Logo
×

Follow Us

প্রচ্ছদ প্রতিবেদন

গণতন্ত্র মানে জনগণের অভিপ্রায়

Icon

শাহেরীন আরাফাত

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৭

গণতন্ত্র মানে জনগণের অভিপ্রায়

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কেবল একটি ক্ষণস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা নয়; এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘জনগণ’ নামক রাজনৈতিক সত্তার আত্মপ্রকাশের এক নতুন অধ্যায়। এই অভ্যুত্থানের মূল তাৎপর্য হলো সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্ট শক্তি ও ধর্মীয় জাতিবাদের বাইনারি অতিক্রম করে জনগণকে একটি সম্মিলিত, স্বাধীন রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে সংহত করা। এখানে কেবল একটি সরকারের পতন নয়, বরং গণরাজনৈতিক আকাক্সক্ষার পুনর্জাগরণ ঘটেছে-সেই আকাক্সক্ষা, যা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় গণশক্তির উত্থানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস দেখিয়েছে, জনগণের সেই অভিপ্রায় বারবার অবজ্ঞার শিকার হয়েছে। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ কিংবা নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান, কোনোটিতেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও দীর্ঘ দর-কষাকষির পর যে ‘জুলাই সনদ’ বা ‘ঘোষণাপত্র’ আসতে যাচ্ছে, সেখানে জনগণের সার্বভৌমত্ব স্বীকার না করে সংসদকে সার্বভৌম রেখে নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি কথিত গণতন্ত্রের মোড়ক তৈরি করা হয়েছে।

জনগণের ধারণাগত নির্মাণ

‘জনগণ’ বলতে বোঝায় সেই সংগ্রামী জনগোষ্ঠী যারা সেক্যুলার বা ধর্মীয় বিভাজন অতিক্রম করে সব ধরনের ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। তাদের লক্ষ্য একটি নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু এই ঐক্য নির্মাণে সবচেয়ে বড় বাধা আমাদের নিজেদের ভেতরকার তাত্ত্বিক দুর্বলতা, অজ্ঞতা ও বিভ্রান্তি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিশ্চিতভাবেই একটি পুরোনো ব্যবস্থা উৎখাত করেছে। কিন্তু তাত্ত্বিক স্পষ্টতা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সংযোগ না থাকার কারণে নতুন রাষ্ট্রকাঠামো গঠনের পথে অগ্রগতি হয়নি। কারণ রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণি এবারও সেই গাঠনিক ক্ষমতাকে কাঠামোবদ্ধ হতে দেয়নি।

ফ্যাসিবাদ ও বর্তমান বাস্তবতা

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতাকে সরাসরি ফ্যাসিবাদ বলে অভিহিত করা বিভ্রান্তিকর। কারণ ফ্যাসিবাদ যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন সেসব নাগরিককে নিজের অধীন ভাবে, গণতান্ত্রিক পরিসরকে ধ্বংস করে। এখন ফ্যাসিবাদ রাষ্ট্রকাঠামোতে অন্তর্নিহিত থাকলেও সরাসরি ক্ষমতায় নেই। ফলে ভিন্নমত, বিতর্ক, মতভেদ-এসব একটি গণতান্ত্রিক পরিসরে সহাবস্থানের মধ্যে পড়ে। আদর্শিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও গণতান্ত্রিক পরিসরে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শক্তি একে অপরকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় না, বরং তারা নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তিতর্কে লড়াই করে।

রাষ্ট্র ও সরকারের বিভ্রান্তি

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র জনগণের অভিপ্রায়ের রাজনৈতিক রূপ বা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আমাদের সমাজে রাষ্ট্র ও সরকারের পার্থক্য এখনো পরিষ্কার নয়। এই অস্পষ্টতা কেবল সাধারণ নাগরিকদের ভেতরই নয়, বিদ্বজ্জন সমাজেও গভীরভাবে বিদ্যমান। অনেকেই এখনো মনে করেন, সরকারই রাষ্ট্র। অথচ রাষ্ট্র গঠন এবং সরকার নির্বাচন-এই দুটি সম্পূর্ণ আলাদা প্রক্রিয়া। এই মৌলিক পার্থক্য না বুঝে অনেকেই মনে করেন, কেবল সরকার বদলালেই কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র আসবে।

এ কারণে ৮ আগস্ট যখন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে গণ-অভিপ্রায়ের বিপরীতে নতুন রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ হারিয়ে গেল, তখন বুদ্ধিজীবী মহলের সমালোচনার কেন্দ্রে সরকার থাকল; তারা খেয়াল করলেন না-সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব এরই মধ্যে 

এই প্রতিবিপ্লব ছিল বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট কাঠামোকে টিকিয়ে রাখার একটি সাংবিধানিক কৌশল। অথচ এই গভীর কাঠামোগত পালাবদলের দিকে তাদের দৃষ্টি যায়নি। তারা হয় একে দেখেননি অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে গেছেন। 

জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রেক্ষাপট

গত ৩১ ডিসেম্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশ থেকে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর আগের রাতেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ছাত্রনেতাদের ডেকে জানান, ঐক্যের স্বার্থে সরকার অংশগ্রহণকারী সব পক্ষকে নিয়ে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র তৈরি করবে।

এর ধারাবাহিকতায় ১৪ জানুয়ারি ঘোষণাপত্রের প্রথম খসড়া তৈরি হয় এবং তাতে ৩২টি দলের মতামত যুক্ত করা হয়। ছাত্রনেতারা তাদের নিজস্ব ১৬ দফা ঘোষণাপত্র জমা দেন, বিএনপিও আলাদা একটি খসড়া দেয়। এর মধ্যেই ঘোষণাপত্র নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। ৮ মে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টিসহ আরো কিছু দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করে। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে, ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত হবে। তবে তা সম্ভব হয়নি। পরে ১৩ জুলাই সরকার বিএনপি ও এনসিপিকে খসড়া পাঠায়। পরে জামায়াতে ইসলামীকেও পাঠানো হয়। একাধিক পক্ষ এতে মতামত দিলেও মৌলিক আদর্শিক বিরোধ থেকেই গেছে। সরকার ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষণা দেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তা সম্ভবত সংবিধানের অংশ হচ্ছে না বিএনপির আপত্তি থাকায়, বরং এ বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত অনুচ্ছেদ যুক্ত হবে।

ঘোষণাপত্রের ভাষ্য ও আদর্শিক অস্পষ্টতা

ঘোষণাপত্রের খসড়ায় শুরুতে বলা হয়েছে-পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। অথচ সাতচল্লিশের দেশভাগের ঐতিহাসিক তাৎপর্য এখানে যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তৎকালীন পূর্ববাংলার নেতারা পাকিস্তান আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন ইতিবাচক রাজনৈতিক অভিপ্রায়ে এবং এর পেছনে কংগ্রেসের হিন্দুত্ববাদী ধারার বিশেষ প্রভাব ছিল-এ বিষয়টি ঘোষণাপত্রে অনুপস্থিত। 

পূর্ববাংলা পাকিস্তানের উপনিবেশ ছিল-এই বয়ানটি আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ন্যারেটিভের প্রতিফলন। কারণ পাকিস্তান জন্মগতভাবেই নয়া-ঔপনিবেশিক; পঞ্চাশের দশক থেকেই সেখানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বিদ্যমান। পূর্ববাংলাকে এক কথায় পাকিস্তানের উপনিবেশ বলে দেওয়াটা বাস্তব ইতিহাসের জটিলতাকে সরলীকরণ করে। এতে ইতিহাসের একটি বিকৃত ও একমুখী পাঠ জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

সংবিধান, বাকশাল ও ঐতিহাসিক বিচ্ছেদ

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার-বাহাত্তরের সংবিধানে প্রতিফলিত হয়নি। পাশাপাশি পঁচাত্তরের বাকশালকে ‘একদলীয় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি তা-ই হয়, তবে সেই সংবিধান কার্যত স্ববিরোধিতায় ভরা এবং ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তা বিলুপ্তি হওয়া উচিত ছিল। কারণ ওই সংবিধান বজায় রেখেই ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটেছিল। অথচ ঘোষণাপত্রে এটিকে সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে, যা আদর্শিক দ্বিচারিতা এবং রাজনৈতিক স্ববিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত।

আইনি বৈধতা ও ফ্যাসিস্ট কাঠামোর পুনর্বাসন

জুলাই ঘোষণাপত্র যে পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে, তা আইনি বৈধতার প্রশ্নে দুর্বল। একটি গণ-অভ্যুত্থানের ফলাফল হিসেবে ঘোষণাপত্র সাংবিধানিক ভিত্তি হওয়া উচিত ছিল; যেখানে বিদ্যমান কাঠামো স্থগিত করে একটি নতুন অন্তর্বর্তী সাংবিধানিক শাসন গড়ে তোলা হয়। এখানে ঘটেছে তার উল্টো-পরাজিত সংবিধান, যেটি কার্যত রাজনৈতিক আইসিইউতে ছিল, সেটিকে সংস্কার করে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস চলছে। এই অবস্থান গণ-অভ্যুত্থানের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও শক্তিকে ভোঁতা করে দেয়।

অভ্যুত্থানের পর সংবিধান সভার (গণপরিষদ) মাধ্যমে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রণীত বিতর্কিত সংবিধান এই রেওয়াজ অনুসরণ করেনি; ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও তথাকথিত সাংবিধানিকতা বজায় রেখে পুরোনো ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা হয়। ঠিক তেমনি ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের পরও সংবিধানের দোহাই দিয়ে ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে রক্ষা করা হচ্ছে। 

