‘আমি খুব সরি স্যার’, কাঁদতে কাঁদতে বললেন ব্যারিস্টার সুমন

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানা এলাকায় হোটেল কর্মচারী ও যুবদল নেতা হৃদয় হত্যাচেষ্টা মামলায় হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির সোসাইন এ আদেশ দেন।

এদিন বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাকে কান্না করতে দেখা যায়। তখন বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকলে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী তাদের শান্ত করেন।

পরে মামলার শুনানিতে পিপি ওমর ফারুক বলেন, সে (সুমন) একজন ব্যারিস্টার। ৫ আগস্টের পর দেখলাম সে লন্ডন থেকে কথা বলেছে। জনগণকে বুঝিয়েছে সে দেশে নাই, সে লন্ডন আছে। শুরু থেকেই সে চতুরতা করে আসছে। চতুরতাই তার কাজ। পরে দেখা গেল তার বোনের বাসা থেকে তাকে আটক করেছে।

ফারুকী বলেন, সে নিজেকে দাবি করে সে সেলফি এমপি। সংসদে দাড়িয়েও সে বলেছে সে সেলফি এমপি। বিদেশ থেকে মানুষজনের কাছ থেকে টাকা এনে এলাকায় কয়েকটা ব্রিজ বানিয়ে সে এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাছাড়া নতুন এমপি হলেই দেখি এমপিরা গাড়ি কিনে। সেও সবচেয়ে দামি গাড়ি কিনে এনেছে, কিন্তু সে গাড়িটা চালাতে পারে নাই।

শুনানিতে তিনি বলেন, সে (সুমন) এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এমপি হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সময় হাইকোর্টে সংবাদ সম্মেলন করে সে হাসিনার পক্ষ নিয়েছে। তখন সে বলেছে, পৃথিবীর কোনো শক্তি নাই যে হাসিনাকে সরাতে পারে। 

পিপি আরও বলেন, সে এখন আদালতে কেন? সে তো ব্যারিস্টার। সে এমন কাজই করেছে যে স্বৈরাচারের পতনের পর সে বোনের বাসায় আত্মগোপন করেছে। আর মিরপুরে হামলার কারিগর সে এবং তার পালিয়ে থাকারও ঠিকানা মিরপুর। এতেই বুঝা যায় সে যে এখানে জড়িত। এই যুবক বয়সে তার উচিত ছিল ছাত্রদের সঙ্গে থাকা। আন্দোলনের সঙ্গে থাকা। অনেক ব্যারিস্টারই ছাত্রদের সঙ্গে ছিল, কিন্তু সে আরেকটি মেয়ে নিয়ে কোটাবিরোধীদের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, যে মামলায় তাকে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে সে মামলায় তার নাম ছাড়া আর কিছুই নাই। এজাহারে সুনির্দিষ্ট কিছুই নাই। সেহেতু, তার রিমান্ড বাতিল করে জামিন প্রার্থনা করছি।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পরে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

এরপর বিচারক এজলাস থেকে নেমে যাওয়ার পর ব্যারিস্টার সুমন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকীকে উদ্দেশ্য করে কথা বলতে চান। কিন্তু ফারুকী কোনো কথা বলতে রাজি হননি। এ সময় সুমন বলেন, আপনার সঙ্গে আলাদা করে কিছু বলবো না স্যার। আপনার মাধ্যমে সব আইনজীবীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি খুব সরি স্যার।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh