
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান জীবিকা ঐতিহ্যবাহী জুম। সারা বছরের খাদ্যের জোগান হয় এই জুম থেকে। জ্বালানি তেল, লবণ আর সাবান ছাড়া জুমের ফসল দিয়েই জীবনযাপন চলে পাহাড়িদের। এক দশক আগেও এক পাহাড়ে জুম চাষ করার পর ১০-১৫ বছর ওই পাহাড়ে আর কোনো চাষ হতো না। তবে জুম ছেড়ে এখন ফলদ বাগানে ঝোঁক বেড়েছে পাহাড়িদের। বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকেও চাষিদের কাজুবাদাম, কফি ও মাল্টা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
পাহাড়-অরণ্য উপত্যকার জনপদ খাগড়াছড়ি। পাহাড়ি অঞ্চলে শিল্পাঞ্চল গড়ে না ওঠায় কৃষির প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। দুর্গম অঞ্চলের মানুষও এখন পরিকল্পিত ও বাণিজ্যিক কৃষির প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। সমতল ভূমির পাশাপাশি মাঝারি উচ্চতার পাহাড়ে চাষাবাদে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবন। খাগড়াছড়িতে প্রতি বছর খাস অনাবাদি জমি কৃষি চাষের আওতায় আসছে। বিশেষত যেসব পাহাড় বছরের পর বছর অনাবাদি থাকত, তা এখন আবাদের আওতায় আসছে।
খাগড়াছড়ির ৬৯ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে এখন চাষাবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে নিট ফসলি জমির পরিমাণ ৪৪ হাজার ৬০০ হেক্টর। পাহাড়ের অমøীয় ভাবাপন্ন মাটি ও টিলা ভূমিতে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়ায় ফলদ বাগানের সম্প্রসারণ হয়েছে বেশি। জেলায় আম, লিচু, ড্রাগন, কলা, কাঁঠাল, আনারসসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ বেড়েছে। একসময়ের অনাবাদি পাহাড়েও এখন আম চাষ হচ্ছে। ছোট-বড় আমবাগানের সংখ্যা সাত শতাধিক, লিচুবাগানের সংখ্যা প্রায় ৫০০। প্রতি বছরই ড্রাগন চাষ সম্প্র্রসারণ হচ্ছে। এ ছাড়া কমলা, লেবু, জাম্বুরা, আমলকী, তেঁতুলসহ বিভিন্ন ফল উৎপাদন হয়। কৃষি বিভাগ বলছে, বছরে আমসহ ফলদ অর্থনীতিতে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত প্রায় ২০ হাজার কৃষক ও বাগান উদ্যোক্তা।
পরিশ্রমে নারীরা এগিয়ে : কথিত আছে উপজাতি পুরুষরা কম পরিশ্রমী। জীবিকা নির্বাহের জন্য এখনো পাহাড়ি নারীরাই তাদের সংসারের হাল ধরে টিকিয়ে রেখেছেন। ঘর সামলিয়ে পাহাড়ে জুম চাষ, ফলের বাগান সৃজনসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। রাঙামাটি, বিলাইছড়ি উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ে উপজাতি নারীরা পুরুষদের মতো জুম ক্ষেতে কাজ করছে। জুমে বিভিন্ন সবজি ও ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন তারা। একজন পাহাড়ি নারী দিনের শুরুতে স্বামী সন্তানকে সামলিয়ে জুম চাষ কিংবা বাগানে কাজের জন্য চলে যান উঁচু উঁচু পাহাড়ের জুম ক্ষেতে। সারা দিন কাজ করে পাহাড়ি তরি-তরকারি নিয়ে বিকেলে বাড়িতে পৌঁছে রান্নাবান্নার কাজ সারেন। এভাবেই প্রতিদিনকার জীবনকে মানিয়ে নিয়েছেন পাহাড়ে বসবাসরত উপজাতি নারীরা।
ক্রিক পদ্ধতিতে চলছে চাষাবাদ : ক্রিক অর্থ হলো দুই অথবা তিন পাহাড়ের সঙ্গে বাঁধ দিয়ে জলাধার তৈরি করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে মৎস্য চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে পাহাড়ের পতিত জমিতে ক্রিকের মাধ্যমে মাছ চাষসহ অন্যান্য চাষাবাদে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প নিয়ে পাহাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে মৎস্য বিভাগ। মৎস্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ২৫ উপজেলায় দুই পাহাড়ের মাঝে ক্রিকের (ঘোনায় মাছচাষের জন্য বাঁধ) মাধ্যমে অর্থাৎ পাহাড়ি ঘোনায় মৎস্য চাষের এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৯৫টি ক্রিক নির্মাণ করা হয়েছে। আরো তিন শতাধিক ক্রিক নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সব ক্রিক নির্মাণ শেষ হলে শিগগিরই পার্বত্য এলাকায় মাছ চাষের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সবাই। ক্রিক পদ্ধতির সুবিধাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাছ চাষ করা। তা ছাড়া ক্রিকের পানি দিয়ে গৃহস্থালি ও খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়। আর যে বাঁধটা দেওয়া হয়, তার সুবিধা নিয়ে শাক-সবজি চাষ ও বাঁধের ওপর যাতায়াতের সুযোগ তৈরি করা। মৎস্য বিভাগ পাহাড়ের