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ : আপসের নকশা

সরকার প্রকাশ করেছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ (খসড়া)’। এটিতে স্বাক্ষরকারী দল ও প্রতিনিধির চরিত্র দেখলেই বোঝা যায়, এটি একটি আপসরফার দলিল, যার মাধ্যমে সরকার নিজের এক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে চাইছে। ‘পটভূমি’ অংশের শেষের দিকে বলা হয়েছে, ‘এমতাবস্থায় জনগণের মননে রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠনের একটি প্রবল অভিপ্রায় সৃষ্টি হয়েছে।’ কিন্তু সেই অভিপ্রায়ের প্রকাশ তো ৩ আগস্টের ঐতিহাসিক একদফা ঘোষণা ছিল খুবই স্পষ্ট, যেখানে হাসিনা সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের কথা বলা হয়েছিল। অথচ সেই ঘোষণার কোনো উল্লেখ জুলাই সনদে নেই। এই ফাঁক গলেই রাষ্ট্র সংস্কারের ‘বটিকা’ ঢোকানো হয়েছে।

‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা’ অংশে বলা হয়েছে, এই সনদ-পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে এর আগে সুষ্ঠু বা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে এমন সনদ বা ঘোষণা কোনো রাজনৈতিক দলই বাস্তবায়ন করেনি। এই জুলাই সনদও নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই।

বাংলাদেশের ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে, সংসদকে ‘সার্বভৌম’ ঘোষণা করেই রাষ্ট্রকাঠামোকে অভিজাত ও দলকেন্দ্রিক করে তোলা হয়েছে, যেখানে ‘জনগণ’ কেবল ভোটদাতা হিসেবে থেকেছে, নীতিনির্ধারক হিসেবে নয়। ফলত স্বৈরাচার বিদায় নিলেও স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থেকেছে। এই ঘোষণাপত্র ও জাতীয় সনদে অভ্যুত্থানের চেতনাকে কাঠামোবদ্ধ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু বাস্তবে এগুলো হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষমতা রক্ষার দলিল। অভ্যুত্থানের দাবিগুলোর মূল উপজীব্য ছিল নতুন রাষ্ট্রকাঠামো ও জনগণের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি। কিন্তু ঘোষণাপত্র ও সনদ-উভয় ক্ষেত্রেই তা অনুপস্থিত। বরং পুরোনো ব্যবস্থাকে সংস্কারের নামে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। বর্তমানে নানা ‘পরামর্শক কমিটি’ ও ‘সংস্কার কমিশন’ গঠন করে সমাজের ওপর থেকে অভিজাতদের সংস্কার জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যা প্রকৃত অর্থে এই গণ-অভ্যুত্থানের মূল চেতনার পরিপন্থি। 

প্রকৃত গণতান্ত্রিক কাঠামো

গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে চেয়েছি এমন এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়নের আগে গণপর্যায়ে জনমত গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হবে এবং কোনো আইন ব্যক্তির মর্যাদা ও স্বাধীনতা খর্ব করলে তা বাতিলযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। যেখানে ভূমি, পানি, বন, নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ জনগণের সাংবিধানিক মালিকানায় থাকবে এবং ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কেবল জনগণের অনুমোদন সাপেক্ষেই সেগুলোর ব্যবহার করতে পারবে।

গণ-অভ্যুত্থানের কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক লক্ষ্য, দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশ এবং জাতীয় উন্নতি নিশ্চিত করা। অবিলম্বে পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়ন এবং অল্প কিছু দেশ ও বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থে চলমান অবাধ বাজারব্যবস্থা নীতির অবসান ঘটাতে হবে। 

রাষ্ট্রের প্রতিটি নীতি, পরিকল্পনা ও বাজেটে লিঙ্গ-সাম্য, শ্রেণি-সমতা এবং জাতিগত ন্যায়বিচারকে প্রধান সূচক হিসেবে বিবেচনা করা হবে। নারীর রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য সংরক্ষিত প্রতিনিধিত্ব, শ্রমিক-কৃষকদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কেউ ‘সংখ্যালঘু’ থাকবে না, প্রত্যেকেই পূর্ণ নাগরিক ও মানবিক মর্যাদায় শক্তিশালী রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত বলে বিবেচিত হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শিখিয়েছে-রাষ্ট্রের প্রকৃতি, জনগণের ভূমিকা এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রশ্নে যেকোনো বিভ্রান্তি শুধু প্রতিরোধকেই দুর্বল করে না, বরং সেই ফাঁক গলেই প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি ফিরে আসে। তাই এখন জরুরি কাজ হলো জনগণের ঐক্যকে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করা, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বীজগুলো শনাক্ত করা এবং একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নকশা রূপায়ণ করা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