মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ‘সঠিক হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, এটা মানতে নারাজ তিনি।
রবিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে করা ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, “এটা আমরা স্বীকার করছি, গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়াটা ঠিক হয়নি। ঠিক হয় নাই মানে ওনার (মেঘনা আলম) বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা আলামত নেই, এটা নয়। সেরকম কিছু আছে, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় কী আছে, সেই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
মেঘনার ব্যাপারে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “উনার যদি কোনো অপরাধ থাকে, সেই অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
গত বুধবার গভীর রাতে মডেল মেঘনাকে তার ঢাকার বাসা থেকে তুলে নেয় পুলিশ। শুরুতে স্বীকার না করলেও পরের দিন ঢাকার একটি আদালতে হাজির করে পুলিশ তাকে ১৯৭৪ সালের ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে’ আটকের আবেদন করে। আদালত তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেয়।
ঢাকায় মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মেঘনাকে জড়িয়ে নানা তথ্য সামাজিক মাধ্যমে আসছে। দুজনে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলেও তথ্য আসছে। পরে সেটি ভেঙে যায়। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য এখনও আসেনি।
মেঘনা আলমকে যখন পুলিশ পরিচয়ে কতিপয় সশস্ত্র ব্যক্তি দরজা ভেঙে আটক করতে অভিযান চালাচ্ছিল তখন তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ ভিডিও করেন। ভিডিওতে তিনি ভাটারা থানা ও ৯৯৯ হটলাইনে সহায়তা চেয়ে পাননি।
তিনি নিজে থানায় যাওয়ার কথা বলেছেন, তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা এবং আটকের কারণ জানতে কাগজ চেয়েছেন। কিছুই মানা হয়নি। তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাবার পর পুরো একদিন তার যখন হদিস ছিল না, সে সময় ফেসবুকে তার লাইভ ভিডিও ডিলিট করা হয় এবং পুলিশ ও ডিবি তাকে আটকের কথা অস্বীকার করে।
মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে গত বুধবার রাতে বাসা থেকে তুলে আনে পুলিশ। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরের দিন আদালতে তোলার পর তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেওয়া হয়।
আসিফ নজরুল বলেন, “মডেল মেঘনা আলমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিটেনশন দিয়েছিল। এটা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করেছি, এ ব্যাপারে বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্যদের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা সচেতন আছি।”
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন পেশাজীবীদেরকে নিয়ে গঠন করা ‘গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি’ এরই মধ্যে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে ‘পুনরায় ফ্যাসিবাদী তৎপরতা’ ও ‘আইনি স্বৈরাচারী’ তৎপরতা আখ্যা দিয়েছে।
সরকারি বাহিনী একটি বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিকের ‘ব্যক্তিগত বাহিনী’ হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ এনে বাহিনীর সদস্য এবং সেই রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
মেঘনা আলমের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইন উপদেষ্টা বলেন, “এটি নিয়ে আমরা কোন আলোচনা করিনি।”
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh