নিরক্ষর ভোটারদের ‘অদৃশ্য’ করে দিচ্ছে গণভোটের নকশা?
তানিয়া আক্তার
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৫
প্রতীকী গণভোট। ছবি: এআই
ঢাকায় রিকশা চালান দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ভোটার মনিরুল ইসলাম; গণভোট হবে এটি জেনেছেন। প্রশ্ন পড়ে শোনানোর পর তিনি বলেন, “স্কুলত কয়েক কালাশত পড়িছিনু। কিন্তুক এলা পড়তা পারু না, লিখিবাও পারু না। শুননু, গণভোট হবে। গণভোটত কী লেখা আছে, বিষয়ডা এলাও বুঝা পাছো নাই।”
অর্থাৎ তিনি বলেছেন, স্কুলে কয়েক ক্লাস পড়লেও পড়তে বা লেখতে পারেন না। গণভোটে কী লেখা আছে, সেটি বেলার পরও বুঝতে পারেননি তিনি।
পুরান ঢাকায় জন্ম মাছ ব্যবসায়ী আবু মালেক বলেন, “আমিও হুনতাছি গণভোট হইব। মাগার এত কঠিন ক্যালা? আসমানের চান মনে হইতাছে। ভোট দিমু কেমতে?’’
জুলাই সনদ নিয়ে যে গণভোট হতে যাচ্ছে, তাতে যে প্রশ্ন রাখা হয়েছে, সেটি মনিরুল বা মালেকের মতো দেশের একটি বড় অংশ পড়তে বা বুঝতে পারবেন না।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ২২ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর, অর্থাৎ তারা পড়তে জানেন না। তবে শিক্ষা খাতে জড়িতরা বলছেন, বাকি ৭৮ শতাংশ যে পড়ে বুঝতে পারেন, বিষয়টি এমন নয়।
সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যা না থাকলেও এই ধরনের মানুষের সংখ্যা নিরক্ষর মানুষের চেয়ে কম না বলেও মনে করেন তারা।
ফলে যে প্রশ্ন এবং চারটি বিষয় নিয়ে গণভোট হতে যাচ্ছে, তা দেশের মোটামুটি অর্ধের মানুষেরই বোধগম্যতার বাইরে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের হিসাবে দেশে ভোটারের সংখ্যা এখন ১৩ কোটির বেশি। গণভোটের প্রশ্ন এদের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয় কোটি বা তার চেয়ে বেশি মানুষের বোধগম্যতার বাইরে বলে মনে করেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, “গণভোট আমাদের দেশে নতুন নয়; অতীতেও হয়েছে, যখন সাক্ষর মানুষের সংখ্যা ছিল আরও কম। কিন্তু এবার যে প্রশ্নটি তোলা হয়েছে, তা স্বভাবগতভাবেই জটিল। ব্যাপক প্রচার–প্রচারণা চালালেও এর পূর্ণ সুবিধা পাওয়া কঠিন। কারণ দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনো পড়তে–লিখতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জটিলতা তারা কতটা বুঝবেন, সেটাই বড় প্রশ্ন।”
তিনি বলেন, “গণভোটের প্রশ্ন এমনভাবে সহজ করতে হবে, যাতে সাক্ষর হোন বা নিরক্ষর—যে কেউ শুনেই বুঝতে পারেন রাষ্ট্র কোন বিষয়ে তার মতামত চাইছে। যেন মানুষ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে, আমি এই বিষয়ে ‘হ্যাঁ’, বা ‘না’ বলছি।”
কী সেই প্রশ্ন?
এরা জুলাই সনদ অনুমোদনে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ এই একটি রায় দেবে, তবে সেই প্রশ্নে আছে চারটি প্রসঙ্গ।
প্রশ্নটি এমন: “আপনি কি জুলাই ন্যাশনাল চার্টার (সাংবিধানিক সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং নিচের প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে একমত?”
