দ্রুত সেবার ক্ষেত্রে সবার আগে জনগণ: ভূমি উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০৩
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অডিটরিয়ামে 'উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালা।
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ভূমি প্রশাসন বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। এর কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে মূলত উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সাধারণ মানুষের ভূমিসংক্রান্ত প্রায় সব সেবা এই অফিসের মাধ্যমেই দেওয়া হয়। ভূমি অফিস নাগরিক সেবার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। তাই দ্রুত সেবার ক্ষেত্রে সবার আগে জনগণকে প্রাধান্য দিতে হবে।
সোমবার রাজধানীর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অডিটরিয়ামে 'উপজেলা ভূমি অফিসের সেবা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেবার মান ও সুশাসন নিশ্চিত করতে এখনও নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এ সেবায় জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চতকরাসহ গুণগত মান পর্যবেক্ষণ ও উন্নতির জন্য স্টেকহোল্ডারগণ সরকারের সহযোগী হিসেবে সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
কীভাবে কাজ করলে জনগণের কল্যাণ হবে নিজস্ব বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিকতা দ্বারা তা নিরূপণ করে কাজ করতে হবে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, জনগণের ট্যাক্স এর টাকায় আমাদের বেতন হয়। সেবাগ্রহিতাদের সাথে মানবিক আচরণ করতে হবে এবং কেউ যদি সেবাগ্রহিতাদের সাথে দুর্ব্যবহারে জড়িত থাক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, সুশাসন একটি রাষ্ট্রের অগ্রগতির পূর্বশর্ত। এটি এমন একটি কাঠামো যেখানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার, ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। ভূমিসেবার ক্ষেত্রেও তাই। ভূমি মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে গভীর সম্পর্ক। ভূমি খাদ্য, শিল্প এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল উৎস এবং দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তিনি বলেন, ভূমি সেবার মানোন্নয়ন কেবল প্রযুক্তিনির্ভর নয় এটি মানবিকতা, সততা ও দায়িত্ববোধের সমন্বয়। ডিজিটাল ভূমি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় কার্যকরভাবে পৌঁছে দিতে হলে প্রযুক্তির পাশাপাশি সেবাদাতার মানসিকতা ও দক্ষতার উন্নয়ন অপরিহার্য।
নাগরিক ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায়ই সম্ভব হবে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও আধুনিক ভূমি সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে কর্মরত ভূমি কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বচ্ছতা,দেশ প্রেম,ও সততা এবং পেশাদারিত্বেরে মাধ্যমে ভূমি খাতে জনবান্ধব করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ভূমিসেবা প্রদানের সাথে নিযুক্ত সহকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মনিটরিং করতে হবে। অসততার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো কাজের জন্য উপরস্থ থেকে সুপারিশ আসলে দ্রুত হয়ে যায় তবে সাধারণ মানুষ কোনো সেই দ্রুত সেবা পাবে না। এসব অসংগতি পরিহার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সরকার ভূমি প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর করেছে। এখন ভূমির সকল সেবাই অনলাইনে ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে। এতে সময় ও অর্থ ভোগান্তির কমছে। এখন প্রয়োজন সেবাগ্রহিতা পর্যায়ে সচেতনতা। আগস্ট পরবর্তী পুরাতন সকল জীর্ণতা ভুলে সামনে এগোতে হবে নতুন এক বাংলাদেশ বিনির্মাণে।
সামনে নির্বাচন নতুন আশা নতুন প্রত্যয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন এক নির্বাচন উপহার দিতে হবে যা আপামর জনগণ যেন সেই নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
ভূমি মন্ত্রণালয় তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,
অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস, প্রফেসর সুরাইয়া খায়ের ও এমদাদুল হক চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
