
ফারমার্স ব্যাংকের ৪ কোটি আত্মসাৎ করার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জনকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়েছে সোমবার আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কেএম ইমরুল কায়েশ চার্জশিট গ্রহণ পূর্বক স্বাক্ষর করেন।
মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য আগামী ৫ জানুয়ারি তা সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থাপনের পর বিচারকের আদেশপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ আদালতে চার্জশিটটি দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত অন্যরা হলেন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান, একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় এবং দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক ও অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী)।
অন্যদিকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ তদন্ত চলাকালীন সময়ে মারা যাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের গত ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফারমার্স ব্যাংকে শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার নামে মঞ্জুরকৃত ঋণের ৪ কোটি টাকা সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সুপ্রিমকোর্ট সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাবে জমা হয়। সঞ্চয়ী হিসাব নং ৪৪৩৫৪৩৪০০৪৪৭৫-এ জমা হওয়ার পর ওই টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর করে উত্তোলন করা হয়।
আরো বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হওয়াসহ অন্যদের লাভবান করতে এ অপরাধ করেন। অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে তারা চার কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করেন। তারা অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় ও অর্থ উত্তোলন, স্থানান্তর বা রূপান্তর ও নিজ আত্মীয়ের নামে করা ব্যাংক হিসাবে হস্তান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। পরে সেই অর্থ নিজেদের ভোগদখলে রেখে তার অবৈধ প্রকৃতি, উৎস অবস্থান গোপন বা এর ছদ্মাবরণে পাচার করেছেন বলে তদন্তে প্রমানিত হয় যা দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।