গণধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান তত্ত্বাবধায়কেরা, হোস্টেলের মূল গেটের ডে গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশপ্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।

প্রতিবেদেনে আরো বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন। একজন প্রাক্তন ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে থাকেন। প্রাক্তন ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজ হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং প্রাক্তন ছাত্র সাইফুর রহমান হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তারা কলেজের হোস্টেল এলাকায় গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পান। ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।

প্রতিবেদনে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১৫ দফা সুপারিশ করে বলা হয়েছে, কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা প্রাক্তন ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক গৃহবধূ। এসময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই গৃহবধূকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। 

ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ঘটনার দিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয় ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। এরইমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