ক) নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদের কাঠামোর আলোকে গঠন করা হবে।
খ) সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হবে। ১০০ সদস্যের একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে, এবং সাংবিধানিক সংশোধনের জন্য এই উচ্চকক্ষের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে। জাতীয় ভোটশেয়ারের ভিত্তিতে দলগুলো উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব পাবে।
গ) বিজয়ী দলগুলোকে জুলাই চার্টারের ৩০টি ঐকমত্য পয়েন্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে—নারীর অধিক প্রতিনিধিত্ব, বিরোধী দলের নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকার, প্রধানমন্ত্রীর পদে মেয়াদের সীমা, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগ ও স্থানীয় সরকারের স্বাধীনতা জোরদার করা।
ঘ) রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুত অন্যান্য সংস্কার প্রতিশ্রুতিগুলোও বাস্তবায়ন করা হবে।
পড়তেই পারবেন না তারা
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা–২০২৪ অনুযায়ী, দেশের সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭.৯ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ২২.১ শতাংশ মানুষ এখনও নিরক্ষর।
দেশের অতীত ও বর্তমান বিভিন্ন মানদণ্ডে সাক্ষরতার সংজ্ঞা ভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৬১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, যে ব্যক্তি কোনো ভাষা বুঝে শুনে পড়তে পারে তাকেই সাক্ষর ধরা হয়। ১৯৮২ সালের আদমশুমারিতে বলা হয়, যে ব্যক্তি কোনো ভাষায় চিঠি লিখতে পারে, সে-ই সাক্ষর। ইউনেস্কোর সংজ্ঞায়, দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ বিবরণ পড়ে বুঝতে ও লিখতে পারার সক্ষমতাকেই সাক্ষরতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গণসাক্ষরতা অভিযানের সাবেক উপপরিচালক কে এম এনামুল হক মনে করেন, বিবিএসের গবেষণায় প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি। এমন কথা বলার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “সাক্ষরতা দুইভাবে মাপা হয় সেলফ-রিপোর্টেড, অর্থাৎ তাকে জিজ্ঞেস করলে নিজেই বলে সে সাক্ষর কি না। অন্যটি হলো টেস্ট-ভিত্তিকে অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরীক্ষায় পর্যাপ্ত নম্বর পেতে হয়।
“বিবিএস যে গবেষণা করেছে, এখানে কোনো পরীক্ষা নেওয়া হয়নি, সেখানে পুরো বিষয়টি দাঁড়িয়েছে ‘সেলফ-রিপোর্টিং’-এর ওপর। বাড়ি-বাড়ি ঘুরে মানুষকে শুধু জিজ্ঞেস করা হয় ‘আপনি কি সাক্ষর, নাকি নিরক্ষর?’ তারা নিজেদের ধারণা অনুযায়ী উত্তর দেয়। এই পদ্ধতিতে অনেকেই আছেন যারা আসলে পড়তে-লিখতে পারেন, কিন্তু নিজেকে ‘নিরক্ষর’ বলে জানান। আবার কেউ কেউ হয়ত সামান্য পড়তে পারলেই নিজেকে ‘সাক্ষর’ বলে দেন। ফলে প্রকৃত দক্ষতার সঠিক মাপটা ধরা পড়ে না।”
গণভোটের যে প্রশ্ন ঠিক করা হয়েছে, তাতে পক্ষপাত বা বিভ্রান্তির ঝুঁকি রয়েছে বলে মত দিয়ে তিনি বলেন, “যে-কোনো প্রশ্নের উত্তর যখন আমরা ‘হ্যাঁ’, বা ‘না’ বলি, সেখানে যতগুলো ভেরিয়েবল আছে, ততগুলো প্রশ্ন থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে কয়েকটা প্রশ্ন মিলিয়ে একটা ‘হ্যাঁ’, বা ‘না’ বলতে বলছে। এটা হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। এটা শুধু নিরক্ষরের জন্যই নয়। যারা কম বোঝে অথবা সাক্ষরতার মাধ্যমিক স্তরে আছে তাদের জন্যও এটা জটিল। সেক্ষেত্রে তাদের কোনো একজন পড়ে শোনাতে হবে। এখন যিনি পড়ে শোনাবেন, তার পক্ষপাত থাকতে পারে। এছাড়া তার গোপনীয়তাও লঙ্ঘন হচ্ছে।”
