পরকীয়া একটি সামাজিক ব্যাধির মতো মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ ধরনের সম্পর্কের কারণে সমাজে অশান্তিও বাড়ছে। ভেঙে যাচ্ছে অনেক সুখের সংসার। এমনকি এ অবৈধ সম্পর্কের বলি হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে দাম্পত্য সঙ্গী বা তাদের সন্তান। দেশের প্রচলিত আইনে এ ধরনের সম্পর্কে জড়ানোকে ব্যভিচার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে আইনি প্রতিকার রয়েছে। তবে একইভাবে স্বামী যদি পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ায় তখন তার বিরুদ্ধে আইনগত কোনো প্রতিকার নেওয়ার সুযোগ নেই।
ব্রিটিশ আমলে প্রণীত ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা মোতাবেক স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে আইনগত প্রতিকার রয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি অপর কোনো ব্যক্তির স্ত্রী অথবা যাকে সে অন্য কোনো ব্যক্তির স্ত্রী বলে জানে বা তার অনুরূপ বিশ্বাস করার কারণ আছে এমন কোনো ব্যক্তির সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া এরূপ যৌন সঙ্গম করে যা নারী ধর্ষণের শামিল নয়, তবে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের অপরাধের জন্য দোষী হবে। এরূপ অপরাধের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনা শ্রম যে কোনো মেয়াদের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ ক্ষেত্রে দুষ্কর্মের সহযোগী হিসেবে স্ত্রী দণ্ডিত হবে না। অর্থাৎ স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচার যেটি আমাদের সমাজে পরকীয়া হিসেবে পরিচিত, তার জন্য স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে যার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে, সেই ব্যক্তির এরূপ কাজ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে। স্ত্রী যার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার সুযোগ থাকলেও স্বামী পরকীয়ায় জড়ালে তার বিরুদ্ধে বা সে যার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে নেই।
পরকীয়া বা ব্যভিচারের অপরাধে দণ্ডবিধি আইনের ৪৯৭ ধারার মামলা করতে গেলে নারীর স্বামী বা উক্ত নারীর তত্ত্বাবধানে রাখা কোনো ব্যক্তি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি অপরাধে আদালতে মামলা করতে পারবে না। তবে কোনো নারীর স্বামী যদি জড়বুদ্ধি, উন্মাদ বা জরাগ্রস্তবশত হয় তাহলে আদালতের অনুমতি নিয়ে অন্য কোনো ব্যক্তি মামলা করতে পারবেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : পরকীয়া সামাজিক ব্যাধি সংসার সম্পর্ক আইনি প্রতিকার
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh