
মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য ও তার স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত
প্রাথমিক যুগে ভারতবর্ষে ফটোগ্রাফির চর্চা সীমাবদ্ধ ছিল দেশীয় রাজা, নওয়াব, জমিদার ও অবস্থাপন্ন ব্যক্তিবর্গের মধ্যেই। সেকালে বিদেশী ফটোগ্রাফারদের বিপুল অর্থব্যয়ে নিজ দরবারে নিয়ে আসলেও এদের অনেকে পরে ছবি তোলার কায়দা শিখে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ অলস সময়ে ফটোগ্রাফিকে শখ হিসেবে গ্রহণ করে তারা ব্যাপক আনন্দ পেয়েছিলেন।
ফটোগ্রাফি চর্চায় নিবেদিত একজন ছিলেন ত্রিপুরার মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য। প্রথম দিকে তৈলচিত্র অঙ্কনের কাজে সুবিধা হবে ভেবে বীরচন্দ্র ফটোগ্রাফির প্রতি আকৃষ্ট হন। নিজে ইংরেজি ভাল জানতেন না। একান্ত সচিব তাকে বিদেশী ফটোগ্রাফির বই অনুবাদ করে বুঝিয়ে দিতেন। বীরচন্দ্র ধীরে ধীরে প্রথমে দ্যাগারোটাইপ এবং পরে ক্যালোটাইপ ছবি তোলায় পারদর্শী হয়ে উঠেন।
আশপাশের প্রকৃতি, আপনজন, সভাসদ, সকলকিছুই ক্যামেরাবন্দী করতে চেয়েছেন তিনি। নিজ ক্যামেরায় তুলেছেন প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথের ছবি। আগরতলার রাজপ্রাসাদে তিনি নিয়মিত ফটোগ্রাফি প্রদর্শনীর আয়োজন করতেন। তার তোলা বেশ কিছু ছবির প্রিন্ট উদ্ধার করা গেছে। স্ত্রী মহারাণী মনোমোহিনী দেবীও ফটোগ্রাফি চর্চা করতেন। ১৮৮০ সালের দিকে শাটারে সুতো বেঁধে সস্ত্রীক এক ছবি তুলেছিলেন মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য। আর ইতিহাসমতে এটি ভারতবর্ষের প্রথম ‘সেলফি’ হিসেবে আজও সবার কাছে সমাদৃত হয়ে আছে।
তারেক আজিজ
লেখক, ঢাকা।