কেন এই ছুটির বৈষম্য, শিখন ঘাটতি কি শুধুই প্রাথমিকে?

মো. জামিল বাসার
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০১

শ্রেনীকক্ষে প্রথমিকের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
মহামারি করোনার প্রভাব পড়েনি এমন খাত নেই। সারা পৃথিবীতে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে এই মহামারির প্রভাব পড়েছে। দেশে ২০২০ সালের মার্চের ১৭ তারিখ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের তো বটেই সারা পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এমনও দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই নিজের রোল এবং শাখা ভুলে গিয়েছিল।
সেই ধারাবাহিকতায় নিঃসন্দেহে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও শিখন ঘাটতির কবলে পড়ে গিয়েছে। বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর থেকেই শিখন ঘাটতি পূরণ করতে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেটার সুফল আমরা গত বৃত্তি পরীক্ষাতেও দেখতে পেয়েছি।
শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে গিয়ে ২০২১ সালের শীতকালীন অবকাশ যাপনের ছুটি বাতিল করা হয়। ২০২২ সালের রমজানের ছুটি কমিয়ে ২০ রমজান পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাঠকের জেনে রাখা দরকার যে, ২০২০ সালের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখন ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখন ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ২০২০ সালের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
করোনাকালের প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাই এখন মাধ্যমিকে পড়াশোনা করছে। তাহলে শিখন ঘাটতি মাধ্যমিকেই বেশি থাকবার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকে বরাবরের মতোই পুরো রমজান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ কোমলমতি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাস পাঠদান চালিয়ে যেতে অধিদপ্তর অনড়। কিন্তু প্রশ্ন আসে যে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি কীভাবে পূরণ হবে? করোনাকালিন শিখন ঘাটতি যদি প্রকৃতপক্ষে পূরণ করতেই হয় তাহলে মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে রেখে পাঠদান পরিচালনা করার প্রয়োজন ছিল।
সহকারী শিক্ষক, বওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল