ডিসিকে হাইকোর্ট
‘আপনার পারফরমেন্স শুধু জিরো নয়, নেগেটিভও’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১৯:১৬

হাইকোর্ট। ছবি: ফাইল
আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আপনার (ডিসি) পারফরমেন্স শুধু জিরো নয়, নেগেটিভও ।’
আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ আদালতে স্বশরীরে হাজির হলে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ এসব কথা বলেন।
হাইকোর্ট ডিসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সমুদ্র সৈকত এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সৌন্দর্য রক্ষায় আপনার পারফরমেন্স শুধু জিরো নয়, নেগেটিভও। বারবার বলার পরও আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেননি। আদেশ বাস্তবায়ন না করলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। এই ঝুঁকিতে যাবেন না।
এসময় আদালত আরো বলেন, সারা পৃথিবী এই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দিকে তাকিয়ে আছে। একে আমরা ইউটিলাইজ করতে পারছি না। কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় ভূমিকা রাখুন। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করুন, সুন্দর ব্যবস্থাপনা করুন। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে। আদালতের আদেশ না মানার কোনো সুযোগ নেই।
এসময় ডিসি মামুনুর রশিদ আদালতকে বলেন, আমি কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এখন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করব।
এসময় ডিসি লিখিতভাবে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন। এর আগে, গত ২৫ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ডিসিকে তলব করেন।
পরে ডিসিকে আদালত বলেন, শুধু করব বললেই হবে না, আপনাকে করতেই হবে। আদালতের আদেশ না মানলে আপনার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে।
শুনানি শেষে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। এ ছাড়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে ডিসিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত।
কক্সবাজারের ডিসির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও রিট আবেদনের পক্ষে মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন।
ডিসির আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, আমরা কখনও ঢালাওভাবে কারও বিরুদ্ধে কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) করি না। তাকে (ডিসি) অনেকবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের মনোভাব জানিয়েছেন। এরপরও তিনি আদেশ মানেননি। এই কারণে তাকে তলব করেছি।
রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ডেপুটি কমিশনার আদালতে হাজির হয়ে বলেছেন, তারা ৪শ’র বেশি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন। কিছু স্থাপনার মালিক আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে বলেছিল, তারা নিজেরা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অপসারণ করে নেবে। যার কারণে সেগুলো উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।