মানুষকে এ কাজে সম্পৃক্ত করেছে। এ কাজের মাধ্যমে পাহাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুফলভোগীরা মাছ চাষের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি পালন, শাক-সবজির চাষ করে অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এখন জুম চাষের পাশাপাশি নতুন ‘ক্রিক পদ্ধতি’তে চলছে পাহড়ের কৃষি। পার্বত্য এলাকার এই ক্রিকের প্রকল্প জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মসলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে পাহাড়ে : তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চমূল্যের মসলা চাষে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ এলাকার জমি মসলাজাতীয় ফসল ও ফলের বাগানের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য এলাকার প্রান্তিক কৃষকদের জন্য গ্রহণ করেছে উচ্চমূল্যের মসলা চাষ পাইলট প্রকল্প। সূত্রে জানা গেছে, একসময় পাহাড়ে মসলা বলতে শুধু আদা, হলুদের চাষকে বোঝাত। কিন্তু এখন পাহাড়ের কৃষকরা জুম চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের মসলা চাষের দিকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চমূল্যের মসলা চাষ’ একটি পাইলট প্রকল্প। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় উন্নত জাতের মসলা যেমন-দারুচিনি, তেজপাতা, আলুবোখারা, গোলমরিচ, জুম মরিচ, ধনিয়া, বিলাতি ধনিয়া ইত্যাদি চাষাবাদ করে দেশের চাহিদা পূরণ করা যাবে। এসব ফসলের আবাদের ফলে কৃষকরা লাভবান হবেন এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
আগ্রহ বাড়ছে ফলের বাণিজ্যিক চাষে : কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চিম্বুক পাহাড়ে আগে যে পরিমাণে জুমচাষ হতো এখন তা কমে আসছে। অনেকেই আম, পেঁপে ও বিভিন্ন জাতের কুলসহ লাভজনক ফসলের বাগান করছেন। তবে জুমক্ষেতে একসঙ্গে অনেক ফসল পাওয়া যায় বলে কেউ কেউ এখনো জুম চাষ করে যাচ্ছেন। আশার খবর হলো, জুম চাষে ফলন কম হওয়ায় পাহাড়িরা আম, আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল চাষ করছেন। ফলে পার্বত্য এলাকায় বেড়েছে ফল উৎপাদন। আম্রপালি জাতের বাগান স্থাপনে পাহাড়ি এলাকায় এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। এখানে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হওয়া ও মাটিতে রসের অভাবের কারণে এ আমের মিষ্টতা বেশি। বাগানি আমের ভালো দাম পাচ্ছে, আবাদে আরো উৎসাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর মাল্টা-কমলা, বাতাবি ও অন্যান্য লেবুজাতীয় ফলের আবাদ দেখা যায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়িদের জীবন-জীবিকার অন্যতম উৎস কলা চাষ। আগে অনেকটা নিম্নমানের চাঁপাকলা কম যত্নে আবাদ করা হতো। এখন দৃশ্য অনেকটা পাল্টাচ্ছে। বাংলা কলা আবাদ প্রাধান্য পাচ্ছে। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় বসবাসরত আদিবাসী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ লোকজন নির্ভরশীল কলা চাষের ওপর। পাহাড়ি এলাকায় লম্বা জাতের বহু বছরজীবী এক জাতের পেঁপে চাষ প্রচলন আছে। মূলত বসতবাড়ি ও জুমের ফাঁকে সীমিত আকারে এ ফলের চাষ চলছে। পার্বত্য জেলার অনেক বাগানের আধা ছায়া যুক্ত স্থানে লটকন চাষের প্রচুর সুযোগ আছে বিধায় ১৫ থেকে ২০ ফুট দূরত্বে এই ফল বাগান সৃষ্টির মাধ্যমে অধিক আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
উচ্চফলনশীল জাতে উৎপাদন বাড়বে : দিনদিন জুমের উপযোগী পাহাড় কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। এক বছর এক পাহাড়ে জুম চাষের পর আবার একই পাহাড়ে ঘুরে আসতে হচ্ছে। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য কয়েক বছর বিরতি দেওয়ার সুযোগ থাকছে না। তাতে পাহাড়ে মাটির উৎপাদনক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন ছাড়া উৎপাদন বৃদ্ধির আর কোনো বিকল্প নেই। বৈজ্ঞানিক উপায়ে স্থায়িত্বশীল এবং অধিক উৎপাদনশীল জুম চাষের উপায় বের করার গবেষণা করছে বাংলাদেশ কৃষি ফাউন্ডেশন। এই গবেষণায় মূলত সার-কীটনাশকের পরিমিত ব্যবহারের মাধ্যমে একই জমিতে প্রতি বছর জুম চাষের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা হয়। কয়েক বছর ধরে চলা গবেষণায় বৈজ্ঞানিক ও কৃষিবিদরা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে সফলতার মুখ দেখেছেন। এতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন জুম চাষিরাও।
জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ড্রাগন চাষ : পাহাড়ে বাড়ছে বিদেশি ফল ড্রাগনের চাষ। স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় বান্দরবানে জুম চাষ ছেড়ে ড্রাগন ফল চাষে ঝুঁকছেন পাহাড়িরা। চিম্বুক পাহাড়ের বসন্তপাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ করে লাভবান হয়েছেন অনেকে। বান্দরবান
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, বিদেশি ফল হলেও পাহাড়ের জলবায়ু এবং মাটি দুটিই ড্রাগন চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
সম্ভাবনার কফি চাষ : বাংলাদেশও কফি চাষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। জানা গেছে, ২০০১ সালের দিকে খাগড়াছড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে কফি চাষ শুরু হয়, যা এরই মধ্যে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে। খুব দ্রুতই গবেষণার সাফল্য হিসেবে বারি কফি-১ রিলিজ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া কফি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সম্ভাবনাময় কফি চাষে বদলে যাবে পাহাড়ি জীবন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায় ১০২ হেক্টর জমিতে কফি আবাদ হচ্ছে। যার মধ্যে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ২১ টন কফি।
স্ট্রবেরি চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা : পাহাড়ে টসটসে, রসালো, মিষ্টি ফল স্ট্রবেরি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তামাক চাষ থেকে চাষিদের ফিরিয়ে আনতে পাহাড়ের মাটিতে স্ট্রবেরি চাষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উদ্যোগী হচ্ছে জেলা পুলিশ বিভাগ।
কাজুবাদাম চাষে নতুন আশা : শুধু বাদাম হিসেবেই নয়, কাজু ফলের (কাজু আপেল) খোসারও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এ থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে উৎকৃষ্ট মানের জৈব বালাইনাশক তৈরি করা সম্ভব, যা নিরাপদ ফসল ও খাদ্য উৎপাদনে অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে কাজু আপেলের জুসও বেশ জনপ্রিয়। ফলের রস সংগ্রহের পর অবশিষ্ট মন্ড বা ছোবড়া দিয়ে জৈব সার উৎপাদন করা যায়। ফলে সবদিক থেকেই কাজুবাদাম একটি লাভজনক কৃষিপণ্য। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বান্দরবানের ৪.৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে কাজুবাদাম উৎপাদন হবে। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন ৭০০ কৃষক। সবচেয়ে বেশি বাগান রয়েছে থানচি ও রুমা উপজেলায়। রাঙামাটিতে কাজুবাদাম উৎপাদন হচ্ছে ২০ হেক্টর জমিতে। সূত্র আরো জানায়, পাহাড়ের পতিত ভূমিতে সামান্য পরিচর্যায় প্রতি হেক্টরে ১.৫ থেকে ১.৮ টন কাজুবাদাম পাওয়া সম্ভব।
আরবের খেজুর চাষ : সৌদি আরবের মরুভূমিতে উৎপাদিত খেজুরের পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, পাহাড়ের মাটিতে পরীক্ষামূলকভাবে সফল আরবের এই খেজুরের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ কৃষি ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। পাহাড়ের মাটিতে আরবের এই খেজুর চাষের সফলতায় এখানকার কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। রাঙামাটি রাইখালীর পাহাড়ি
কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, ২০০৯ সালে সৌদি আরবের গাছ থেকে প্রায় কয়েকশ বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলক চারা উৎপাদন করে গবেষণার মাঠে রোপণ করে সফল হয়। সব গাছে এ বছর ফুল আসে এবং প্রচুর ফল ধরে, যার আকার ও আকৃতি আরবের খেজুরের মতোই আকর্ষণীয়।
বিদেশি নাশপাতির চাষ : পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি ভূমিতে বিদেশি ফল নাশপাতি চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পার্বত্যাঞ্চল ও সিলেটের পাহাড়ি ভূমিতে নাশপাতি চাষের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। নাশপাতি শীতপ্রধান অঞ্চলের ফল হলেও পার্বত্যাঞ্চলের স্বল্প তাপমাত্রা এবং পাহাড়ে ঢালু সমতল অংশে চাষের উপযোগী। এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে সফলতা পেয়েছে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, খাগড়াছড়ি।
লেখক : সাংবাদিক ও কৃষি-অর্থনীতি বিশ্লেষক