ভাষাও ‘জটিল’
গণভোটের প্রশ্নের ভাষা নিরক্ষর ও স্বল্পশিক্ষিত ভোটারের জন্য ভাষাগত জটিলতা তৈরি করবে বলেই মনে করেন ভাষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারিক মনজুর।
প্রশ্নগুলোতে এমন কিছু বিষয়ের সুপারিশ করা হয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ একেবারেই জানে না বলেও মত তার।
এই ভাষাবিদ অবশ্য স্বীকারও করেন, সাংবিধানিক বিষয়ের প্রশ্নের ভাষা সরল রাখতেই হবে, ব্যাপারটি তেমন নয়। বরং রাজনৈতিক দলগুলোর কাজ বিষয়গুলোকে সহজ করে ব্যাখ্যা দেওয়া। তবে পদ্ধতিগতভাবে এই প্রশ্ন গুচ্ছে সমস্যা আছে বলে মনে করেন তারিক মনজুর।
বাংলা বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, “চারটি প্রশ্নের জন্য একটি হ্যাঁ বা না ভোট দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি ঠিক হচ্ছে না।”
তার মতে, প্রতিটি প্রশ্নের পাশে চারটি পৃথক বাক্স বা ঘর থাকতে পারত যেখানে ভোটাররা আলাদাভাবে হ্যাঁ বা না চিহ্নিত করতে পারবেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ দেশকাল নিউজ ডটকমকে বলেন, “আপনাকে যদি একসঙ্গে ভাত, ডাল এবং বিরিয়ানির মাংস খেতে চান কি না জিজ্ঞেস করা হয়, এবং আপনি সবই খেতে চান—তাহলে আপনি ‘হ্যাঁ’ বলবেন। কিন্তু আপনি যদি ভাতের সঙ্গে বিরিয়ানি না চান, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ‘না’ বলবেন। তবু যদি সবাই ধরে নেয় যে ভোটাররা অবধারিতভাবে ‘হ্যাঁ’ বলবে, সেটা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ গণভোটের প্রতিটি প্রশ্নেরই একটি বিপরীত দিক রয়েছে, এবং তাই ‘না’ উত্তরও খুব স্বাভাবিকভাবে আসতে পারে।”
তিনি বলেন, “চারটি ভিন্ন বিষয় একসঙ্গে জুড়ে যে প্রশ্নটি গণভোটের জন্য তৈরি করা হয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর জন্য আরও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। প্রশ্নের জটিলতা এমনই যে তারা বিষয়টি বুঝেই উঠতে পারবেন না—ফলে অংশগ্রহণের অধিকার থাকা সত্ত্বেও প্রকৃত মতামত দেওয়ার সুযোগ কার্যত সীমিত হয়ে যাবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক স ম আলী রেজা বলেন, “আমাদের দেশে যেসব গণভোট হয়েছে সেখানে নির্দিষ্ট একটা বিষয় থাকত এবং এই ইস্যু নিয়ে প্রচারণাও থাকত। ফলশ্রুতিতে ভোটাররা বিষয়টা সম্পর্কে বুঝতে পারত। কিন্তু এবার বিষয়টা জটিল। ফলে গণভোটের যে ফলাফল আসবে সেটি সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করবে কিনা এ বিষয়ে আমি কিছুটা সন্দিগ্ধ।”
নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান বলেন, “বড় সব দলের নেতাদের প্রথমেই জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল— যারা পড়তে জানেন না, তারা কীভাবে এই গণভোটে মতামত দেবেন? কিন্তু এই প্রসঙ্গ কেউ তোলেননি।
“সাধারণ নির্বাচনে ভোটাররা অন্তত প্রতীক দেখে ভোট দিতে পারতেন; কিন্তু গণভোটে তো সেই সুবিধাও নেই। প্রশ্নের ভাষা আর বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে এমন বড় ফাঁক থাকলে সেটিকে উপেক্ষা করা যায় না— এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতিগত বিষয়।”
মানুষ কি প্রভাবিত হবে?
