
বই। ছবি: সংগৃহীত
আমাদের বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও ঐশ্বর্যের কথা সকলের জানা। কিন্তু আজকের দিনে আমরা একটি দুঃখজনক বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছি, বাংলা সাহিত্যের পাঠকের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এই প্রবণতা আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য একটি বিরাট হুমকি।
এই সমস্যার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, আধুনিক প্রযুক্তির উত্থান মানুষের বিনোদন ও জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম পরিবর্তন করে ফেলেছে। টেলিভিশন, ইন্টারনেট, সোশ্যাল মিডিয়া- এসবের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়েছে, যার ফলে বই পড়ার সময় অনেকটাই কমে গেছে। অন্যতম আরেকটি কারণ হতে পারে যে- শিক্ষা ব্যবস্থায় সাহিত্যের গুরুত্ব কমে গেছে।
বাংলা সাহিত্যের পাঠকের অভাবের প্রভাব ব্যাপক। নতুন লেখকদের জন্য প্রকাশনা সংস্থাগুলো কোনরকম ঝুঁকি নিতে অনিচ্ছুক। এর ফলে নতুন সাহিত্য সৃষ্টি ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
সমাধানের জন্য যা করা যেতে পারে:
সরকারের উচিত বিভিন্ন স্থানে লাইব্রেরি স্থাপনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাহিত্যের পাঠ্যক্রম আকর্ষণীয় করে তোলা। লেখক ও পাঠকের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং বইয়ের দাম সাশ্রয়ী রাখতে হবে। প্রচারণা মাধ্যমগুলোতে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে নিয়মিত অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা উচিত। এবং পরিবারগুলোতে সন্তানদের বই পড়ার জন্য আরও উৎসাহিত করা উচিত।
বাংলা সাহিত্য আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদকে টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা খুবই প্রয়োজন। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লেখক, প্রচারণা মাধ্যম এবং পরিবার- সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, একটি জাতির সাহিত্য তার জীবন্ত চেতনার প্রতিফলন। বাংলা সাহিত্যের পাঠকের অভাব আমাদের জাতির চেতনাকেই দুর্বল করে তুলছে।
আমরা আশা করি সকলের সহযোগিতায় বাংলা সাহিত্যের হারানো ঐশ্বর্য পুনরুদ্ধার করতে পারবো।
আব্দুল্লাহ আল মামুন রিটন
সদর রোড, নাটোর, বাংলাদেশ