যুদ্ধাপরাধী কায়সারের মৃত্যুদণ্ড আপিলেও বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩১

যুদ্ধাপরাধী কায়সার। ফাইল ছবি
যুদ্ধাপরাধের
দায়ে জাতীয় পার্টির নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের
মৃত্যুদণ্ডের যে রায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দিয়েছিল, সর্বোচ্চ
আদালতের চূড়ান্ত রায়েও তা বহাল রয়েছে।
আজ
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার
বিচারকের আপিল বেঞ্চ মাত্র এক মিনিটে রায়ের সংক্ষিপ্তসার জানিয়ে দেয়। কায়সারের
আপিল আংশিক মঞ্জুর হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকে।
এই
বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি
জিনাত আরা এবং বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।
একাত্তরের
মুসলিম লীগ নেতা কায়সার ছিলেন পাকিস্তানি বাহিনীর একজন বিশ্বস্ত সহযোগী। ‘কায়সার
বাহিনী’ নামে দল গড়ে তিনি যেসব যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছেন, সেজন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও
হবিগঞ্জের মানুষ তাকে একজন কুখ্যাত ব্যক্তি হিসাবেই চেনে।
সেই
কায়সারই স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের আমলে হয়ে যান বিএনপির লোক, হুসেইন
মুহাম্মদ এরশাদের সময় জাতীয় পার্টির;
দল বদলের কৌশলে প্রতিমন্ত্রীও বনে
যান।
পাঁচ
বছর আগে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে বলেছিল,
“কায়সার এতোটাই নগ্নভাবে পাকিস্তানি
হানাদার বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিলেন যে নিজের গ্রামের নারীদের ভোগের জন্য
পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিতেও কুণ্ঠিত হননি।”
সেই
রায়ে সাতটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যার মধ্যে
দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে। এই দুই বীরাঙ্গনার মধ্যে একজন এবং তার গর্ভে জন্ম
নেয়া এক যুদ্ধশিশু এ মামলায় সাক্ষ্যও দেন। আর একটি ঘটনায় ছিল নির্বিচারে হত্যার
অভিযোগ।
এছাড়া
অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন ও হত্যায় সংশ্লিষ্টতার চারটি অভিযোগে তাকে
আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং তিনটি অভিযোগে আরো ২২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ
ট্রাইব্যুনাল।
২০১০
সালে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরুর পর আপিলে আসা এটি নবম মামলা, যার ওপর
চূড়ান্ত রায় হলো।
নিয়ম
অনুযায়ী আসামি এই রায় পর্যালোচনার আবেদন করতে পারবেন। তাতে সর্বোচ্চ আদালতের
সিদ্ধান্ত না বদলালে আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তাতেও তিনি
বিফল হলে সরকার সাজা কার্যকরের পদক্ষেপ নেবে।