নিরক্ষর মানুষ নিজেদের ব্যালট বুঝে পড়তে না পারায় গোপন ব্যালটের নীতিই ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
সাম্প্রতিক দেশকালকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষক বলেন, “নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা কম হলেও, যারা পড়তে জানেন কিন্তু বিষয়বস্তু বুঝতে পারেন না— এই সংখ্যা দেশের বাস্তবতায় অনেক বেশি। এখন কেউ যদি তাদেরকে প্রশ্ন ব্যাখ্যা করে দেয় কোথায় টিক দিতে হবে—তাহলে ভোটের গোপনীয়তা আর থাকে না।”
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, “নিরক্ষর ভোটারদেরকে যদি ভালোভাবে বোঝানো না হয়, তারা স্বতন্ত্রভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। এর মানে, তাদের শেখানো হবে—‘ হ্যাঁ’ বা ‘ না দাও’, কিন্তু তারা নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেবে না। ফলে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের বড় ভূমিকা থাকবে বলে মনে হচ্ছে।”
সরকারের কী করণীয়
গণভোটের প্রশ্ন নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ব্যাপক প্রচার চালানোর তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন।
সাম্প্রতিক দেশকালকে তিনি বলেন, “যারা পড়তে জানেন না তাদের জন্য টেলিভিশনে বিষয়গুলো সহজভাবে ব্যাখ্যা করে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে হবে যেন তারা যেন অন্তত বুঝতে পারেন প্রশ্নের ধাপ কী, কোন নম্বরের অধীনে কোন বিষয় রয়েছে, কীভাবে উত্তর দিতে হবে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “এটিও রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব গণভোটে সব নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
রাজনৈতিক দলগুলো কী বলছে?
প্রশ্নের ধরনে খুশি নয় রাজনৈতিক দলগুলোও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশকাল নিউজকে বলেন, “গণভোটের কনসেপ্টটা খানিক জটিল, তা সত্য। তবে রাজনৈতিক দলগুলো যদি সাধারণ মানুষদের নিয়ে সঠিকভাবে ক্যাম্পেইন করে তাহলে এই সমস্যার খানিক সমাধান করা সম্ভব। তাছাড়া নির্বাচনের দিনেই গণভোট হওয়ায় আরো সময় পাওয়া গেল। সরকারকেও উচিত ম্যাস লেভেলে এই বিষয়ে সঠিক প্রচারণা চালানো। ক্লসগুলোকে আরও সহজতর করে প্রচার চালানো।”
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেন, “আমরা শুরুতেই শুধু ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’–এর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেখানে তিন-চারটি শর্ত যোগ করেছেন, যা একসাথে ‘হ্যাঁ’ বা একসঙ্গে ‘না’– দিতে হবে। যেহেতু গণভোটের বিষয়টি উনি তুলেছেন, তাই নিরক্ষর ভোটাররা কীভাবে ভোট দেবে, সেটিও উনিই ঠিক করবেন।”
ব্যাপক প্রচার চালালে নিরক্ষর মানুষেরা অন্যের মুখে মুখে শুনে বিষয়গুলো বুঝে নিতে পারবে বলেও আশাবাদী তিনি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবও বলেন, “দেশের বড় অংশের জন্য এটা বেশ জটিল হবে। তাই এটার স্পষ্ট করা উচিত এবং এটা একটা সরলীকরণ করা উচিত যাতে নিরক্ষর এবং স্বাক্ষর সবাই বুঝতে পারে।”
তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশন যে দুই লাইনের প্রশ্নপত্র বা যে প্রস্তাব দিয়েছিল সেটা কিছুটা সহজ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে মত না নিয়ে অনেকটা বিএনপির মতামতের ভিত্তিতে এই ধরনের জটিল প্রশ্নপত্র হাজির করেছেন। সরকারের উচিত ছিল যদি অন্যান্য দলগুলোর পরামর্শও নিত, তাহলে সেটা আরও হয়ত সহজ হতো।”
